প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার চাপে একটা ক্লান্তি নামে। আবার কখনই প্রতিষ্ঠানকে যেমন অস্বীকার করা যায় না তেমনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাকেও অস্বীকার করা যায়না।
তবে বার বারই একটি প্রশ্ন সামনে আসে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা যেন ক্লান্তি এনে না দেয়। মস্তিষ্কের কোষে যেন কোনরূপ টেনশন সৃষ্টির রাসায়নিক বিক্রিয়া তৈরি না করে। শিশু থেকে তরুণ বয়স অবধি যদি এই ক্লান্তি ও টেনশন নিয়ে একটি মানব শিশু বেড়ে ওঠে- নিঃসন্দেহে কোথাও না কোথাও তার বিকাশ থমকে যায়। আর একটা মানব শিশুর পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশই মূলত তার জন্য মূল শিক্ষা।
তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে এই মানসিক বিকাশের পথে অনেক বাধা। যার প্রথম বাধা অর্থনীতি, দ্বিতীয় বাধা- সামাজিক কাঠামো, তৃতীয় বাধা চিরাচরিত মানসিকতা। এই তিনি বাধার মধ্যে অর্থনৈতিক বাধা হয়তো দ্রুত কাটানো যায় কিন্তু বাকি দুটি কাটিয়ে ওঠা অনেক দীর্ঘ সময়ের বিষয়। কারণ, বাকি দুটোর শেকড় অনেক গভীরে। এই বাকি দুটোর শেকড় ওপড়ানো না অবধি কোনক্রমেই তৃতীয় বিশ্বের মানব শিশুর পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ সম্ভব নয়। আর বিকশিত মানুষ ছাড়া তো কখনই শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না।
তৃতীয় বিশ্ব মানেই জনভার ক্লিষ্ট কিছু দেশ। তাই এখানে শিক্ষা নিয়ে চিন্তা করতে গেলেই প্রথমেই সামনে আসে পেটের ক্ষুধা নিবারনের উপায় বের করার জন্যে একটা শিক্ষা। স্বাভাবিকই সামনে আসে পেটের ক্ষুধা নিবারনের শিক্ষা আর মানসিক বিকাশকে আলাদা করে শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এ আবার এক ভয়ংকর পথ । এখানে স্বাভাবিকই সামনে আসে সমাজ ভাগ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি।
তবে একটা বিষয় অবশ্য এর পাশাপাশি সামনে আসে, সমাজকে কখনই মালির তৈরি বাগানে পরিণত করা যায় না। সমাজ সব সময়ই একটি প্রাকৃতিক বন। তাই সমাজের বনে ফুল ফোটাতে হলে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের পড়ার ভারে যাতে ক্লান্ত না হয়, মস্তিকের কোষ উত্তপ্ত না হয়ে ওঠে, বরং মানব শিশুটি যেন সুযোগ পায় বেশি কিছু জানার আনন্দের জগতে প্রবেশ করার- তৃতীয় বিশ্বে এমন করেই হয়তো পথ চলা যেতে পারে।
Leave a Reply