০৫:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
রাংগুনিয়ায় মোটরসাইকেল থেকে নামতে না নামতেই গুলি—নিহত সাবেক শ্রমিক দল নেতা আশিয়া ইসলামী’র “ফুড ফর শেয়ারিং”– বিষাক্ত ধোঁয়ায় ঢেকে দিল্লি, আইনজীবীদের অনলাইনে হাজিরা দিতে বলল সুপ্রিম কোর্ট ক্লাউড নির্ভরতা কমিয়ে নতুন স্মার্টথিংস হাবে স্যামসাংয়ের লোকাল বাজি নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে রোববার থেকে বিচারকদের কর্মবিরতির ঘোষণা রাশিয়ার ভয়াবহ রাতে কিয়েভে ড্রোন–মিসাইল হামলা, নিহত অন্তত ৪ মিশিমা: চারটি অধ্যায়ে একটি জীবন আফ্রিকা জেগে উঠছে: বিশ্ব যেন মুখ ফিরিয়ে না নেয়   শুল্ক বাড়ায় অভিবাসীদের জন্য ঘরের খাবারের দাম বেড়ে তেতো ভারতের ৫.১ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ অনুমোদন

বাংলাদেশে ডায়াবেটিস নিয়ে যে সাতটি প্রশ্নের মুখোমুখি হন চিকিৎসকরা

বাংলাদেশে ৬১ দশমিক পাঁচ শতাংশ রোগীই জানেন না তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত

“অফিসে একটু পর পর শুধু পানির তৃষ্ণা পায়, প্রচুর পানি খাই আমি। স্বাভাবিকভাবেই একটু পরপর বাথরুমে যাই বলে কলিগরা খুব হাসাহাসি করে আমাকে নিয়ে, বলে হায়রে বহুমূত্র রোগী। কিন্তু আমার তো পরিবারে আসলে কারো ডায়াবেটিস নাই, সচেতনও আমি। তাহলে আমার কেন হবে?”

কথাগুলো বলছিলেন ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা নাবিলা তাবাসসুম।

পরে অবশ্য চিকিৎসকের কাছে যান তিনি এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে একজন ডায়াবেটিস রোগী হিসেবে চিকিৎসক তাকে শনাক্ত করেছেন বলে জানান মিজ তাবাসসুম।

ডায়াবেটিস নিয়ে ‘খুব টেনশনে’ থাকার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এক কোটি ৩৫ লাখ ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম অবশ্য জানান, এই সংখ্যা দুই কোটির বেশি। রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।

এর কারণ সম্পর্কে তিনি জানান, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে বাংলাদেশে ৬১ দশমিক পাঁচ শতাংশ রোগীই জানেন না তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

বাংলাদেশে ডায়াবেটিস টাইপ-২ এর রোগীই বেশি, প্রায় ৯৯ শতাংশ রোগী। এই টাইপের ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের সাধারণত কোনো পূর্ব লক্ষণ থাকে না।

মি. সেলিম বিবিসি বাংলাকে জানান, এ ধরনের রোগীরা বোঝেনই না তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

পরিবারে বাবা-মা কারো ডায়াবেটিস নাই কেন তার হবে এমন কথাও রোগীরা চিন্তা করেন। এমনকি ডায়াবেটিস নিয়ে বিভিন্ন ভুল ধারণাও মানুষের রয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের কাছ থেকে বেশিরভাগ সময় যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়, সেরকম সাতটি প্রশ্নের কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এক ব্যক্তির আঙুল থেকে রক্ত নিয়ে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করছেন একজন। পাশে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকে এবং সবারই মুখে মাস্ক। টেবিলের ওপর রক্ত পরীক্ষার কিট রাখা।

রক্তের নমুনা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা করেও জানা সম্ভব রক্তে চিনির পরিমাণ কতটা

ডায়াবেটিসের লক্ষণ কী বা কীভাবে বুঝবো ডায়াবেটিস?

