০২:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

কলকাতা বইমেলায় থিম দেশ জার্মানি, আসছে না বাংলাদেশ

  • Sarakhon Report
  • ০৪:২৯:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • 15

কলকাতা বইমেলায় এই প্রথমবার থিম দেশ হলো জার্মানি।

গৌতম হোড়,দিল্লি
কলকাতা বইমেলার ৪৮ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার থিম দেশ হলো জার্মানি। তবে বাংলাদেশ এবারের বইমেলায় নেই।

জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. ফিলিপ আকারমানের মতে, বইমেলার দুনিয়ায় কলকাতা বইমেলা হলো মহাকুম্ভ, আর ফ্রাঙ্কফুর্ট হলো মক্কা।

ঘটনা হলো, ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই ৪৮ বছর আগে শুরু হয়েছিল কলকাতা বইমেলা। এতদিন পর কলকাতা বইমেলাতে থিম কান্ট্রি জার্মানি। এতদিন পর বই ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে দুই দেশের মিলনের বৃত্ত পূর্ণ হলো।

দিল্লিতে বৃহস্পতিবার কলকাতা বইমেলা নিয়ে জার্মানির রাষ্ট্রদূত, গ্য়োটে ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ এশিয়া ও কলকাতার ডিরেক্টরকে পাশে নিয়ে পাবলিশার্স ও বুকসেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ”১৯৭৪ সালে ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে কলকাতা বইমেলার চিন্তাভাবনা শুরু হয়, ১৯৭৫ সালে গিল্ড তৈরি হয়। ১৯৭৭ সাল থেকে কলকাতা বইমেলা শুরু হয়। আমরা খুশি এবার জার্মানিকে থিম দেশ হিসাবে পেয়ে।”

সেই ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় ভারত ইতিমধ্য়ে দুইবার থিম দেশ হয়েছে, কিন্তু পাঠক-দর্শক আসার নিরিখে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইমেলায় জার্মানি এইবারই প্রথম থিম দেশ হলো। গত বইমেলায় এসেছিলেন ২৭ লাখ মানুষ। আকারমান জানিয়েছেন, ”কেন এত দেরি হলো তা বলতে পারব না। তবে আমরা এবার থিম দেশ হয়েছি এবং পরিকল্পনা করে এগিয়েছি। অনেকগুলি বিষয় আমরা তুলে ধরতে চাই।”

সাহিত্যের ক্ষেত্রেও জার্মানি ও ভারতের সম্পর্ক বহুদিনের, বললেন ভারতে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত ফিলিপ আকারমান।

তার ব্যাখ্যা, ”ভারতের সঙ্গে জার্মানির বন্ধুত্বের সম্পর্ক এখন খুবই দৃঢ়। এখন আমরা সাহিত্যের ক্ষেত্রেও সম্পর্ক আরো বাড়াতে চাইছি। কলকাতা বইমেলার সঙ্গে যুক্ত হওয়াটা তাই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতে ছয়টি গ্যোটে ইনস্টিটিউট আছে এবং তিনটি গ্য়োটে সেন্টার আছে। বিশ্বের আর কোনো দেশে এতগুলি ইনস্টিটিউট ও সেন্টার নেই।”

জার্মানির রাষ্ট্রদূত এ কথাটাও স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ”আসন্ন নির্বাচনে সরকারের যদি বদল ঘটেও ভারত ও জার্মানির বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। ফান্ডিং নিয়েও কোনো সমস্যা হবে না।”

কী থাকবে বইমেলায় জার্মানির প্যাভিলিয়নে?

গ্যোয়েটে ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর মারলা স্টুকেনবার্গ ও অ্যাসট্রিড ভেগে বলেছেন, ”জার্মান ভাষার সঙ্গে বাংলাভাষার সম্পর্ক অনেকদিনের। রবীন্দ্রনাথের রচনা বহুদিন ধরে জার্মান ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। তবে এবার জার্মানির প্যাভিলিয়নে আরো অনেক বিষয় থাকবে। যেমন, চাকরি ও পড়াশুনোর জন্য জার্মানিতে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হবে। যে সব পড়ুয়ারা জার্মানিতে গেছেন, তারা তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানাবেন।”

