১০:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩৩) কলম্বিয়ার সংবিধান পরিবর্তনের উদ্যোগ সাকিব ও মাশরাফি ছাড়া পারফরম্যান্স, শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজের পর পথ কি? রাষ্ট্রে কখন ও কেন সংখ্যালঘুরা সংগঠিত ধর্ষণের শিকার হয় গ্রামীণ গর্ভবতী নারীদের আয়রন ঘাটতি: অর্ধেকের বেশি রক্তস্বল্পতায় আরব আমিরাত, মরুভূমি শহরে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মুরাদনগরে সংখ্যালঘু নারী ধর্ষণ: ‘এরপর সরকার ক্ষমতায় থাকার যোগ্য নয়’—জাপা চেয়ারম্যান ইরান ও পাকিস্তান থেকে আফগানদের গণনির্বাসনে উদ্বেগ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্যে নতুন নিষেধাজ্ঞা ভারতের, প্রভাব কেমন হবে ইরানে চীনা বিনিয়োগ অনিশ্চিত, তবু মধ্যপ্রাচ্যের আহ্বান অটুট

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-৪)

  • Sarakhon Report
  • ০৭:২৩:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 19

ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রধান প্রধান শহর

মায়া সভ্যতার শহরগুলি হল মেক্সিকোর ইউকাতান, কামপেচে, কিনতানার, তাবাসকো, চিয়াপাস। এছাড়া বেলিজ, গুয়াতামালা এবং হন্ডুরাশ ও এল সালভাদোরের পশ্চিম অংশে অনেক মানুষ বাস করেন। সাম্প্রতিক হিসেব অনুযারী মায়া জনজাতির লোকসংখ্যা কমবেশি ৬০ লক্ষ।

ইউকাতান-আধুনিক মায়ার একটা বিরাট সংখ্যক মানুষের বসবাস হল মেক্সিকোর ইউকাতান শহরে। এবং এখানকার মানুষ এখন নিজেদের কেবল মায়া সূত্রের বলেই মনে করেন। এবং কখনো নিজেদের আদিবাসী গোষ্ঠীর বলে মনে করেন না।

এবং এদের কথা বলার ভাষাকে নৃতাত্ত্বিকগণ নাম দিয়েছেন ইউকাতেক মায়া। এইসঙ্গে কিছুটা অংশের মধ্যে স্প্যানিশ ভাষার ব্যবহার আছে। এবং এই স্প্যানিশ ভাষাভাষী মায়াদের অংশ প্রধানত ইউকাতানের পশ্চিমদিকে বাস করেন। এবং অন্যদিক থেকে মায়া জনজাতির মানুষ নিজেদের অঞ্চলে মেসতিজো হিসেবেই ভাবতে পছন্দ করে।

ঐতিহাসিক দিক থেকে বিচার করে বলা যায় উপদ্বীপের পূর্বদিকের জনজীবন সামগ্রিকভাবে পশ্চিমের তুলনায় কম মাত্রায় হিসপানিক সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল।চিয়াপাস-এছাড়া মেক্সিকোর অন্য একটি বড় অংশ হল চিয়াপাস। এই অংশটি মেক্সিকোবিপ্লবের আওতার বাইরে ছিল। এবং এই অংশের মায়া জনজাতির কিছু মানুষ সাপাটস্তা জাতীয় মুক্তি আন্দোলনকে সাহায্য করেছিল।

চিয়াপাস অঞ্চলের মায়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে ছিল তোতজিল (Tzotzil) এবং তেলতাল (Tzeltal)। এদের বসবাস ছিল তোজোলাবালেস (Tojolabales) অঞ্চলে। এই অঞ্চলটি ছিল লাস মার্সাবিতাস এবং চোল-এর মত নীচু জমির কাছে। তাবাসকো হল মেক্সিকোর আরেকটি বড় অঞ্চল। এই অঞ্চলে বসবাস করত মায়াদের আরেকটি গোষ্ঠী যার নাম চোনতাল মায়া (Chontal Maya) |

