বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই টের পান, উৎসবের দিনে দু’এক গ্লাস মদ আর আগের মতো আনন্দ দেয় না। বরং শরীর জুড়ে থাকে ভারী ভাব, মাথাব্যথা আর অস্বস্তি। গবেষণা বলছে, এই অনুভূতি কেবল কল্পনা নয়, বয়সের সঙ্গে শরীরের ভেতরে সত্যিই বদলে যায় মদের প্রভাবের ধরন।
বয়স ও শরীরের ভেতরের পরিবর্তন
বয়স বাড়লে শরীরে পেশির পরিমাণ কমে, বাড়ে চর্বি। পেশিতে থাকে বেশি পানি, আর মদ পানিতে সহজে মিশে যায়। ফলে পেশি কমে গেলে শরীর মদ সহ্য করার ক্ষমতাও কমে। অল্প পরিমাণ মদেই রক্তে অ্যালকোহলের মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায়। এর ফল মাথা ভার, দ্রুত নেশা আর তীব্র হ্যাংওভার।
গবেষণায় কী দেখা গেছে
সামাজিকভাবে মদ্যপান করা বিভিন্ন বয়সের মানুষের ওপর করা এক গবেষণায় দেখা যায়, প্রবীণরা তরুণদের মতোই নেশা অনুভব করলেও আনন্দ পান তুলনামূলক কম। কারণ তাদের শরীরে পানি কম, পেশি কম, ফলে মদের প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী ও ভারী হয়ে ওঠে।
লিভার দুর্বল হলে বিপদ বাড়ে
বয়স বাড়ার সঙ্গে লিভারের আকার ও কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে। এতে মদ ভাঙার গতি শ্লথ হয়। শরীরে জমে থাকা এক ধরনের বিষাক্ত উপাদান মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, হৃদকম্পন আর তীব্র হ্যাংওভারের জন্য দায়ী। এই উপাদান শরীরকে বিষক্রিয়ার মতো অনুভূতি দেয়।
বয়সের সঙ্গে ঘুম এমনিতেই হালকা হয়ে যায়। তার ওপর মদ খেলে নাকডাকা বাড়ে, শ্বাসপ্রশ্বাসে বাধা আসে, ঘুম ভেঙে যায় বারবার। নিয়মিত মদ্যপানে মস্তিষ্কের ঘুম নিয়ন্ত্রণকারী সংকেতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে দীর্ঘদিন পর অনিদ্রা স্থায়ী রূপ নিতে পারে।

ওষুধ আর স্মৃতির ঝুঁকি
বয়স বাড়লে অনেকেই নিয়মিত ওষুধ খান। মদ এসব ওষুধের সঙ্গে খারাপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। কখনো ওষুধের কাজ কমায়, কখনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বাড়ায়। পাশাপাশি স্মৃতিশক্তি কমা, হাতের কাজের দক্ষতা হ্রাস আর শরীরের ভেতরের প্রদাহও বাড়তে পারে।
তবু যদি পান করতেই হয়
সবকিছু জেনেও কেউ কেউ মদ ছাড়তে চান না। সেক্ষেত্রে ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে পান করা ভালো। এক গ্লাস মদের পর এক গ্লাস পানি বা ইলেকট্রোলাইটসমৃদ্ধ পানীয় শরীরকে ভারসাম্যে রাখে। সঙ্গে হালকা খাবার খাওয়া উপকারী। আর ঘুমের ঠিক আগে শেষ পেগ নয়, একটু আগেই থামলে শরীর কিছুটা স্বস্তি পায়।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















