দামি গাড়ি, বড় আয় আর সামাজিক মর্যাদা—সব থাকলেও আমেরিকার বহু ডাক্তার মানসিক ক্লান্তিতে ভুগছেন। কাগজপত্র, বিমা কোম্পানি আর ডিজিটাল বার্তার চাপে চিকিৎসার আনন্দ হারাচ্ছেন তারা।
ডাক্তারদের পার্কিং লটে সুখের ছবি, মনে অস্বস্তি
টেক্সাসের ডালাসে এক চিকিৎসক পার্কিং লটে চোখে পড়ে ঝকঝকে দামি গাড়ির সারি। বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় সাফল্যের চূড়া। কিন্তু ভেতরের গল্প আলাদা। বহু চিকিৎসক বলছেন, তারা চিকিৎসা করতে মেডিকেল কলেজে গিয়েছিলেন, বিমার হিসাব মেলাতে বা কাগজপত্র পূরণ করতে নয়। এই বাড়তি বোঝাই তাদের অসুখী করছে।

উচ্চ আয়, তবু বার্নআউট
আন্তর্জাতিক এক জরিপে দেখা গেছে, আমেরিকার পারিবারিক চিকিৎসকদের বড় অংশ নিজেকে মানসিকভাবে ক্লান্ত বলে মনে করেন। তুলনায় অন্য উন্নত দেশে এই হার কম, যদিও সেসব দেশের চিকিৎসকদের আয় অনেক কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ক্লান্তি তৈরির সব উপাদানই আছে।
কাগজপত্র আর বিমা যুদ্ধের চাপ
গবেষকেরা বলছেন, রোগী দেখার পাশাপাশি অসংখ্য প্রশাসনিক কাজ চিকিৎসকদের ঘাড়ে চাপানো হয়েছে। জটিল নথি পূরণ, ডিজিটাল ইনবক্সে রোগীর অগণিত বার্তা, বিমা কোম্পানির সঙ্গে অনুমোদনের লড়াই—সব মিলিয়ে কাজের সময় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।

ডিজিটাল রেকর্ডে বাড়তি কাজ
ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্য নথি চালুর পর সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে। প্রতিদিন দীর্ঘ সময় শুধু রোগীর বার্তার উত্তর দিতেই চলে যাচ্ছে। মহামারির সময় দূরবর্তী যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যবহার বাড়ায় বার্তার ঢল নেমেছে। চিকিৎসা উন্নত হলেও কাজের চাপ বেড়েছে।
রোগী নিরাপত্তা ও ব্যবস্থার ক্ষতি
ক্লান্ত চিকিৎসকেরা ভুল করার ঝুঁকিতে থাকেন। অনেকেই পেশা ছাড়ছেন, যার ফলে স্বাস্থ্যব্যবস্থার খরচও বাড়ছে। এক বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই ক্লান্তির কারণে প্রতিবছর বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে।

সমাধানের পথে ভাবনা
কিছু দেশে প্রশাসনিক কাজ কেন্দ্রীভূত করে কাগজপত্র কমানো হয়েছে। আমেরিকায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে নথি লেখা ও কোডিং সহজ করার আলোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু মানসিক প্রশিক্ষণ নয়, কাজের চাপ কমানোই এখন সবচেয়ে জরুরি।

সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















