ভেনচারিয়া ইভানসের অভিজ্ঞান
ভেনচারিয়া ইভানসের প্রথম উপন্যাস দ্য করেসপন্ডেন্ট ২০২৫ সালের অন্যতম সেরা বিক্রিত বই হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এটি একটি ৭০ বছর বয়সী মেরিল্যান্ডের মহিলার গল্প, সিবিল ভ্যান অ্যান্টওয়ার্প, যিনি চিঠিপত্র লেখার শখ রাখেন। এই বইটি তাঁর লেখক হিসেবে প্রথম পরিচিতি লাভ করেছে এবং এটি এমন এক সাফল্য পায় যা তার লেখক নিজেও আশা করেননি।
বইটি কেন জনপ্রিয় হলো?
ইভানস বলেন, “আমাদের সাহিত্যিক রুচি অনেক ব্যাপক হলেও, বইয়ের পাঠকরা যে ধরনের উপন্যাস পছন্দ করেন, তার মধ্যে আশা এবং আশাবাদী অনুভূতির একটা বিশেষ স্থান রয়েছে।” যদিও বইটি সুখী এবং দুঃখজনক মুহূর্তগুলোর মিশ্রণ, সিবিলের চরিত্রের সাথে পাঠকরা অনেকেই নিজেদের সম্পর্কিত অনুভব করেন। তিনি বলেন, “আমার জীবন তো সাদামাটা নয়; সুখ আর দুঃখ একসঙ্গে ধারণ করা, সেটাই আমার অভিজ্ঞতা।”
বিক্রির অপ্রত্যাশিত সাফল্য
এপ্রিল মাসে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে দ্য করেসপন্ডেন্ট প্রায় ৮৮,০০০ কপি বিক্রি হয়েছে। এই সাফল্য অনেকের কাছেই অবাক করার মতো, বিশেষ করে একটি নতুন লেখকের জন্য। যেমন ২০২৫ সালের ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড জয়ী রাবিহ আলামেদ্দিনের দ্য ট্রু ট্রু স্টোরি অব রাজা দ্য গালিবল (এন্ড হিজ মাদার) বইটি আগে ২৫০০ কপি বিক্রি হয়েছিল। দ্য করেসপন্ডেন্ট একাধিক “বেস্ট অফ” তালিকায় স্থান পেয়েছে, এমনকি নিউ ইয়র্ক টাইমসের বেস্টসেলার তালিকাতেও রয়েছে।
বিক্রির পথচলা: বইয়ের বিক্রির সাফল্যের কাহিনী
ফন্ট বুকস অ্যান্ড গিফটসের বই বিক্রেতা শেরিল লিন্ডস্ট্রোম বলেন, “আমি বইটি প্রথম পড়েই একে বিক্রি করতে শুরু করি।” তিনি উল্লেখ করেন যে অনেকেই বইটি কিনতে এসে তাদের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে কিছুটা আশার আলো খুঁজে পান। রেকস্ট্রো বইয়ের বিক্রেতা সুসান রেকার্সও একই অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
লকডাউনে লেখা এবং লেখকের সংগ্রাম
ইভানস, যিনি একজন দুই সন্তানের মা, বইটির বড় অংশ লেখেন কোভিড লকডাউনের সময়ে, যখন তিনি এবং তার পরিবার একটি ভাড়া করা টাউনহাউসে বাস করছিলেন। সে সময়, তিনি একটি ছোট ডেস্ক তৈরি করার জন্য নিজের বেডরুমের ক্লোজেটে জায়গা তৈরি করেন এবং সেখানেই প্রতিদিন সকালে ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত লেখালেখি করতেন। “দ্য করেসপন্ডেন্ট” তার অষ্টম উপন্যাস, তবে এর আগে তার অন্যান্য উপন্যাস কখনও প্রকাশিত হয়নি।
ক্লোজেট থেকে সাফল্য: লেখা এবং সংগ্রামের কাহিনী
এক সময়, তিনি এই উপন্যাসটি প্রকাশিত না হলে আইন শিক্ষার পথে পা বাড়ানোর কথা ভেবেছিলেন, কিন্তু ভাগ্য বদল হয় এবং তিনি এখন উইনস্টন-সেলেমে একটি বড় জায়গায় বসে তার পরবর্তী উপন্যাস নিয়ে কাজ করছেন। লেখক হিসেবে তাঁর যাত্রার এই গল্প আজ হাজার হাজার পাঠককে অনুপ্রাণিত করছে।
লেখার পদ্ধতি এবং প্রেরণা
ইভানস তার লেখালেখির পদ্ধতি সম্পর্কে বলেন, “আমি প্রাতঃকাল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত লেখালেখি করতাম, যেহেতু এই সময়টা ছিল একমাত্র শান্তিপূর্ণ সময়।” তার উপন্যাসের মূল চরিত্র সিবিল ভ্যান অ্যান্টওয়ার্প, যিনি চিঠি লিখতে পছন্দ করেন, সেখান থেকেই লেখকের নিজস্ব অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটে।
সাক্ষাৎকারের সারাংশ: লেখক হিসেবে নিজের পরিচিতি এবং পাঠকদের অনুভূতি
একটি সাক্ষাৎকারে ইভানস বলেন, “আমার উপন্যাসের চরিত্র সিবিলের মতো আমি নিজেও চিঠি লিখি। আমি চিঠির মাধ্যমে একজনের সাথে এক ধরনের বিশেষ যোগাযোগ স্থাপন করি, যা ফোন বা টেক্সটের মাধ্যমে সম্ভব নয়।”
চিঠি লেখার প্রতি ভালোবাসা
তিনি আরও বলেন, “চিঠি লেখার মাধ্যমে আমি মানুষের সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করি এবং তা খুবই ব্যক্তিগত অনুভূতি দেয়।”
পরিকল্পনা এবং ভবিষ্যৎ
বর্তমানে ইভানস তার নতুন উপন্যাসের কাজ করছেন এবং আশা করছেন তার লেখার পথে আরও সাফল্য পাবেন। তবে তিনি এক সময় ভেবেছিলেন যে যদি তার কোনো উপন্যাস প্রকাশিত না হয়, তাহলে তাকে আইন ব্যবসার দিকে নজর দিতে হবে।
এটা পরিষ্কার যে দ্য করেসপন্ডেন্ট শুধু একটি উপন্যাস নয়, এটি একজন লেখকের জীবনের সংগ্রাম এবং সাফল্যের কাহিনী। দ্য করেসপন্ডেন্ট বইটি শুধু একটি সাহিত্যিক সাফল্য নয়, বরং এক ধরনের ব্যক্তিগত জয় যা লাখো পাঠকের মন ছুঁয়ে গেছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















