শ্রী নিখিলনাথ রায়
মহারাজ নন্দকুমার প্রথমে এক বিষম ভ্রমে পতিত হন। তজ্জন্যই তিনি বিষময় ফলভোগ করিয়াছিলেন। তিনি তাৎকালিক ইংরেজ- বণিকে চিনিতে না পারিয়া তাঁহাদের সাহায্যকল্পে যে বিপথে চালিত হইয়াছিলেন, সেই মহাভ্রমের জন্য তিনি আত্মজীবন বলি দিয়া প্রায়শ্চিত্ত করিতে বাধ্য হন। তিনিই প্রথমে সিরাজের বিরুদ্ধে ইংরেজদিগকে সাহায্য করিতে প্রতিশ্রত হইয়াছিলেন।
পরে সে ভ্রমের সংশোধনার্থ ইংরেজ দিগের কবল হইতে মীরজাফর ও তদ্বংশীয়দিগের উদ্ধারের চেষ্টা করিয়াছিলেন। যে ইংরেজ বণিকের জন্য তাঁহার চরিত্রে কলঙ্কপাত হইয়াছে, ‘সেই ইংরেজ-বণিক অবশেষে তাঁহাকে কৌশলক্রমে ফাঁসীকাঠে লম্বমান করাইয়া আপনাদিগের কৃতজ্ঞতার পরিচয় দিয়াছিল!
হিন্দুর P দেশে, হিন্দুর সর্ব্বশ্রেষ্ঠ বর্ণ ব্রাহ্মণের গলদেশে রজ্জু বদ্ধ করাইয়া, হিন্দুর মনে প্রবল অশান্তির সঞ্চার করিয়াছিল! ব্রাহ্মণের দেশে ব্রাহ্মণের- দেহপাতে যে রাজ্যের প্রতিষ্ঠা, তাহা কতদিন স্থির থাকিতে পারে? তাই সেই বণিক্রাজত্বে ভারতবাসীর অশেষবিধ কষ্ট দেখিয়া, শান্তিময়ী রাজরাজেশ্বরী ভিক্টোরিয়া আমাদিগকে আশ্রয়চ্ছায়া দান করিয়াছিলেন।
আমরা তাঁহার শাস্তিচ্ছায়ায় জাতিনির্ব্বিশেষে প্রতিপালিত হইয়া শত শত। ৭২বৎসরের পদাঘাতে জর্জরিত দেহমনকে সুস্থ করিতে সমর্থ হইয়াছি; এবং বর্তমান রাজরাজেশ্বরের অনুগ্রহলাভে আপনাদিগকে ধন্য মনে করিতেছি।