০৪:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-১৪১)

  • Sarakhon Report
  • ১১:০০:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪
  • 15

শ্রী নিখিলনাথ রায়

লুৎফ উয়েগার পূর্ব্ব পার্শ্বে, মির্জা মেহেদীর দক্ষিণে আর একটি সমাধি আছে, সাধারণ লোকে তাহাকে মির্জা মেহেদীর বেগমের সমাধি বলিয়া থাকে; কেহ কেহ তাহাকে সিরাজের আর কোন বেগমের সমাধিও বলে। বালক মির্জা মেহেদী বিবাহিত হইয়াছিলেন কি না, তাহার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না; সুতরাং উক্ত সমাধিটি সিরাজের কোন বেগমের সমাধি হইলেও হইতে পারে। সম্ভবতঃ উহা ওমদাৎ উন্নেসার সমাধি হইবে।
আলিবদীর দক্ষিণে যে সমাধিটি রহিয়াছে, সেটি তাঁহার মহীয়সী বেগমের সমাধি বলিয়া কথিত হয়। ঢাকার নির্ব্বাসন হইতে পলায়নের পর, আর তাঁহার কোন বিবরণ অবগত হওয়া যায় না। সম্ভবতঃ তিনি তথা হইতে মুর্শিদাবাদে পুনরাগমন করিয়াছিলেন। পরে অন্তিমসনর উপস্থিত হইলে, স্বামীর পদতলে আশ্রয় গ্রহণ করেন। যিনি আলিবর্দীর জীবনের একমাত্র সঙ্গিনী ছিলেন, অনন্তজীবনে তিনিই সহচরীরূপে বিরাজ করিতেছেন।
আলিবন্দীর সমাধির পশ্চিম দিকে আরও দুইটি সমাধি আছে। সাধারণলোকে ঐ দুইটিকে আলিবদ্দীর কন্যাদ্বয়ের সমাধি বলিয়া • থাকে। আমরা জানি যে, তাঁহার দুই কন্যা ঘসেটা ও আমিনা, মীরণের আদেশে নদীগর্ভে প্রাণ বিসর্জন দেন; সুতরাং তাঁহাদের সমাধি হওয়ার কোনই সম্ভাবনা নাই। তাঁহার মধ্যমা কন্যা ময়মানা পূর্ণিয়ার নবাব সৈয়দ আহম্মদের পত্নী ও সকতজঙ্গের মাতা ছিলেন। তিনি পূর্ণিয়াতেই বাস করিতেন। মীরজাফর পূর্ণিয়া অধিকার করিলে, তিনি মুর্শিদাবাদে আসিয়া বাস করিয়াছিলেন কি না, জানা যায় না। ফলতঃ উক্ত সমাধি দুইটি আলিবর্দ্দদী খাঁর কন্যাদ্বয়ের না হইলেও, তাঁহার পারিবারস্থ অন্য কাহারও হইতে পারে।
সমাধিগৃহের পশ্চিমে, পশ্চিম চত্বরের প্রান্ত ভাগে, একটি মসজেদ বিরাজ করিতেছে। অদ্যাপি তথায় উপাসনাদি হইয়া থাকে। মস- জেদের সম্মুখে একটি প্রকাণ্ড চৌবাচ্চা রহিয়াছে। এই সমাধি- ভবনে পূর্ব্বে কারী বা কোরাণাধ্যায়ীদিগের বাসস্থান ছিল; অনেক দিন হইল, সে সমস্ত দেরিতে জমিদার করা হইয়াছে। অভাপি তৎসমুদ দিন ভিত্তিভূমির চিহ্ন দেখিতে পাওয়া যায়। এই সমাধিভবনের দক্ষিণে একের আয়, বাদাম প্রভৃতি বৃক্ষের বাগান আছে। তথায় একটি প্রকাণ্ড ইন্দাসী, একটি শুষ্ক পুষ্করিণী ও তাহার বাঁধাঘাটের ভগ্নাবশেষ দৃষ্ট হয়।

