ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিনের শেষে জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলামের রেকর্ড গড়া বোলিং, ব্যাটারদের নিয়ন্ত্রিত রান, আর আয়ারল্যান্ডের বিপর্যস্ত ইনিংস—সব মিলিয়ে ম্যাচের ফল এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
তাইজুল ইসলামের ইতিহাস
বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের দিনটি আবারও আরও উজ্জ্বল হলো তাইজুল ইসলামের হাত ধরে। আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে তিন উইকেট নিয়ে তিনি পৌঁছালেন ২৪৯ টেস্ট উইকেটে—শাকিব আল হাসানকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ টেস্ট উইকেটশিকারি হিসেবে নতুন ইতিহাস গড়লেন।
এই ম্যাচেই তার উইকেট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত। নির্ভুল লাইন-লেংথ আর ধৈর্য ধরে বোলিং করাই তার দীর্ঘদিনের পরিচয়।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস: ৫০৮ রানের বিশাল লক্ষ্য
দিনের শুরু থেকেই বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রণ জমায়।
- মোমিনুল হক খেলেন তার ২৫তম টেস্ট ফিফটি
- প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মুশফিকুর রহিম সুনিপুণভাবে পৌঁছে যান চল্লিশে
- দু’জনের ১০৬ রানের জুটি ম্যাচে বাংলাদেশের প্রভাব আরও মজবুত করে
শাদমান ইসলামের ৭৮ রানের ইনিংস দলকে শক্ত ভিত দেয়। এরপর অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন তাকে এলবিডব্লিউ করেন। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে একটি তীক্ষ্ণ বাউন্সারে ফেরান জর্ডান নিল।

একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত আসে যখন ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ারে মুশফিকের ক্যাচটি ফেলে দেন কেড কারমাইকেল। এই ভুলের পর বাংলাদেশ আর থামেনি।
২৯৭/৩ করে বাংলাদেশ ইনিংস ঘোষণা করে; প্রথম ইনিংসের ৪৭৬ রানের সাথে মিলিয়ে আয়ারল্যান্ডকে দেয় ৫০৮ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য।
আয়ারল্যান্ডের লড়াই, কিন্তু টিকে থাকা কঠিন
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আয়ারল্যান্ড শেষ বিকেলে পৌঁছায় ১৭৬/৬-এ।
হ্যারি টেক্টর লড়াই করেন অর্ধশতক তুলে নিয়ে, কিন্তু ঠিক পরেই মিড-অফে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন। সেই উইকেটেই তাদের ইনিংসে আবার চাপ ফিরে আসে।
স্টাম্পসের সময় ক্রিজে ছিলেন কার্টিস ক্যাম্ফার (৩৪*) ও অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। তবে ভাঙতে থাকা উইকেট আর অসমান বাউন্সে তাদের টিকে থাকা যেন কেবল সময়ের অপেক্ষা।
হাসান মুরাদ দারুণ অফস্পিনে চাপ ধরে রাখেন, আর খালেদ আহমেদ পুরনো বলে আরেকটি উইকেট নেন।
কঠিন বাস্তবতা
আয়ারল্যান্ড ম্যাচজুড়ে লড়াই করেছে—ধৈর্য, উন্নতি এবং দীর্ঘ স্পেলের চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মানসিকতা স্পষ্ট।
কিন্তু বাংলাদেশের অভিজ্ঞ স্পিন আক্রমণ এবং দ্রুত ভেঙে পড়া উইকেটে ব্যাট করা এখন তাদের জন্য অসম্ভবকে সম্ভব করার মতো কঠিন।
বাংলাদেশের জয়ের জন্য দরকার শুধু আরও চারটি উইকেট।
৫ম দিনে ম্যাচের পরিণতি স্পষ্ট—জয়ের সুবাস বাংলাদেশের দিকেই।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