চিকিৎসক মি. সেলিম জানান, ডায়াবেটিসের টাইপ-১ আর টাইপ-২ এর বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। যে কারণে রোগীরা সহজে বুঝে উঠতে পারেন না।

ডায়াবেটিস টাইপ-২ এ সহজে রোগীর শরীরে রোগের লক্ষণ দেখা দেয় না।

অনেক সময় অন্য রোগের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসার পর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রোগী ডায়াবেটিসের বিষয়ে জানতে পারেন।

যেমন- কিডনি জটিলতা, হার্ট অ্যাটাকের মতো রোগ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান এই রোগীরা।

ডায়াবেটিস টাইপ-১ এ রোগীর শরীরে হঠাৎ করে ইনসুলিন হরমোনের উৎপাদন হয় না। এর ফলে খুব দ্রুত সময়ে রোগের লক্ষণ প্রকাশ হয়।

যেমন- ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ আসা, ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া, ওজন কমতে থাকা এবং শরীরে ইনফেকশন হওয়া, ক্লান্তি বা অবসাদ, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া এমন বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয় এই ধরনের ডায়াবেটিসে।

রক্তে সুগারের মাত্রা কত হলে ডায়াবেটিস, কতদিন পর পর সুগার পরীক্ষা করবো?

খালি পেটে এবং ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার দুই ঘণ্টা পরে রোগীর রক্ত পরীক্ষা করে এই রোগ আছে কি না তা চিহ্নিত করা যায়।

আবার গ্লুকোজ খেয়ে যখন রক্ত পরীক্ষা করা হয়, তখন পাঁচ দশমিক ছয় থেকে ছয় দশমিক নয় মিনিমাল এবং খাওয়ার দুই ঘণ্টা পরে সাত দশমিক আট থেকে ১১ দশমিক শূন্য পর্যন্ত প্রি-ডায়াবেটিস বলে চিহ্নিত করা হয়।

সাধারণত রক্তে সুগারের মাত্রা যদি সাত পয়েন্টের উপরে চলে যায় তখন তাকে ডায়াবেটিস বলা হয়। তবে এই হিসেব খালি পেটের।

ভরা পেটে বা খাবার দুই ঘণ্টা পরে রক্তে সুগারের মাত্রা ১১ দশমিক এক পয়েন্টের বেশি হলে তাকে ডায়াবেটিস রোগী বিবেচিত করা হয়।

রোগীর তিন মাসের রক্তে শর্করার গড় বা এইচবিএওয়ান সি পরীক্ষা করেও ডায়াবেটিস শনাক্ত করা হয়।

এইচবিএওয়ান সি পাঁচ দশমিক সাত থেকে ছয় দশমিক চার পর্যন্ত থাকলে প্রি-ডায়াবেটিস; আর এটি ছয় দশমিক চার পার হয়ে গেলে রোগীর ডায়াবেটিস বলে চিহ্নিত হয়।

ডা. শাহজাদা সেলিম জানান, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নতুন রোগীদের প্রথম প্রশ্নই থাকে, “আমি কতদিন পরপর সুগার চেক করবো?”

সাধারণত রোগীর অবস্থার ওপর নির্ভর করে কত দিন পরপর রক্তে সুগারের মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে সেই পরামর্শ দেন বলে জানান এই চিকিৎসক।

চিনির ওপর কয়েকটি সুগার কিউব

চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে ডায়াবেটিস হয় কি না এই প্রশ্ন করেন অনেকে

বাবা-মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে সন্তানেরও হবে?

অনেক সময় দেখা যায়, ডায়াবেটিস নিয়ে রোগীর পারিবারিক মেডিকেল ইতিহাস রয়েছে। অর্থাৎ রোগীর বাবা-মা অথবা তাদের যে কোনো একজন এই রোগে আক্রান্ত।

আবার অনেক সময় দেখা যায়, ডায়াবেটিসের পারিবারিক ইতিহাস না থাকলেও রোগী আক্রান্ত হন।

বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট চিকিৎসক শাহজাদা সেলিম জানান, পরিবারে বাবা-মায়ের যদি ডায়াবেটিস থাকে সেক্ষেত্রে সন্তানদেরও ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পারবো না?

