০১:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন আনার আহ্বান শাহজাহান চৌধুরীর

আগামী সংসদ নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনকে জামায়াতের নির্দেশনায় কাজ করানোর আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম-১৫ আসনে মনোনীত প্রার্থী ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী। তিনি দাবি করেন, প্রশাসনকে দলের অধীনে আনতে না পারলে নির্বাচনে বিজয় কঠিন হবে।

 

জামায়াতের ‘অধীনে’ প্রশাসন আনতে হবে: শাহজাহান

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া–লোহাগাড়া) আসনের দলের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর জন্য আজকের এই সুযোগ ভবিষ্যতে আর আসবে না। দুর্নীতির টাকা বাদ দিলে পার্শ্ববর্তী দেশ হিন্দুস্তান থেকে বস্তাভর্তি টাকা দেশে ঢুকবে, অস্ত্রও ঢুকবে। আমাদের আমিরে জামায়াত যদি থাকতেন, আমি বলতাম—নির্বাচন শুধু জনগণকে দিয়ে নয়; যার যার নির্বাচনি এলাকায় যারা প্রশাসনে আছেন, তাদের অবশ্যই আমাদের অধীনে আনতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, বসবে, গ্রেফতার করবে, মামলা করবে।’

জিইসি কনভেনশন সেন্টারের সমাবেশে বক্তব্য

শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন সেন্টারে জামায়াতের চট্টগ্রাম অঞ্চলীয় নির্বাচনি দায়িত্বশীলদের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান। তবে এ বক্তব্যের সময় তিনি মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন না।

বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে

শনিবার রাতেই ওই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই ভিডিওতে তাঁকে আগামী নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনকে পুরোপুরি জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে আনার কথা বলতে শোনা যায়।

‘শিক্ষক–পুলিশ–প্রশাসন সবাই দাঁড়িপাল্লার কথা বলবে’

বক্তব্যে কেন্দ্রীয় এক নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনি এলাকায় প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষকের কাছে দাঁড়িপাল্লার কথা পৌঁছে দিতে হবে। পুলিশকে আপনার পেছনে হাঁটতে হবে। ওসি সাহেব সকালে আপনার দিনের পরিকল্পনা জেনে নেবেন এবং আপনাকে প্রোটোকল দেবেন। টিএনও (ইউএনও) সাহেবও এলাকার সব উন্নয়নের হিসাব আমাদের নমিনি—জামায়াতের প্রার্থী—তার কাছ থেকে নেবেন।’

উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তার দাবি

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার দক্ষিণ জেলায় অনেককে সহযোগিতা করেছি। তখন ক্যান্ডিডেট হিসেবে আমার নামও ঘোষণা করা হয়নি। উপদেষ্টাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। লোহাগাড়ায় ১০০ কোটি ও সাতকানিয়ায় ১০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তা করেছি, বাস্তবায়নের জন্য আরও ১০ কোটি করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আপনি যদি জনগণকে কিছু দিতে না পারেন, তাদের চাহিদা, অভিযোগ ও প্রয়োজন বুঝতে পারবেন না। ডেকোরেশনের বয়দের নিয়ে সম্মেলন করে লাভ নেই—আমরা তো তাদের ভোটারই মনে করি না। সবাইকে নিয়ে সম্মেলন করতে হবে।’

‘জনগণকে পাশে না পেলে বিজয় কঠিন’

তিনি বলেন, ‘আমাকে ক্ষমা করবেন—নির্বাচন শুধু সংগঠন দিয়ে হয় না। সংগঠন অবশ্যই প্রয়োজন; এটি আমাদের মৌলিক ভিত্তি ও একমাত্র বাহক। কিন্তু জনগণকে জায়গা দিতে না পারলে বিজয় কঠিন। যেমন বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার শুধু আওয়ামী লীগের লোক নিয়ে দেশ চালাতে চেয়েছিল। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় আন্দোলনের মুখে তাদের অনেক নেতা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।’


#tag: রাজনীতি | জামায়াত | নির্বাচন | চট্টগ্রাম

জনপ্রিয় সংবাদ

জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন আনার আহ্বান শাহজাহান চৌধুরীর

