বছরের শেষ দিকে এসে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। একের পর এক রেকর্ড গড়তে গড়তে প্রধান সূচকগুলো শক্তিশালী সমাপ্তির দিকে এগোচ্ছে। বিশেষ করে এস অ্যান্ড পি সূচক প্রথমবারের মতো সাত হাজারের কাছাকাছি পৌঁছানোর দ্বারপ্রান্তে রয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
বাজারের সাম্প্রতিক গতি
ডিসেম্বরের শুরুতে প্রযুক্তি খাতের দুর্বলতা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ বাজারে কিছুটা অস্থিরতা তৈরি করেছিল। তবে সেই চাপ কাটিয়ে প্রধান সূচকগুলো আবারও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। চলতি মাস শেষে এস অ্যান্ড পি সূচক টানা অষ্টম মাস বৃদ্ধির পথে, যা কয়েক বছরের মধ্যে দীর্ঘতম ধারাবাহিক উত্থান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বাজারের গতি এখনো ক্রেতাদের পক্ষে রয়েছে। বড় কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা না ঘটলে শেয়ারদরের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
সুদহার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি
বছরের শেষ দিকে বিনিয়োগকারীদের নজর কেন্দ্রীভূত হয়ে আছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদহার নীতির দিকে। চলতি বছরে একাধিক ধাপে সুদহার কমানো হলেও ভবিষ্যতে আরও কতটা ছাড় আসবে, তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। সর্বশেষ বৈঠকের আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ হলে নীতিনির্ধারকদের ভাবনার দিকটি আরও স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে বছরের শেষের দিকে পোর্টফোলিও সমন্বয় এবং তুলনামূলক কম লেনদেনের কারণে স্বল্পমেয়াদি ওঠানামার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশ্লেষকেরা।
খাতভিত্তিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত
দীর্ঘদিন ধরে বাজারকে এগিয়ে নেওয়া প্রযুক্তি খাত সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা চাপের মুখে পড়লেও আর্থিক সেবা, পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা এবং ক্ষুদ্র মূলধনী কোম্পানিগুলো ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, বিনিয়োগকারীরা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল মূল্যায়নের খাতে ঝুঁকছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামগ্রিক অর্থনীতি এখনো যথেষ্ট শক্ত অবস্থানে রয়েছে এবং চলতি বছর যেসব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠেছে, আগামী বছরে সেগুলোর প্রভাব কম হতে পারে।
বিশ্ববাজারে ইতিবাচক সাড়া
মার্কিন বাজারের পাশাপাশি এশিয়ার বাজারেও ইতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে। চীনের শেয়ারবাজার টানা কয়েকটি লেনদেনে ঊর্ধ্বমুখী থেকে দীর্ঘ সময়ের মধ্যে সেরা সপ্তাহ পার করেছে। শক্তিশালী মুদ্রা এবং ধীরে ঘুরে দাঁড়ানো অর্থনীতি সেখানে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াচ্ছে।
সব মিলিয়ে, বছরের শেষ লগ্নে এসে বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে আশাবাদের সুরই প্রাধান্য পাচ্ছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