চিনি বেশি খাওয়ার সঙ্গে ডায়াবেটিস হওয়ার সরাসরি কোনো যোগসূত্র নেই।

তবে চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে পরোক্ষ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।

চিনি খাওয়ার সঙ্গে ডায়াবেটিস হওয়ার যেমন সরাসরি সম্পর্ক নাই- এটা যেমন সত্য, আপনি যদি বেশি মিষ্টি খেতে অভ্যস্ত হন, তাহলে মুটিয়ে যেতে পারেন। আর মুটিয়ে গেলে পরোক্ষভাবে তা ডায়াবেটিস হতে সাহায্য করবে বলে জানান চিকিৎসকরা।

মিষ্টি জাতীয় খাবার বা চিনি স্থূলতা, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

ফলে ওই ব্যক্তি সহজেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে।

হাসিমুখে দৌড়াচ্ছেন একজন পুরুষ ও দুই জন নারী, পেছনে সবুজ গাছপালা

ডায়াবেটিস রোগীদের সুস্থতার প্রধান শর্ত নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন

ডায়াবেটিসের কারণে শরীরে কী সমস্যা দেখা দেবে?

চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিস একটি নীরব ঘাতক। এটি নিয়ন্ত্রণে না থাকলে শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং জটিলতার সৃষ্টি হয়।

দীর্ঘমেয়াদি ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থেকে হৃদরোগ, স্ট্রোক, অন্ধত্ব, কিডনি অকার্যকরসহ শারীরিক নানা জটিলতার মধ্যে পড়তে পারেন রোগী।

গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তানজিনা হোসেন বলেন, অনেক সময় কিডনি জটিলতা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রোগী জানতে পারেন তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই কিডনি কেমন কাজ করছে, তা জানার জন্য রক্তে ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষাই যথেষ্ট নয়।

“বছরে এক বা দুবার প্রস্রাবের অ্যালবুমিনের উপস্থিতিও পরীক্ষা করে দেখতে হবে। এজন্য সবচেয়ে কার্যকর হচ্ছে মাইক্রোঅ্যালবুমিন বা অ্যালবুমিন ক্রিয়েটিনিন অনুপাত পরীক্ষা করা” বলেন তিনি।

একইসাথে বছরে অন্তত দুইবার চোখের চিকিৎসকের কাছে গিয়ে রেটিনাসহ চোখ পরীক্ষা করা এবং ফ্যাটি লিভারের মাত্রা জানতে মাঝে-মধ্যে যকৃত পরীক্ষা করা উচিত বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ওষুধ খাব, নাকি ইনসুলিন নেব?

চিকিৎসকের কাছে গিয়ে ডায়াবেটিস রোগীরা সবচেয়ে কমন যে প্রশ্নটি করে থাকেন সেটি হলো, “ওষুধ দিবেন, নাকি ইনসুলিন দেওয়া হবে?”

মি. সেলিম জানান, সারা পৃথিবীর চিকিৎসকরাই ডায়াবেটিস রোগীর ওষুধ ও ইনসুলিনের পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে একই গাইডলাইন অনুসরণ করেন।

আমেরিকান ডায়াবেটিস এসোসিয়েশন এই গাইডলাইন প্রথম তৈরি করেছে।

ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের উদ্যোগেই বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ১৪ই নভেম্বর ‘ডায়াবেটিস ডে’ পালিত হয় বলে জানান এই চিকিৎসক। এখন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এখন এর অংশীদার বলে জানান তিনি।

এই গাইডলাইন অনুযায়ী, টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এক্ষেত্রে অন্য কিছু ভাবার অবকাশ নেই বলে উল্লেখ করেন চিকিৎসক মি. সেলিম।

তবে, যেসব রোগীরা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে ওষুধ নাকি ইনসুলিন দেওয়া হবে সে বিষয়ে চিকিৎসকরা বেশ কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

মি. সেলিম বলেন, ” প্রশ্নটা তৈরি হয় টাইপ-২ এর ক্ষেত্রে। ইনসুলিন দেবো না ট্যাবলেট দেবো?”