১২:০৮:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

আগামী সংসদ নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনকে জামায়াতের নির্দেশনায় কাজ করানোর আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম-১৫ আসনে মনোনীত প্রার্থী ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী। তিনি দাবি করেন, প্রশাসনকে দলের অধীনে আনতে না পারলে নির্বাচনে বিজয় কঠিন হবে।

 

জামায়াতের ‘অধীনে’ প্রশাসন আনতে হবে: শাহজাহান

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া–লোহাগাড়া) আসনের দলের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর জন্য আজকের এই সুযোগ ভবিষ্যতে আর আসবে না। দুর্নীতির টাকা বাদ দিলে পার্শ্ববর্তী দেশ হিন্দুস্তান থেকে বস্তাভর্তি টাকা দেশে ঢুকবে, অস্ত্রও ঢুকবে। আমাদের আমিরে জামায়াত যদি থাকতেন, আমি বলতাম—নির্বাচন শুধু জনগণকে দিয়ে নয়; যার যার নির্বাচনি এলাকায় যারা প্রশাসনে আছেন, তাদের অবশ্যই আমাদের অধীনে আনতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, বসবে, গ্রেফতার করবে, মামলা করবে।’

জিইসি কনভেনশন সেন্টারের সমাবেশে বক্তব্য

শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন সেন্টারে জামায়াতের চট্টগ্রাম অঞ্চলীয় নির্বাচনি দায়িত্বশীলদের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান। তবে এ বক্তব্যের সময় তিনি মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন না।

বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে

শনিবার রাতেই ওই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই ভিডিওতে তাঁকে আগামী নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনকে পুরোপুরি জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে আনার কথা বলতে শোনা যায়।

‘শিক্ষক–পুলিশ–প্রশাসন সবাই দাঁড়িপাল্লার কথা বলবে’

বক্তব্যে কেন্দ্রীয় এক নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনি এলাকায় প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষকের কাছে দাঁড়িপাল্লার কথা পৌঁছে দিতে হবে। পুলিশকে আপনার পেছনে হাঁটতে হবে। ওসি সাহেব সকালে আপনার দিনের পরিকল্পনা জেনে নেবেন এবং আপনাকে প্রোটোকল দেবেন। টিএনও (ইউএনও) সাহেবও এলাকার সব উন্নয়নের হিসাব আমাদের নমিনি—জামায়াতের প্রার্থী—তার কাছ থেকে নেবেন।’

উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তার দাবি

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার দক্ষিণ জেলায় অনেককে সহযোগিতা করেছি। তখন ক্যান্ডিডেট হিসেবে আমার নামও ঘোষণা করা হয়নি। উপদেষ্টাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। লোহাগাড়ায় ১০০ কোটি ও সাতকানিয়ায় ১০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তা করেছি, বাস্তবায়নের জন্য আরও ১০ কোটি করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আপনি যদি জনগণকে কিছু দিতে না পারেন, তাদের চাহিদা, অভিযোগ ও প্রয়োজন বুঝতে পারবেন না। ডেকোরেশনের বয়দের নিয়ে সম্মেলন করে লাভ নেই—আমরা তো তাদের ভোটারই মনে করি না। সবাইকে নিয়ে সম্মেলন করতে হবে।’

‘জনগণকে পাশে না পেলে বিজয় কঠিন’

তিনি বলেন, ‘আমাকে ক্ষমা করবেন—নির্বাচন শুধু সংগঠন দিয়ে হয় না। সংগঠন অবশ্যই প্রয়োজন; এটি আমাদের মৌলিক ভিত্তি ও একমাত্র বাহক। কিন্তু জনগণকে জায়গা দিতে না পারলে বিজয় কঠিন। যেমন বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার শুধু আওয়ামী লীগের লোক নিয়ে দেশ চালাতে চেয়েছিল। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় আন্দোলনের মুখে তাদের অনেক নেতা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।’


#tag: রাজনীতি | জামায়াত | নির্বাচন | চট্টগ্রাম