শিল্প ও চাহিদার দুর্বলতা
জার্মানির অর্থনীতি মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছে যে ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি দীর্ঘ সময় ধরে দুর্বল প্রবৃদ্ধির মুখে থাকতে পারে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, উৎপাদন খাতে গতি ফিরছে না, বিশেষ করে যন্ত্রপাতি ও রাসায়নিক শিল্পে নতুন অর্ডার কমছে। কর্মকর্তারা বলছেন, বৈশ্বিক চাহিদার অনিশ্চয়তা ও দেশের ভেতরের কাঠামোগত সমস্যাই এই চাপ বাড়াচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানিই ছিল জার্মান প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকা শক্তি। কিন্তু বৈশ্বিক সুদের হার কঠোর থাকা, চীনে চাহিদা কমে যাওয়া এবং ভূরাজনৈতিক ঝুঁকির কারণে বড় শিল্পপণ্যের অর্ডার কমেছে। একই সঙ্গে উচ্চ জ্বালানি খরচ ও জটিল নিয়ন্ত্রক কাঠামোর কারণে অনেক কোম্পানি বিনিয়োগ পিছিয়ে দিচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের মতে, এসব কারণ মিলেই প্রবৃদ্ধিকে স্থবির করে রাখছে।

নীতিনির্ধারণ নিয়ে বিতর্ক
এই সতর্কতার পর জার্মানিতে রাজস্ব ও শিল্পনীতি নিয়ে বিতর্ক জোরদার হয়েছে। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো দ্রুত অনুমোদন প্রক্রিয়া, কর ছাড় এবং সবুজ ও ডিজিটাল বিনিয়োগে স্পষ্ট প্রণোদনার দাবি তুলছে। অন্যদিকে কিছু বিশ্লেষকের মতে, প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে অবকাঠামো ও প্রযুক্তিতে সরকারি ব্যয় বাড়ানো জরুরি—even যদি তাতে রাজস্ব নীতিতে কিছু শিথিলতা আনতে হয়।
সরকার বলছে, জ্বালানি দামের চাপ কমানো ও রপ্তানিকারকদের সহায়তায় নেওয়া পদক্ষেপগুলোর প্রভাব আসতে সময় লাগবে। অর্থনীতিবিদদের মতে, ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে নীতির পূর্বানুমেয়তার ওপর—বিশেষ করে জলবায়ু নীতি, জ্বালানি সরবরাহ এবং শ্রমবাজার নিয়ে। এই স্পষ্টতা না এলে নিয়োগ ও বিনিয়োগে সতর্কতা থেকেই যাবে।

ইউরোপের জন্য বার্তা
জার্মানির অর্থনৈতিক গতি কমে গেলে তার প্রভাব ইউরোপজুড়েই পড়ে। বহু দেশের সরবরাহ শৃঙ্খল জার্মান চাহিদার ওপর নির্ভরশীল। বিশ্লেষকেরা সতর্ক করছেন, জার্মানি যদি ঘুরে দাঁড়াতে না পারে, তবে ২০২৬ সালের শুরুতে ইউরোজোনের প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার নিচে নেমে যেতে পারে। আপাতত চিত্রটি সতর্কতামূলকই রয়ে গেছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