এক্ষেত্রে হিসাবটা হলো, রোগীর তিন মাসের রক্তে শর্করার গড় বা এইচবিএওয়ান সি পরীক্ষা করতে হয়।

“রক্তে গ্লুকোজের গড় ১০ শতাংশ বা তার বেশি হলে যখন রোগ ধরা পড়ে, তখন ইনসুলিন শুরু করা উচিত। আবার কিছু কিছু লক্ষণ যেমন ওজন কমে যাওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, দুর্বল লাগছে এই লক্ষণগুলো থাকলেও ইনসুলিন দেওয়া উচিত,” বলেন চিকিৎসক শাহজাদা সেলিম।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হলে ইনসুলিনের পরামর্শ দেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।

সাদা-কালো শার্ট তুলে পেটে সিরিঞ্জ ফুটিয়ে ইনসুলিন নিচ্ছেন একজন

টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ওষুধ নাকি ইনসুলিন দেওয়া হবে সে বিষয়ে চিকিৎসকরা বেশ কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন

ব্যায়াম বা খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব?

রোগীদের এই প্রশ্ন চিকিৎসকদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানান শাহজাদা সেলিম।

ডায়াবেটিস একবার চিহ্নিত হলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো উপায় নেই, কিন্তু নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপনে এই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ থাকতে পারেন বলে জানান মি. সেলিম।

ডায়াবেটিস রোগীদের সুস্থতার প্রধান শর্তই নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন।

মি. সেলিম বলেন, এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে সুষম খাদ্য খাওয়া, শারীরিক পরিশ্রম করা এবং ওষুধ খেতে হবে।

কিন্তু বাংলাদেশে রোগীরা ওষুধ বা ইনসুলিন এড়াতে অনেক সময় খাবার বা শারীরিক শ্রমের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বিজ্ঞানমনস্ক ধারণার অভাবে অনেক ধরনের প্রচারণার ফাঁদে পড়েন রোগীরা।

হাঁটলে বা অমুক গাছের শেকড় খান ডায়াবেটিস ভালো হয়ে যাবে এমন সব প্রচারণায় মানুষ প্রলুব্ধ হয়।

“কিন্তু এটি একেবারেই ভুল এবং এখন পর্যন্ত বিজ্ঞান প্রমাণ করতে পারেনি যে ডায়াবেটিস ভালো হয়ে যাবে,” বলেন মি. সেলিম।

ফলে নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন এ রোগে আক্রান্তদের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত এবং ওষুধ বাদ দিয়ে এ ধরনের বিকল্প খোঁজা যাবে না বলে জানান তিনি।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীকে সারাজীবন একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে এবং রোগ সম্পর্কে রোগীর নিজেকেও সচেতন হতে হবে বলেও জানান চিকিৎসকেরা।

বিবিসি নিউজ বাংলা

জনপ্রিয় সংবাদ

রাংগুনিয়ায় মোটরসাইকেল থেকে নামতে না নামতেই গুলি—নিহত সাবেক শ্রমিক দল নেতা

বাংলাদেশে ডায়াবেটিস নিয়ে যে সাতটি প্রশ্নের মুখোমুখি হন চিকিৎসকরা

০৩:৩৬:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

“অফিসে একটু পর পর শুধু পানির তৃষ্ণা পায়, প্রচুর পানি খাই আমি। স্বাভাবিকভাবেই একটু পরপর বাথরুমে যাই বলে কলিগরা খুব হাসাহাসি করে আমাকে নিয়ে, বলে হায়রে বহুমূত্র রোগী। কিন্তু আমার তো পরিবারে আসলে কারো ডায়াবেটিস নাই, সচেতনও আমি। তাহলে আমার কেন হবে?”

কথাগুলো বলছিলেন ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা নাবিলা তাবাসসুম।

পরে অবশ্য চিকিৎসকের কাছে যান তিনি এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে একজন ডায়াবেটিস রোগী হিসেবে চিকিৎসক তাকে শনাক্ত করেছেন বলে জানান মিজ তাবাসসুম।

ডায়াবেটিস নিয়ে ‘খুব টেনশনে’ থাকার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এক কোটি ৩৫ লাখ ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম অবশ্য জানান, এই সংখ্যা দুই কোটির বেশি। রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।

এর কারণ সম্পর্কে তিনি জানান, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে বাংলাদেশে ৬১ দশমিক পাঁচ শতাংশ রোগীই জানেন না তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

