কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন আর শুধু মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারের পর্দায় সীমাবদ্ধ নেই। গলায় ঝোলানো লকেট, হাতে পরা ব্রেসলেট কিংবা চোখে লাগানো চশমার মধ্যেও ঢুকে পড়েছে এই প্রযুক্তি। বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো দাবি করছে, ভবিষ্যতের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হবে ব্যক্তিগত, পরিস্থিতি বোঝা ও সব সময় পাশে থাকা। কিন্তু বাস্তবে এসব পরিধেয় যন্ত্র ব্যবহার করে মানুষ ঠিক কতটা উপকার পাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
সাম্প্রতিক এক পরীক্ষায় বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পরিধেয় যন্ত্র ব্যবহার করে দেখা হয়েছে, সেগুলো দৈনন্দিন জীবনে সত্যিই কতটা কাজে আসে। পরীক্ষায় ছিল ব্রেসলেট, লকেট, আংটি ও চশমা ধরনের যন্ত্র। অভিজ্ঞতা বলছে, ধারণা যতটা আকর্ষণীয়, বাস্তব ব্যবহার ততটা মসৃণ নয় ।
ব্যবহার আর বাস্তবতার ফারাক
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এসব যন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যবহারকারীর চারপাশের কথাবার্তা, কাজকর্ম ও পরিবেশ বুঝে সহায়তা করা। কিছু যন্ত্র কথোপকথন শুনে তার লিখিত রূপ তৈরি করে, আবার কিছু যন্ত্র দিনের কাজের সারসংক্ষেপ বা করণীয় তালিকা বানিয়ে দেয়। তাত্ত্বিকভাবে এটি সময় বাঁচানোর কথা। কিন্তু বাস্তবে অনেক যন্ত্রই কয়েক দিনের মধ্যেই ব্যবহারকারীর আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
ব্রেসলেট ও লকেটের অভিজ্ঞতা
হাতে পরা ব্রেসলেট বা গলায় ঝোলানো লকেট সাধারণত শব্দ ধারণ করে। সেগুলো মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথাবার্তার লিখিত রূপ তৈরি করে ব্যবহারকারীকে দেখায়। কিছু ক্ষেত্রে এই সারসংক্ষেপ ও করণীয় তালিকা বেশ কাজে লাগলেও যন্ত্রগুলোর গঠন বেশ নড়বড়ে। আবার রেকর্ডিং চলছে কি না, তা আশপাশের মানুষ বুঝতে না পারায় গোপনীয়তা নিয়েও অস্বস্তি তৈরি হয়।

চশমায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
পরিধেয় যন্ত্রের মধ্যে চশমা তুলনামূলকভাবে বেশি গ্রহণযোগ্য। বিশেষ করে হাতে কিছু না ধরেই ছবি তোলা বা সামনে থাকা জিনিস সম্পর্কে প্রশ্ন করার সুবিধা ব্যবহারকারীদের পছন্দ হয়েছে। তবে চশমায় বসানো ছোট পর্দা এখনো চোখের আরাম বা ব্যবহারিক দিক থেকে পুরোপুরি সফল নয়। নকশার দিক থেকেও অনেকের কাছে এগুলো এখনো স্বাভাবিক চশমার বিকল্প হয়ে উঠতে পারেনি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বুদ্ধি কতটা
এই যন্ত্রগুলোর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, ব্যবহারকারীর কতটা তথ্য দিলে এগুলো সত্যিকারের সহায়ক হবে। যত বেশি তথ্য পায়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তত ভালোভাবে প্রয়োজন বুঝতে পারে। কিন্তু এর মানে হলো ব্যক্তিগত কথাবার্তা, কাজের তথ্য ও অভ্যাসের বড় অংশ যন্ত্রের কাছে তুলে দেওয়া। অনেক ব্যবহারকারীর কাছেই এটি এখনো গ্রহণযোগ্য মনে হচ্ছে না।
ভবিষ্যৎ কোথায়
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বড় অংশ মোবাইল ফোনেই চলবে। ধীরে ধীরে এমন ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে, যেখানে তথ্য ফোনের ভেতরেই প্রক্রিয়াজাত হবে, বাইরে পাঠাতে হবে না। এতে গোপনীয়তার ঝুঁকি কিছুটা কমতে পারে। আপাতত পরিধেয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্র বাড়লেও, স্মার্টফোন যে খুব শিগগিরই হারিয়ে যাবে, এমন সম্ভাবনা নেই ।
#কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা #পরিধেয়প্রযুক্তি #প্রযুক্তিখবর #ডিজিটালজীবন #ভবিষ্যৎপ্রযুক্তি
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















