পর্ব-৩
সারাক্ষণ ডেস্ক
রোহিনতন নারিমান, একজন পার্সি যাজক ও ইন্ডিয়ান সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারক স্বীকার করেন যে, বিয়ের এই পক্ষপাত রীতি পার্সিদের শেষ করে দেবে। “ এখন নর্থ আমেরিকাই হলো একমাত্র জায়গা যেখানে ছেলে-মেয়ে ও বাবা-মা কে বিয়ের পরে গ্রহণ করছে। এবং আমি নিশ্চিৎ জরোয়াস্ট্রিয়ানরা এখানে আসবেন এবং তারা ভালো থাকবেন।”
বেহনাম আবাডিয়ানস ট্রফি ক্যালির্নিয়ার একটি অখ্যাত ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে অবস্থিত। এখানকার শেলভ গুলোতে চমৎকার ব্রোঞ্জের , গ্লাস, এ্যাথলেট ও বিজ্ঞানীদের নানা সুন্দর উপাদানে সজ্জিত। তিনি বলেন, আবাডিয়ান একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার । তিনি ১৯৮০ সালে ইরাক যেদিন ইরানে অভিযান চালায় সেদিন দেশ ছাড়েন। তারপর নিউইয়র্কে একজন ইরাকি মুসলিম নারীকে বিয়ে করেন।এখন তিনি ক্যালিফোর্নিয়াতে জরোয়াস্ট্রিয়ান সেন্টারের একজন ট্রাস্টি এবং নর্থ আমেরিকায় তাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে বই বিতরণ করেন।
ধর্মীয় স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই কম
আবাদিয়ান তার কাজের জন্যে তিনি গর্বিত কারন তিনি সাইরাস দ্য গ্রেটের ১০ ফুট উঁচু একটি মূর্তি নির্মাণ করেছেন। আমি আবাদিয়ান ও তার বন্ধু আরমান আরিয়ানের সাথে ট্রফি হাউসের কাছাকাছি একটা উন্নতমানের পার্সিয়ান রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ করতে গিয়েছিলাম।এটা ছিল নওরোজের সাপ্তাহিক ছুটির দিন। জরোস্ট্রিয়ানদের নববর্ষ শুরু হয় মার্চের বসন্তে। কিন্তু এটা বলা মুশকিল যে, সাইরাস দ্য গ্রেট কতটা কাছ থেকে জরাথ্রুস্টার নীতিকে অনুসরণ করতেন। আরিয়ান , যিনি মূলত ইরানী বংশোদ্ভূত ।
৭ বছরের একটি শিশুর দীক্ষা গ্রহণ অনুষ্ঠান
১৯৭৯ সালে সালে আয়াতুল্লাহ খোমেনী যখন ক্ষমতা দখল করেছিল তখন তিনি অস্ট্রিয়াতে একটি বোর্ডিং স্কুলে পড়াশোনা করতেন। আরিয়ান সে সময় নি:স্ব ছিল তাই সে প্রথমে একজন ট্রাক ড্রাইভার হিসেবে জীবন শুরু করলো । এরপর সে আবার লস এন্জেলসে পিজা ডেলিভারীর কাজ নিল।
একজন জরোয়াস্ট্রিয়ান যাজক ধর্মীয় আচার পালন করছেন
ইন্ডিয়া-পাকিস্তান ভাগের পর থেকে নর্থ আমেরিকায় পার্সিয়ান জনসংখ্যা বাড়তে থাকে । পাশাপাশি, ইরান-ইরাক যুদ্ধের কারনেও ১৯৭০ ও ৮০ সালের দিকে অনেক পার্সিয়ানরা দেশ ত্যাগ করে। প্রফেসর অব সেন্ট্রাল ইউরেশিয়ান স্টাডিস চোকসি বলেন, এই সম্প্রদায়টি এখন একটি স্তিমিত সম্প্রদায় যা বাড়ছেওনা, আবার কমছেওনা। এখন এখানে আন্ত: বিয়ে খুব চলছে। চোকসি আরো বলেন, “সম্প্রদায়টি ছোট হলেও এখন সম্ভাবনা চোখে পড়ছে।”
দি ফেডারেশন অব জরোয়াস্ট্রিয়ান এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা(FEZANA) ১৯৮৭ সালে আমেরিকা এবং কানাডার প্রায় ২ ডজন জরোয়াস্ট্রিয়ান গ্রুপের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে আরিয়ান ক্যালিফোর্নিয়া এবং অন্যান্য স্থানেও এখন একটি গুরুতত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তিনি একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে ধর্মান্তরের চেষ্টা চালাচ্ছেন।এই গ্রুপটি জরোয়াস্ট্রিয়ানদের মধ্যে অন্যতম যা অনলাইনে বেশ সক্রিয় থাকে। এর সাথে আছে নরয়েজিয়ান ভিত্তিক ‘গ্রেট রিটার্ণ’ যা সারাবিশ্বে জরোয়াস্ট্রিয়ানদের উদ্বুদ্ধ করে। আরজান সাম ওয়াদিয়া, নিউইয়র্ক ভিত্তিক একজন আর্কিটেক্ট এবং FEZANA র বর্তমান প্রেসিডেন্ট বলেন, জরোয়াস্ট্রিয়ান যুব সম্প্রদায় সাধারনত হোয়াটসআপ এবং ইন্সটাগ্রামে মিলিত হতে পছন্ত করে। তিনি রিটার্ন টু রুটস যেটি ভারতীয় বংশোদ্ভুত জরোয়াস্ট্রিয়ানদের বিদেশে মিলিত হতে সাহায্য করে।
Leave a Reply