বাংলাদেশে ডায়াবেটিস টাইপ-২ এর রোগীই বেশি, প্রায় ৯৯ শতাংশ রোগী। এই টাইপের ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের সাধারণত কোনো পূর্ব লক্ষণ থাকে না।

মি. সেলিম বিবিসি বাংলাকে জানান, এ ধরনের রোগীরা বোঝেনই না তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

পরিবারে বাবা-মা কারো ডায়াবেটিস নাই কেন তার হবে এমন কথাও রোগীরা চিন্তা করেন। এমনকি ডায়াবেটিস নিয়ে বিভিন্ন ভুল ধারণাও মানুষের রয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের কাছ থেকে বেশিরভাগ সময় যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়, সেরকম সাতটি প্রশ্নের কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এক ব্যক্তির আঙুল থেকে রক্ত নিয়ে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করছেন একজন। পাশে দাঁড়িয়ে আছেন অনেকে এবং সবারই মুখে মাস্ক। টেবিলের ওপর রক্ত পরীক্ষার কিট রাখা।

রক্তের নমুনা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা করেও জানা সম্ভব রক্তে চিনির পরিমাণ কতটা

ডায়াবেটিসের লক্ষণ কী বা কীভাবে বুঝবো ডায়াবেটিস?

চিকিৎসক মি. সেলিম জানান, ডায়াবেটিসের টাইপ-১ আর টাইপ-২ এর বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। যে কারণে রোগীরা সহজে বুঝে উঠতে পারেন না।

ডায়াবেটিস টাইপ-২ এ সহজে রোগীর শরীরে রোগের লক্ষণ দেখা দেয় না।

অনেক সময় অন্য রোগের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসার পর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রোগী ডায়াবেটিসের বিষয়ে জানতে পারেন।

যেমন- কিডনি জটিলতা, হার্ট অ্যাটাকের মতো রোগ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান এই রোগীরা।

ডায়াবেটিস টাইপ-১ এ রোগীর শরীরে হঠাৎ করে ইনসুলিন হরমোনের উৎপাদন হয় না। এর ফলে খুব দ্রুত সময়ে রোগের লক্ষণ প্রকাশ হয়।

যেমন- ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ আসা, ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া, ওজন কমতে থাকা এবং শরীরে ইনফেকশন হওয়া, ক্লান্তি বা অবসাদ, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া এমন বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয় এই ধরনের ডায়াবেটিসে।

রক্তে সুগারের মাত্রা কত হলে ডায়াবেটিস, কতদিন পর পর সুগার পরীক্ষা করবো?

খালি পেটে এবং ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার দুই ঘণ্টা পরে রোগীর রক্ত পরীক্ষা করে এই রোগ আছে কি না তা চিহ্নিত করা যায়।

আবার গ্লুকোজ খেয়ে যখন রক্ত পরীক্ষা করা হয়, তখন পাঁচ দশমিক ছয় থেকে ছয় দশমিক নয় মিনিমাল এবং খাওয়ার দুই ঘণ্টা পরে সাত দশমিক আট থেকে ১১ দশমিক শূন্য পর্যন্ত প্রি-ডায়াবেটিস বলে চিহ্নিত করা হয়।

সাধারণত রক্তে সুগারের মাত্রা যদি সাত পয়েন্টের উপরে চলে যায় তখন তাকে ডায়াবেটিস বলা হয়। তবে এই হিসেব খালি পেটের।

ভরা পেটে বা খাবার দুই ঘণ্টা পরে রক্তে সুগারের মাত্রা ১১ দশমিক এক পয়েন্টের বেশি হলে তাকে ডায়াবেটিস রোগী বিবেচিত করা হয়।

রোগীর তিন মাসের রক্তে শর্করার গড় বা এইচবিএওয়ান সি পরীক্ষা করেও ডায়াবেটিস শনাক্ত করা হয়।

এইচবিএওয়ান সি পাঁচ দশমিক সাত থেকে ছয় দশমিক চার পর্যন্ত থাকলে প্রি-ডায়াবেটিস; আর এটি ছয় দশমিক চার পার হয়ে গেলে রোগীর ডায়াবেটিস বলে চিহ্নিত হয়।

ডা. শাহজাদা সেলিম জানান, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নতুন রোগীদের প্রথম প্রশ্নই থাকে, “আমি কতদিন পরপর সুগার চেক করবো?”

