যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক বক্তৃতা নিয়ে প্যানোরামা নামের একটি প্রামাণ্যচিত্রে সম্পাদনা সংক্রান্ত ‘বিচারের ভুলের’ জন্য ক্ষমা চেয়েছেন বিবিসির চেয়ারম্যান সামির শাহ। এই ঘটনার পর বিবিসির প্রধান নির্বাহী টিম ডেভি ও সংবাদ প্রধান ডেবোরা টারনেস পদত্যাগ করেছেন।
বিভ্রান্তিকর সম্পাদনা ও বিবিসির অভ্যন্তরীণ তদন্ত
সামির শাহ বলেন, ট্রাম্পের বক্তৃতার সম্পাদনার ফলে বিষয়টি বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপিত হয়েছিল এবং এটি আরও সতর্কতার সঙ্গে পরিচালনা করা উচিত ছিল। তিনি জানান, বিষয়টি বছরের শুরুতে অভ্যন্তরীণভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছিল, কিন্তু তখনই আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন ছিল।
চিঠিতে ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে শাহ লেখেন, “একটি বিষয় একেবারে স্পষ্ট — বিবিসিকে নিরপেক্ষতার নীতিতে অটল থাকতে হবে।” তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানটি জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার ও সর্বোচ্চ ন্যায্যতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ট্রাম্পের বক্তব্য বিকৃত উপস্থাপনা
শাহ স্বীকার করেন, আরও পর্যালোচনার পর বিবিসি বুঝতে পারে যে বক্তৃতার সম্পাদনার ধরনটি এমনভাবে উপস্থাপিত হয়েছিল যা “সহিংস পদক্ষেপের সরাসরি আহ্বান” হিসেবে ভুল ধারণা দেয়।
তিনি বলেন, “এই বিচারের ভুলের জন্য বিবিসি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।”
ঘটনার পটভূমি
প্যানোরামা প্রামাণ্যচিত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে প্রচারিত হয়। এতে ট্রাম্পের এক বক্তৃতার দুটি আলাদা অংশ একত্র করে এমনভাবে দেখানো হয় যেন তিনি ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ক্যাপিটল হিলে হামলায় উসকানি দিচ্ছেন।

এই ভুলটি বিবিসির প্রাক্তন মানদণ্ড পরামর্শকের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে। প্রতিবেদনে ইসরায়েল–হামাস যুদ্ধ, লিঙ্গ-পরিচয় সংক্রান্ত খবরসহ আরও বেশ কিছু বিষয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে পক্ষপাতের অভিযোগ উল্লেখ করা হয়।
নেতৃত্বে পদত্যাগ ও প্রতিক্রিয়া
সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ বাড়তে থাকায় রবিবার বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি এবং সংবাদ বিভাগের প্রধান নির্বাহী ডেবোরা টারনেস পদত্যাগ করেন।
শাহ ট্রাম্পের বক্তৃতা সম্পাদনার সমালোচনা মেনে নিলেও তিনি দাবি করেন, বিবিসি কোনো অভিযোগ ‘গোপন’ করেনি বা সমস্যাগুলিকে উপেক্ষা করেনি।
তার ভাষায়, “বিবিসি ভুল করলে সংশোধন প্রকাশ করেছে, সম্পাদনা-সংক্রান্ত নির্দেশনা পরিবর্তন করেছে, নেতৃত্বে রদবদল এনেছে এবং প্রয়োজনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।”
সামির শাহের এই ক্ষমাপ্রার্থনা বিবিসির সাংবাদিকতার মান ও নিরপেক্ষতা নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ বিশ্বাসযোগ্যতা পুনর্গঠনে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
#BBC #Trump #MediaEthics #UKNews #সারাক্ষণ_রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















