দ্রুত কেনাকাটা, ছোট উপহার
ছুটির মৌসুম যত এগোয়, ততই ‘সিক্রেট সান্তা’ কেনাকাটা হয়ে ওঠে সময়-নির্ভর। ডেলিভারি উইন্ডো কমে আসে, দোকান ঘোরা কঠিন হয়, আর অফিস-বন্ধু-বড় পরিবারের সামাজিক বাধ্যবাধকতা একসঙ্গে চাপ দেয়। ফলে গিফট গাইডগুলো এখন এমন পণ্যের দিকে ঝুঁকছে যেগুলো সহজে পাওয়া যায়, সহজে মোড়ানো যায়, এবং ‘সোশ্যালি সেফ’—অর্থাৎ খুব ব্যক্তিগত তথ্য না জেনেও এমন কিছু দেওয়া যায় যা বিব্রত করবে না। এটি কেবল ট্রেন্ড নয়; অনেকে বাজেট নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছেন, কিন্তু সামাজিক সম্পর্কেও ফাঁক রাখতে চান না।

এখন জনপ্রিয় ‘মাইক্রো-গিফট’—ছোট ইলেকট্রনিক্স, ডেস্ক অ্যাকসেসরি, পানির বোতল/মগ, ছোট হবি আইটেম—এসবের আরেক কারণ হলো আধুনিক জীবনযাত্রার সীমাবদ্ধতা। অনেকের ঘর ছোট, শেয়ার্ড বাসা, বা মিনিমালিস্ট পছন্দ। ফলে বড় শোপিসের বদলে এমন কিছু ভালো লাগে যা দৈনন্দিন রুটিনে জায়গা করে নিতে পারে—খরচও কম, ব্যবহারও বেশি।
রুচি, প্রযুক্তি ও ‘রিস্ক ম্যানেজমেন্ট’
কম দামের হলেও ‘প্রিমিয়াম-ফিল’ দেয়—এমন উপহার এখন বেশি চাওয়া। পরিচিত ব্র্যান্ড, সহজ ডিজাইন—এসব উপহারকে কম ঝুঁকিপূর্ণ করে। এই অর্থে, অনেক গিফট লিস্ট নতুন কিছু আবিষ্কারের চেয়ে ‘রিস্ক ম্যানেজমেন্ট’-এর মতো কাজ করছে—দেওয়া হলো, ঠিকভাবে গ্রহণও হলো। একই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে, প্রযুক্তি ছোট ছোট মুহূর্তে ঢুকে গেছে—ফোন/ল্যাপটপ অ্যাকসেসরি, ছোট অডিও গ্যাজেট, কিংবা ঘরের ছোট সুবিধাজনক স্মার্ট আইটেম—সবই তালিকায়। আবার নন-টেক স্ট্যাপল যেমন নোটবুক, কিচেন টুল, বা পরিচ্ছন্নতা/অর্গানাইজিং আইটেমও সমান জনপ্রিয়।

আরেকটি স্পষ্ট ধারা হলো—আকাঙ্ক্ষার চেয়ে ‘কমফোর্ট’কে গুরুত্ব দেওয়া। উষ্ণ আলো, আরামদায়ক ডেস্ক সেটআপ, ছোট আনন্দের জিনিস—এসব মানুষকে দৈনন্দিন কাজের ভেতরেই একটু স্বস্তি দেয়। রিমোট ও হাইব্রিড কাজের যুগে অনেকেই বুঝেছেন, নিজের আশপাশের পরিবেশ দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের মতো। তাই এমন ছোট উপহার যা প্রতিদিনের অভ্যাসকে একটু উন্নত করে, সেটিই অনেক সময় সবচেয়ে অর্থপূর্ণ হয়।
এর ফলে ছুটির উপহারের অর্থনীতি বদলাচ্ছে। ‘থটফুলনেস’ এখন বেশি প্রকাশ পাচ্ছে ‘ইউজফুলনেস’-এর মাধ্যমে। আবেগ কমেনি; বরং আবেগের ভাষা হয়েছে আরও প্র্যাকটিক্যাল। ভালো উপহার যেন একটি নীরব প্রশ্নের উত্তর দেয়—তোমার দিনের কোন ছোট অস্বস্তিটা আমি কমিয়ে দিতে পারি?
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















