সারাক্ষণ ডেস্ক
হাতির বন্দি জীবনকে ‘চিরন্তন ট্রেবলিঙ্কা’ বলে উল্লেখ করেছে কেরালা হাইকোর্ট। এটি পোল্যান্ডে নাৎসি জার্মানির ইহুদি নিধনের জন্য তৈরি করা একটি শিবিরের নাম। হাইকোর্ট কেরালায় উৎসব উপলক্ষে হাতি প্রদর্শনের বিষয়ে নতুন নির্দেশনা প্রদান করেছে।
হাইকোর্ট বেঞ্চ, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এ কে জয়শংকরন নম্ভিয়ার এবং গোপীনাথ পি, তাদের রায়ে ট্রেবলিঙ্কার উদাহরণ তুলে ধরেছেন। এটি ছিল নাৎসি জার্মানির দ্বারা পরিচালিত দ্বিতীয় বৃহত্তম মৃত্যুশিবির।
নির্দেশনাগুলো
কেরালায় হাতি প্রদর্শন বা শোভাযাত্রা পরিচালনার জন্য হাইকোর্ট বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করেছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রদর্শনে কতগুলি হাতি অংশগ্রহণ করতে পারবে তা নির্ধারণ করা হবে স্থানীয় স্থান পর্যাপ্ত থাকার ওপর। মন্দির বা যে কোনো স্থান যেখানে প্রদর্শন করা হবে, সেখানে নির্ধারিত দূরত্ব বজায় রাখা আবশ্যক।
নির্দেশিকা অনুযায়ী, এখন থেকে শুধুমাত্র সরকারি পশুচিকিৎসক দ্বারা ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদান করা যাবে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে কোনো হাতির শোভাযাত্রা জনসাধারণের সড়কে অনুমোদিত হবে না। জেলা কমিটিকে নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে যে, কোনো হাতিকে একদিনে ৩০ কিমির বেশি হাঁটানো যাবে না।
৩০ কিমি-এর বেশি দূরত্বের জন্য অনুমোদিত যানবাহনের মাধ্যমে পরিবহন করতে হবে। একটি হাতিকে দিনে কোনো পরিবহন মাধ্যমেই ১২৫ কিমি-এর বেশি দূরত্বে পরিবহন করা যাবে না এবং ৬ ঘণ্টার বেশি কোনো যানবাহনে পরিবহন করা যাবে না। পরিবহনের সময় গাড়ির গতি ঘণ্টায় ২৫ কিমির বেশি হওয়া যাবে না।
পরিবহন ও প্রদর্শনের নিয়ম
পরিবহন কাজে ব্যবহৃত সব যানবাহনে স্পিড গভর্নর স্থাপন করতে হবে এবং গতি নির্ধারিত সীমার মধ্যে রাখতে হবে। রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে হাতি পরিবহন নিষিদ্ধ।
হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে, একটি হাতি কোনো প্রদর্শনীতে একটানা ৩ ঘণ্টার বেশি অংশ নিতে পারবে না। হাতি প্রদর্শনের সময় দু’টি হাতির মধ্যে কমপক্ষে ৩ মিটার দূরত্ব এবং হাতি থেকে অগ্নি বা অন্য কোনো আগুনের উৎসের দূরত্ব কমপক্ষে ৫ মিটার থাকতে হবে।
প্রতিযোগিতা নিষিদ্ধ
হাইকোর্ট হাতি নিয়ে যেকোনো ধরণের প্রতিযোগিতা নিষিদ্ধ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে স্যালুট করা, মাথা উঁচু করা, বা ফুল ছড়ানো।
এই নির্দেশিকাগুলো হাতির কল্যাণ নিশ্চিত করতে এবং তাদের প্রতি নিষ্ঠুরতা রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদী আদালত।