সিঙ্গাপুরের ঘরোয়া প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি জুরংয়ের আন্তর্জাতিক বিজনেস পার্কে অবস্থিত দীর্ঘদিনের সদর দপ্তর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অফিসের জায়গা কমিয়ে আগামী ২০২৬ সালের মার্চে আলেকজান্দ্রা টেকনোপার্কে স্থানান্তর হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
১২ ডিসেম্বর এক প্রশ্নের জবাবে ক্রিয়েটিভ জানায়, বর্তমান ভবনের লিজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা আর নবায়নের পথে যাচ্ছে না। বরং বর্তমান কার্যক্রমের সঙ্গে মানানসই, তুলনামূলক আধুনিক ও গতিশীল কর্মপরিবেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ছোট পরিসরের নতুন অফিস
আলেকজান্দ্রা টেকনোপার্কে ক্রিয়েটিভের নতুন অফিসের আয়তন হবে প্রায় দুই হাজার আটশ সাতাত্তর বর্গমিটার, যা তিনটি অফিস ইউনিটের সমান। অতীতে জুরং ভবনটির মালিক ছিল ক্রিয়েটিভ নিজেই। তবে দুই হাজার আট সালে প্রায় আড়াইশ মিলিয়ন ডলারে ভবনটি বিক্রি করে পুনরায় ভাড়ায় নেওয়ার চুক্তি করে প্রতিষ্ঠানটি। সময়ের সঙ্গে সেই পরিকল্পনা সংকুচিত হয় এবং বর্তমানে তারা ভবনের মাত্র দুটি তলা ব্যবহার করছে।

অফিস স্থানান্তরের পাশাপাশি নেতৃত্ব সংকটেও পড়ছে ক্রিয়েটিভ। আগামী ১৫ জানুয়ারি ২০২৬ অন্তর্বর্তী প্রধান নির্বাহী ও নির্বাহী চেয়ারম্যান তান জক টিন দায়িত্ব ছাড়বেন। নতুন প্রধান নির্বাহীর নাম এখনো ঘোষণা করা হয়নি। চলতি বছরের জুলাইয়ে স্বাস্থ্যগত কারণে আগের প্রধান নির্বাহী সরে দাঁড়ানোর পরই এই অস্থায়ী ব্যবস্থায় যায় কোম্পানি।
টানা লোকসান ও কর্মী ছাঁটাই
সিঙ্গাপুর এক্সচেঞ্জে দাখিল করা নথি অনুযায়ী, টানা তিন অর্থবছর কর-পূর্ব লোকসানে রয়েছে ক্রিয়েটিভ। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে লোকসান কিছুটা কমলেও প্রতিষ্ঠানটি আগেই কর্মী ছাঁটাই করেছে, যা মোট জনবলের প্রায় চৌদ্দ শতাংশ। পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে কর্মী ক্ষতিপূরণেও বড় অঙ্ক ব্যয় হয়েছে।
বৈশ্বিক বাজারের চাপ

কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতি এখনও চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টর খাতে সম্ভাব্য শুল্ক আরোপের আশঙ্কা ব্যবসার ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করছে। বর্তমানে ক্রিয়েটিভ পঁয়ষট্টি দেশে পণ্য সরবরাহ করে এবং বিশ্বজুড়ে তাদের কর্মী সংখ্যা দুই শতাধিক।
পরিচিত ব্র্যান্ডের ভবিষ্যৎ
উচ্চমানের সাউন্ড কার্ড সাউন্ড ব্লাস্টারসহ হেডফোন, ওয়েবক্যাম ও নানা অডিও পণ্যের জন্য পরিচিত ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি নতুন ঠিকানা ও কাঠামোর মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