সাধারণত রোগীর অবস্থার ওপর নির্ভর করে কত দিন পরপর রক্তে সুগারের মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে সেই পরামর্শ দেন বলে জানান এই চিকিৎসক।

চিনির ওপর কয়েকটি সুগার কিউব

চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে ডায়াবেটিস হয় কি না এই প্রশ্ন করেন অনেকে

বাবা-মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে সন্তানেরও হবে?

অনেক সময় দেখা যায়, ডায়াবেটিস নিয়ে রোগীর পারিবারিক মেডিকেল ইতিহাস রয়েছে। অর্থাৎ রোগীর বাবা-মা অথবা তাদের যে কোনো একজন এই রোগে আক্রান্ত।

আবার অনেক সময় দেখা যায়, ডায়াবেটিসের পারিবারিক ইতিহাস না থাকলেও রোগী আক্রান্ত হন।

বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট চিকিৎসক শাহজাদা সেলিম জানান, পরিবারে বাবা-মায়ের যদি ডায়াবেটিস থাকে সেক্ষেত্রে সন্তানদেরও ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পারবো না?

চিনি বেশি খাওয়ার সঙ্গে ডায়াবেটিস হওয়ার সরাসরি কোনো যোগসূত্র নেই।

তবে চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে পরোক্ষ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।

চিনি খাওয়ার সঙ্গে ডায়াবেটিস হওয়ার যেমন সরাসরি সম্পর্ক নাই- এটা যেমন সত্য, আপনি যদি বেশি মিষ্টি খেতে অভ্যস্ত হন, তাহলে মুটিয়ে যেতে পারেন। আর মুটিয়ে গেলে পরোক্ষভাবে তা ডায়াবেটিস হতে সাহায্য করবে বলে জানান চিকিৎসকরা।

মিষ্টি জাতীয় খাবার বা চিনি স্থূলতা, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

ফলে ওই ব্যক্তি সহজেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে।

হাসিমুখে দৌড়াচ্ছেন একজন পুরুষ ও দুই জন নারী, পেছনে সবুজ গাছপালা

ডায়াবেটিস রোগীদের সুস্থতার প্রধান শর্ত নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন

ডায়াবেটিসের কারণে শরীরে কী সমস্যা দেখা দেবে?

চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিস একটি নীরব ঘাতক। এটি নিয়ন্ত্রণে না থাকলে শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং জটিলতার সৃষ্টি হয়।

দীর্ঘমেয়াদি ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থেকে হৃদরোগ, স্ট্রোক, অন্ধত্ব, কিডনি অকার্যকরসহ শারীরিক নানা জটিলতার মধ্যে পড়তে পারেন রোগী।

গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তানজিনা হোসেন বলেন, অনেক সময় কিডনি জটিলতা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রোগী জানতে পারেন তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই কিডনি কেমন কাজ করছে, তা জানার জন্য রক্তে ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষাই যথেষ্ট নয়।

“বছরে এক বা দুবার প্রস্রাবের অ্যালবুমিনের উপস্থিতিও পরীক্ষা করে দেখতে হবে। এজন্য সবচেয়ে কার্যকর হচ্ছে মাইক্রোঅ্যালবুমিন বা অ্যালবুমিন ক্রিয়েটিনিন অনুপাত পরীক্ষা করা” বলেন তিনি।

একইসাথে বছরে অন্তত দুইবার চোখের চিকিৎসকের কাছে গিয়ে রেটিনাসহ চোখ পরীক্ষা করা এবং ফ্যাটি লিভারের মাত্রা জানতে মাঝে-মধ্যে যকৃত পরীক্ষা করা উচিত বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ওষুধ খাব, নাকি ইনসুলিন নেব?

চিকিৎসকের কাছে গিয়ে ডায়াবেটিস রোগীরা সবচেয়ে কমন যে প্রশ্নটি করে থাকেন সেটি হলো, “ওষুধ দিবেন, নাকি ইনসুলিন দেওয়া হবে?”

