রাজনৈতিক ঐকমত্য না হওয়ায় সরকারের নিজস্ব সিদ্ধান্ত
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না আসায় জুলাই জাতীয় চার্টার (সংস্কার প্রস্তাব) কার্যকর করার বিষয়ে সরকার নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলগুলোকে আলোচনার জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে নির্ধারিত সাত দিনের মধ্যেও তারা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারায় সরকার এখন নিজের সিদ্ধান্ত নেবে।
“সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ অধিকার আছে”
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন,
“সরকার দলগুলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় দিয়েছে। কিন্তু তারা সাত দিনের মধ্যে আলোচনায় বসেনি। এখন সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। আমি শুনিনি কেউ বলছে সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।”
তিনি আরও বলেন, জনগণের উদ্যমে গঠিত সরকার এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। সরকারের লক্ষ্য রাজনৈতিক ঐক্যের মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া, কিন্তু যদি শতকরা ৯০ ভাগ সমর্থন আসে এবং ১০ ভাগ না আসে, তবুও সরকারের দায়িত্ব থেকে সরে থাকা যাবে না।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “রাজনৈতিক জট কাটিয়ে ফেব্রুয়ারির আগেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই।”
চার্টারের বাস্তবায়নে মতভেদ ও অনিশ্চয়তা
জাতীয় ঐক্য কমিশন দীর্ঘ নয় মাসের প্রচেষ্টায় জুলাই চার্টারের সংস্কার সংক্রান্ত খসড়া তৈরি করেছিল।
তবে শেষ পর্যায়ে দলগুলোর মধ্যে ধারাবাহিকতা ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়, ফলে এসব সংস্কারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
রেফারেন্ডামের মাধ্যমে প্রস্তাবগুলোর বৈধতা দেওয়ার সুপারিশ থাকলেও বিএনপির আপত্তির কারণে বিষয়টি বর্তমানে স্থগিত রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যেই ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে।
রাজনৈতিক অবস্থান ও সংলাপ নিয়ে সরকারের মনোভাব
গত সপ্তাহে উপদেষ্টা পরিষদ প্রধান দলগুলোকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিল, তবে আট দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো দল বৈঠকে বসেনি।
বিশেষত বিএনপি মনে করে, এই ধরনের সংস্কার বাস্তবায়নের পদ্ধতি সাংবিধানিক নয়।
এ বিষয়ে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “সরকারের দরজা সবসময় সবার জন্য খোলা ছিল। এখন পর্যন্ত আমি শুনিনি সরকার নতুন কোনো আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে। এবার সরকারের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান জানানো হবে।”
“গণআন্দোলনের মাধ্যমে গঠিত সরকার দায়িত্ব বুঝে কাজ করছে”
রিজওয়ানা হাসান জানান,
“আমরা এমন এক সরকার, যারা গণআন্দোলনের পর দায়িত্ব নিয়েছি। তাই পার্থক্য যতটা সম্ভব কমিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। এখন আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় রয়েছি। ‘যদি’ বা ‘কিন্তু’ নিয়ে বাড়তি বিতর্কে যাব না। আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এবং আমরা তা পালন করব।”
তিনি আরও বলেন, মানুষের সরকারের প্রতি প্রত্যাশা আছে, তাই সময়মতো ও সঠিক সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা ও নির্বাচনের প্রস্তুতি
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত থাকা প্রসঙ্গে রিজওয়ানা হাসান বলেন,
“ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে — এটি এখন দেশের মানুষের কাছে স্পষ্ট। কেউ যদি এই পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, সরকার তা নিয়ন্ত্রণে আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।”
#জুলাই_চার্টার #বাংলাদেশ_রাজনীতি #রিজওয়ানা_হাসান #অন্তর্বর্তী_সরকার #নির্বাচন২০২৫ #সারাক্ষণ_রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















