মানবদেহে ইমপ্লান্ট বসালে প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে—এই বড় সমস্যার সমাধানে বিজ্ঞানীরা এমন এক নতুন ধরনের সেমিকন্ডাক্টর উদ্ভাবন করেছেন, যা বায়োইলেকট্রনিক ডিভাইসের ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারে। নরম, জেল জাতীয় এই চিপ মস্তিষ্কে ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উপযোগী বলে মনে করা হচ্ছে।
বায়োইলেকট্রনিক্স কী এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ
বায়োইলেকট্রনিক্স এমন একটি বিজ্ঞানক্ষেত্র, যেখানে ইলেকট্রনিক সিস্টেমকে মানুষের জৈবিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এসব ডিভাইস দেহের অভ্যন্তরীণ সিগন্যাল পর্যবেক্ষণ করতে পারে বা প্রাকৃতিক কার্যক্রমে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।
এর উন্নত উদাহরণ হলো ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেস, যা মস্তিষ্কের সংকেতকে অনুবাদ করে বাহ্যিক ডিভাইস নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করে—যেমন নিউরালিংকের প্রযুক্তি।

গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা: দেহের প্রতিরোধ প্রতিক্রিয়া
অনেক ইমপ্লান্টেই দেহের ইমিউন সিস্টেম আক্রমণ করে এবং ডিভাইসকে প্রত্যাখ্যান করে। শক্ত, অনমনীয় উপকরণ—বিশেষ করে সিলিকন—ব্যবহারের কারণে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। ফলে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার কঠিন হয়ে পড়ে।
হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উদ্ভাবন
গত মাসে সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার পর হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদল জানায়, চিকিৎসা ও কোষ-গবেষণার বহু বিশেষজ্ঞ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এই প্রযুক্তির পরবর্তী সম্ভাবনা যাচাই করতে।

গবেষকেরা বলছেন, তারা থ্রিডি হাইড্রোজেল-ভিত্তিক সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করেছেন। এই উপাদান নরম, নমনীয় এবং দেহের সঙ্গে সহজে মানিয়ে নিতে সক্ষম। ফলে আগের কৃত্রিম সিলিকন উপকরণের তুলনায় এটি মস্তিষ্কের মতো নরম অঙ্গের জন্য অনেক বেশি নিরাপদ ও উপযোগী।
প্রযুক্তির সম্ভাবনা
এই নরম সেমিকন্ডাক্টর ভবিষ্যতে এমন ব্রেইন-চিপ তৈরিতে সাহায্য করতে পারে, যা দেহে ইমপ্লান্ট করার পর প্রতিরোধ ব্যবস্থার আক্রমণের শিকার হবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিউরালিংকের মতো উচ্চ-ঝুঁকির ইমপ্লান্ট প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় বাধাই হতে পারে এভাবে দূর হয়ে যাবে।

#টেক #বিজ্ঞান #চীন #নিউরালিংক #বায়োইলেকট্রনিক্স
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















