১৯৪৫ সালের আগস্ট মাসের ছয় ও নয় তারিখে জাপানের দুই শহর হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে একটি করে দুই ধরনের পারমাণবিক বোমা ফেলেছিলো…..
১৯৪৪ সালের জুন মাসে মাও জে দুং ঘোষণা করেন যে জাপানের বিরুছে যুদ্ধে চীনের কমিউনিস্টরা জাতীয়তাবাদী সরকারকে সমর্থন করবে। কিন্তু চিয়া কাইশেক বেঁকে বসেন, চীনা কমিউনিস্টদেরকে মার্কিন সাপ্লাই ও গোলাবারুদ প্রদানে প্রবল আপত্তি তোলেন। এমনকি ১৯৪৪ সালের নভেম্বর মাসেও চীনের কমিউনিস্টদের মার্কিন সাপ্লাই ও গোলাবারুদ সরবরাহ-তে চিয়াং কাইশের তাঁর বিরোধিতা অব্যাহত রাখেন।
অ্যান্থনি সিলভা দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ১৩৪৫তম এয়ার পরিবহণ কমান্ডের গ্রাউন্ড এয়ারক্র্যাফট মেকানিক ও ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেনের কাজ করেন। তাঁর ইউনিট সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়নি, অর্থাৎ ছিলো কমব্যান্ট” ইউনিট যার প্রধান কাজই ছিলো চীনের “কুনমিং” নামক শহরে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের বিশতম (২০) বিমানবাহিনীকে জ্বালানি, ‘অ্যাভিয়েশন জ্বালানি (বিমানের ইনজিনের জ্বালানি)’ এবং অন্যান্য সাপ্লাই পরিবহণ করা।

তেজগাঁও বিমানঘাঁটিতে বিমান রক্ষণাবেক্ষণ হ্যাঙ্গার।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশতম (২০) বিমানবাহিনী এবং “ফ্লাইং টাইগারস”- উভয়েই সাপ্লাই নিয়ে ভারত থেকে, হিমালয়ের সম্প্রসারিত উঁচু নিচু কুজো বাঁকানো পাহাড় মালার উপর দিয়ে যাকে “হাম্প” বলা হতো, উড়ে চীনে পৌছে দিয়ে আসত। কিন্তু কখনোই একত্রে এক সঙ্গে করত না; কারণ, প্রথম দিকে সাপ্লাই-য়ের ভাগ নিয়ে এদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকত। ফলে, ঝগড়াঝাটি এড়াতে তাদের মাধ্যমে ভারত থেকে পৃথক পৃথকভাবে সাপ্লাই পাঠানো শুরু হয়।
১৯৪৪ সালের এপ্রিল মাসে ২০তম বিমানবহর সৃষ্টির লক্ষ্যই ছিল জাপানে স্ট্র্যাটেজিক বোমাবর্ষণ করা। শুরুতে, এর ঘাঁটি ছিলো ভারতবর্ষে, পরে চীনে স্থানান্তরিত হয়। এই বিশতম ইউনিটের অধীনস্থ ‘গ্রুপ’গুলোরই একটি ‘গ্রুপ’ মহাযুদ্ধ অবসানের প্রায় শেষের দিকে ১৯৪৫ সালের আগস্ট মাসের ছয় ও নয় তারিখে জাপানের দুই শহর হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে একটি করে দুই ধরনের পারমাণবিক বোমা ফেলেছিলো।
স্মৃতিচারণের সময় অ্যান্থনি সিলভা আমাকে বলেন যে তেজগাঁও ঘাঁটির সার্বক্ষণিক পাহারাদারি করত গুর্খাবাহিনী এবং অ্যান্টি-এয়ারক্র্যাফট গান নিয়ে। অতন্দ্র প্রহরাতে ছিলো ব্রিটিশ-ভারত সেনাবাহিনীর সেনারা।
মাস ছয়েক তেজগাঁও ঘাঁটিতে ডিউটি পালনের পরে অ্যান্থনি’কে কুর্মিটোলা ঘাঁটিতে বদলি করা হয়।
(চলবে)
নাঈম হক 


