গুয়াতেমালা-লাতিন আমেরিকার গুয়াতেমালা হল একটি খুব ছোট অথচ প্রাচীন দেশ। মায়া জনজাতিদের সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দিতে গেলে এই অংশের কথা বলতেই হয়। গুয়াতেমালাতেই মায়া জনজাতির সবচেয়ে বেশি এবং মূল মানুষ বাস করেন।

এই গুয়াতেমালায় স্প্যানিশ উপনিবেশ গড়ে ওঠবার ফলে এখানকার মায়া জনজাতির মধ্যে হিসপ্যানিক সংস্কৃতি, জীবনধারার প্রভাব বেশি লক্ষ্য করা যায়। এবং এখানকার মানুষজনের সঙ্গে প্রাক-কলম্বো এবং আদিবাসীদের মিশ্রণ ঘটেছিল। এবং এর প্রভাব এখনো স্পষ্ট লক্ষ্য করা যায়। এখনো তারা ঐ প্রাচীন সাজপোশাক ব্যবহার করে।

বিশেষ করে মহিলারা পুরুষদের তুলনায় তাদের পুরনো ঘরানা অনুযায়ী পোশাক পরতে বেশি পছন্দ করে। এর কারণ হল পুরুষরা তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় হিসপ্যানিক সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়েছিল। গুয়াতেমালার মায়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে কিছু অন্যান্য গোষ্ঠী আছে। এরা হল কিচে (Quiche), মাম (Mam), পোকোমাম (Pocomam), কাকচিকেল (Kaqchikel), ইক্সিল (Ixil), কেকচি (Kekchi), তুতুজিল (Tz’utujil), জাকালতেক (Jacaltec)।

এছাড়া মায়া অঞ্চলের অন্য একটি ছোট শহর হল ইয়াক্সচিলান (Yaxchilan)। এই ছোট শহরটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখবার মত। উসামাচিনতা নদীতে এক ঘন্টা নৌকা ভ্রমণ সেরেই আমরা এই শহরে পৌঁছতে পারি।

শহরটিতে বাড়িগুলির মধ্যে এখনো মায়া-সভ্যতার পুরান স্থাপত্যর ছোঁয়া অনুভব করা যায়। বাড়িগুলির অনেকটা কাটাপাথর দিয়ে তৈরি। তথ্য থেকে জানা যায় মায়া-সভ্যতার স্বর্ণযুগ ২০০- ৯০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে প্রায় ৮৬টি সুরম্য বাড়ি তৈরি করা হয়েছিল।

(চলবে)

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-৩)

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-৩)

হিউএনচাঙ (পর্ব-১৩৩)

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-৪)

০৭:২৩:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ড. সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রধান প্রধান শহর

মায়া সভ্যতার শহরগুলি হল মেক্সিকোর ইউকাতান, কামপেচে, কিনতানার, তাবাসকো, চিয়াপাস। এছাড়া বেলিজ, গুয়াতামালা এবং হন্ডুরাশ ও এল সালভাদোরের পশ্চিম অংশে অনেক মানুষ বাস করেন। সাম্প্রতিক হিসেব অনুযারী মায়া জনজাতির লোকসংখ্যা কমবেশি ৬০ লক্ষ।

ইউকাতান-আধুনিক মায়ার একটা বিরাট সংখ্যক মানুষের বসবাস হল মেক্সিকোর ইউকাতান শহরে। এবং এখানকার মানুষ এখন নিজেদের কেবল মায়া সূত্রের বলেই মনে করেন। এবং কখনো নিজেদের আদিবাসী গোষ্ঠীর বলে মনে করেন না।

এবং এদের কথা বলার ভাষাকে নৃতাত্ত্বিকগণ নাম দিয়েছেন ইউকাতেক মায়া। এইসঙ্গে কিছুটা অংশের মধ্যে স্প্যানিশ ভাষার ব্যবহার আছে। এবং এই স্প্যানিশ ভাষাভাষী মায়াদের অংশ প্রধানত ইউকাতানের পশ্চিমদিকে বাস করেন। এবং অন্যদিক থেকে মায়া জনজাতির মানুষ নিজেদের অঞ্চলে মেসতিজো হিসেবেই ভাবতে পছন্দ করে।