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-১৪১)

১১:০০:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪

শ্রী নিখিলনাথ রায়

লুৎফ উয়েগার পূর্ব্ব পার্শ্বে, মির্জা মেহেদীর দক্ষিণে আর একটি সমাধি আছে, সাধারণ লোকে তাহাকে মির্জা মেহেদীর বেগমের সমাধি বলিয়া থাকে; কেহ কেহ তাহাকে সিরাজের আর কোন বেগমের সমাধিও বলে। বালক মির্জা মেহেদী বিবাহিত হইয়াছিলেন কি না, তাহার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না; সুতরাং উক্ত সমাধিটি সিরাজের কোন বেগমের সমাধি হইলেও হইতে পারে। সম্ভবতঃ উহা ওমদাৎ উন্নেসার সমাধি হইবে।
আলিবদীর দক্ষিণে যে সমাধিটি রহিয়াছে, সেটি তাঁহার মহীয়সী বেগমের সমাধি বলিয়া কথিত হয়। ঢাকার নির্ব্বাসন হইতে পলায়নের পর, আর তাঁহার কোন বিবরণ অবগত হওয়া যায় না। সম্ভবতঃ তিনি তথা হইতে মুর্শিদাবাদে পুনরাগমন করিয়াছিলেন। পরে অন্তিমসনর উপস্থিত হইলে, স্বামীর পদতলে আশ্রয় গ্রহণ করেন। যিনি আলিবর্দীর জীবনের একমাত্র সঙ্গিনী ছিলেন, অনন্তজীবনে তিনিই সহচরীরূপে বিরাজ করিতেছেন।
আলিবন্দীর সমাধির পশ্চিম দিকে আরও দুইটি সমাধি আছে। সাধারণলোকে ঐ দুইটিকে আলিবদ্দীর কন্যাদ্বয়ের সমাধি বলিয়া • থাকে। আমরা জানি যে, তাঁহার দুই কন্যা ঘসেটা ও আমিনা, মীরণের আদেশে নদীগর্ভে প্রাণ বিসর্জন দেন; সুতরাং তাঁহাদের সমাধি হওয়ার কোনই সম্ভাবনা নাই। তাঁহার মধ্যমা কন্যা ময়মানা পূর্ণিয়ার নবাব সৈয়দ আহম্মদের পত্নী ও সকতজঙ্গের মাতা ছিলেন। তিনি পূর্ণিয়াতেই বাস করিতেন। মীরজাফর পূর্ণিয়া অধিকার করিলে, তিনি মুর্শিদাবাদে আসিয়া বাস করিয়াছিলেন কি না, জানা যায় না। ফলতঃ উক্ত সমাধি দুইটি আলিবর্দ্দদী খাঁর কন্যাদ্বয়ের না হইলেও, তাঁহার পারিবারস্থ অন্য কাহারও হইতে পারে।
সমাধিগৃহের পশ্চিমে, পশ্চিম চত্বরের প্রান্ত ভাগে, একটি মসজেদ বিরাজ করিতেছে। অদ্যাপি তথায় উপাসনাদি হইয়া থাকে। মস- জেদের সম্মুখে একটি প্রকাণ্ড চৌবাচ্চা রহিয়াছে। এই সমাধি- ভবনে পূর্ব্বে কারী বা কোরাণাধ্যায়ীদিগের বাসস্থান ছিল; অনেক দিন হইল, সে সমস্ত দেরিতে জমিদার করা হইয়াছে। অভাপি তৎসমুদ দিন ভিত্তিভূমির চিহ্ন দেখিতে পাওয়া যায়। এই সমাধিভবনের দক্ষিণে একের আয়, বাদাম প্রভৃতি বৃক্ষের বাগান আছে। তথায় একটি প্রকাণ্ড ইন্দাসী, একটি শুষ্ক পুষ্করিণী ও তাহার বাঁধাঘাটের ভগ্নাবশেষ দৃষ্ট হয়।