মি. সেলিম জানান, সারা পৃথিবীর চিকিৎসকরাই ডায়াবেটিস রোগীর ওষুধ ও ইনসুলিনের পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে একই গাইডলাইন অনুসরণ করেন।

আমেরিকান ডায়াবেটিস এসোসিয়েশন এই গাইডলাইন প্রথম তৈরি করেছে।

ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের উদ্যোগেই বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ১৪ই নভেম্বর ‘ডায়াবেটিস ডে’ পালিত হয় বলে জানান এই চিকিৎসক। এখন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এখন এর অংশীদার বলে জানান তিনি।

এই গাইডলাইন অনুযায়ী, টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এক্ষেত্রে অন্য কিছু ভাবার অবকাশ নেই বলে উল্লেখ করেন চিকিৎসক মি. সেলিম।

তবে, যেসব রোগীরা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে ওষুধ নাকি ইনসুলিন দেওয়া হবে সে বিষয়ে চিকিৎসকরা বেশ কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

মি. সেলিম বলেন, ” প্রশ্নটা তৈরি হয় টাইপ-২ এর ক্ষেত্রে। ইনসুলিন দেবো না ট্যাবলেট দেবো?”

এক্ষেত্রে হিসাবটা হলো, রোগীর তিন মাসের রক্তে শর্করার গড় বা এইচবিএওয়ান সি পরীক্ষা করতে হয়।

“রক্তে গ্লুকোজের গড় ১০ শতাংশ বা তার বেশি হলে যখন রোগ ধরা পড়ে, তখন ইনসুলিন শুরু করা উচিত। আবার কিছু কিছু লক্ষণ যেমন ওজন কমে যাওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, দুর্বল লাগছে এই লক্ষণগুলো থাকলেও ইনসুলিন দেওয়া উচিত,” বলেন চিকিৎসক শাহজাদা সেলিম।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হলে ইনসুলিনের পরামর্শ দেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।

সাদা-কালো শার্ট তুলে পেটে সিরিঞ্জ ফুটিয়ে ইনসুলিন নিচ্ছেন একজন

টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ওষুধ নাকি ইনসুলিন দেওয়া হবে সে বিষয়ে চিকিৎসকরা বেশ কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন

ব্যায়াম বা খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব?

রোগীদের এই প্রশ্ন চিকিৎসকদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানান শাহজাদা সেলিম।

ডায়াবেটিস একবার চিহ্নিত হলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো উপায় নেই, কিন্তু নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপনে এই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ থাকতে পারেন বলে জানান মি. সেলিম।

ডায়াবেটিস রোগীদের সুস্থতার প্রধান শর্তই নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন।

মি. সেলিম বলেন, এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে সুষম খাদ্য খাওয়া, শারীরিক পরিশ্রম করা এবং ওষুধ খেতে হবে।

কিন্তু বাংলাদেশে রোগীরা ওষুধ বা ইনসুলিন এড়াতে অনেক সময় খাবার বা শারীরিক শ্রমের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বিজ্ঞানমনস্ক ধারণার অভাবে অনেক ধরনের প্রচারণার ফাঁদে পড়েন রোগীরা।

হাঁটলে বা অমুক গাছের শেকড় খান ডায়াবেটিস ভালো হয়ে যাবে এমন সব প্রচারণায় মানুষ প্রলুব্ধ হয়।

“কিন্তু এটি একেবারেই ভুল এবং এখন পর্যন্ত বিজ্ঞান প্রমাণ করতে পারেনি যে ডায়াবেটিস ভালো হয়ে যাবে,” বলেন মি. সেলিম।

ফলে নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন এ রোগে আক্রান্তদের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত এবং ওষুধ বাদ দিয়ে এ ধরনের বিকল্প খোঁজা যাবে না বলে জানান তিনি।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীকে সারাজীবন একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে এবং রোগ সম্পর্কে রোগীর নিজেকেও সচেতন হতে হবে বলেও জানান চিকিৎসকেরা।

বিবিসি নিউজ বাংলা