ঐতিহাসিক দিক থেকে বিচার করে বলা যায় উপদ্বীপের পূর্বদিকের জনজীবন সামগ্রিকভাবে পশ্চিমের তুলনায় কম মাত্রায় হিসপানিক সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল।চিয়াপাস-এছাড়া মেক্সিকোর অন্য একটি বড় অংশ হল চিয়াপাস। এই অংশটি মেক্সিকোবিপ্লবের আওতার বাইরে ছিল। এবং এই অংশের মায়া জনজাতির কিছু মানুষ সাপাটস্তা জাতীয় মুক্তি আন্দোলনকে সাহায্য করেছিল।

চিয়াপাস অঞ্চলের মায়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে ছিল তোতজিল (Tzotzil) এবং তেলতাল (Tzeltal)। এদের বসবাস ছিল তোজোলাবালেস (Tojolabales) অঞ্চলে। এই অঞ্চলটি ছিল লাস মার্সাবিতাস এবং চোল-এর মত নীচু জমির কাছে। তাবাসকো হল মেক্সিকোর আরেকটি বড় অঞ্চল। এই অঞ্চলে বসবাস করত মায়াদের আরেকটি গোষ্ঠী যার নাম চোনতাল মায়া (Chontal Maya) |

গুয়াতেমালা-লাতিন আমেরিকার গুয়াতেমালা হল একটি খুব ছোট অথচ প্রাচীন দেশ। মায়া জনজাতিদের সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দিতে গেলে এই অংশের কথা বলতেই হয়। গুয়াতেমালাতেই মায়া জনজাতির সবচেয়ে বেশি এবং মূল মানুষ বাস করেন।

এই গুয়াতেমালায় স্প্যানিশ উপনিবেশ গড়ে ওঠবার ফলে এখানকার মায়া জনজাতির মধ্যে হিসপ্যানিক সংস্কৃতি, জীবনধারার প্রভাব বেশি লক্ষ্য করা যায়। এবং এখানকার মানুষজনের সঙ্গে প্রাক-কলম্বো এবং আদিবাসীদের মিশ্রণ ঘটেছিল। এবং এর প্রভাব এখনো স্পষ্ট লক্ষ্য করা যায়। এখনো তারা ঐ প্রাচীন সাজপোশাক ব্যবহার করে।

বিশেষ করে মহিলারা পুরুষদের তুলনায় তাদের পুরনো ঘরানা অনুযায়ী পোশাক পরতে বেশি পছন্দ করে। এর কারণ হল পুরুষরা তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় হিসপ্যানিক সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়েছিল। গুয়াতেমালার মায়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে কিছু অন্যান্য গোষ্ঠী আছে। এরা হল কিচে (Quiche), মাম (Mam), পোকোমাম (Pocomam), কাকচিকেল (Kaqchikel), ইক্সিল (Ixil), কেকচি (Kekchi), তুতুজিল (Tz’utujil), জাকালতেক (Jacaltec)।

এছাড়া মায়া অঞ্চলের অন্য একটি ছোট শহর হল ইয়াক্সচিলান (Yaxchilan)। এই ছোট শহরটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখবার মত। উসামাচিনতা নদীতে এক ঘন্টা নৌকা ভ্রমণ সেরেই আমরা এই শহরে পৌঁছতে পারি।

শহরটিতে বাড়িগুলির মধ্যে এখনো মায়া-সভ্যতার পুরান স্থাপত্যর ছোঁয়া অনুভব করা যায়। বাড়িগুলির অনেকটা কাটাপাথর দিয়ে তৈরি। তথ্য থেকে জানা যায় মায়া-সভ্যতার স্বর্ণযুগ ২০০- ৯০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে প্রায় ৮৬টি সুরম্য বাড়ি তৈরি করা হয়েছিল।

(চলবে)

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-৩)

মায়া সভ্যতার ইতিহাস ( পর্ব-৩)