কিছুদিন আগে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস জানিয়েছিলেন, জার্মানিতে দক্ষ কর্মী দরকার। এই বইমেলায় সেই বিষয়ে ভালোভাবে জানার সুযোগ পাবেন কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ।

এছাড়া বুক রিডিং সেশন থাকবে, জার্মানির তরুণ শিল্পীরা বইমেলা চলার সময় ছবি আঁকবেন, নতুন বই লঞ্চ করা হবে, জার্মানির সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হবে, কনসার্ট হবে। সবমিলিয়ে জার্মানির শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং সে দেশের শিক্ষা ও চাকরির সুযোগের বিষয়ে পুরোদস্তুর জানার সুযোগ থাকছে কলকাতা বইমেলায়।

বই লঞ্চ, বুক রিডিং, আলোচনা-সহ প্রচুর আকর্ষণ থাকবে জার্মানির প্যাভিলিয়নে।

বইমেলায় জার্মানির প্যাভিলিয়নে ডিডাব্লিউও থাকবে। বিশেষ করে ডিডাব্লিউ বাংলার কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হবে সেখানে। ডিডাব্লিউর ডিরেক্টর জেনারেল পিটার লিম্বুর্গ বইমেলায় যাবেন বলেও জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ থাকছে না

গিল্ডের সভাপতি সুধাংশু দে ও সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইরান, রাশিয়া. স্পেন. পেরু. আর্জেন্টিনা, গুয়াতেমালা. কোস্টা রিকার মতো দেশগুলি কলকাতা বইমেলায় অংশ নেবে।

তবে প্রতিবার বইমেলায় বাংলাদেশের প্যাভিলিয়ন থাকলেও এবার তা থাকছে না। ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ”প্রতিবার দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রকাশকদের যোগাযোগের বিষয়টি জানানো হয়। এবার বেসরকারিভাবে বাংলাদেশের একটি প্রকাশনা সংস্থা বইমেলায় অংশ নিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের বলা হয়, প্রতিবারের মতো এবারও বইমেলায় যোগদানের বিষয়টি আসতে হবে সরকারি স্তর থেকে। সেটা আসেনি। তাই বইমেলায় বাংলাদেশের কোনো স্টল থাকছে না।”

ডিডাব্লিউ ডটকম

কলকাতা বইমেলায় থিম দেশ জার্মানি, আসছে না বাংলাদেশ

০৪:২৯:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫
গৌতম হোড়,দিল্লি
কলকাতা বইমেলার ৪৮ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার থিম দেশ হলো জার্মানি। তবে বাংলাদেশ এবারের বইমেলায় নেই।

জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. ফিলিপ আকারমানের মতে, বইমেলার দুনিয়ায় কলকাতা বইমেলা হলো মহাকুম্ভ, আর ফ্রাঙ্কফুর্ট হলো মক্কা।

ঘটনা হলো, ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই ৪৮ বছর আগে শুরু হয়েছিল কলকাতা বইমেলা। এতদিন পর কলকাতা বইমেলাতে থিম কান্ট্রি জার্মানি। এতদিন পর বই ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে দুই দেশের মিলনের বৃত্ত পূর্ণ হলো।

দিল্লিতে বৃহস্পতিবার কলকাতা বইমেলা নিয়ে জার্মানির রাষ্ট্রদূত, গ্য়োটে ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ এশিয়া ও কলকাতার ডিরেক্টরকে পাশে নিয়ে পাবলিশার্স ও বুকসেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ”১৯৭৪ সালে ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে কলকাতা বইমেলার চিন্তাভাবনা শুরু হয়, ১৯৭৫ সালে গিল্ড তৈরি হয়। ১৯৭৭ সাল থেকে কলকাতা বইমেলা শুরু হয়। আমরা খুশি এবার জার্মানিকে থিম দেশ হিসাবে পেয়ে।”

সেই ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় ভারত ইতিমধ্য়ে দুইবার থিম দেশ হয়েছে, কিন্তু পাঠক-দর্শক আসার নিরিখে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইমেলায় জার্মানি এইবারই প্রথম থিম দেশ হলো। গত বইমেলায় এসেছিলেন ২৭ লাখ মানুষ। আকারমান জানিয়েছেন, ”কেন এত দেরি হলো তা বলতে পারব না। তবে আমরা এবার থিম দেশ হয়েছি এবং পরিকল্পনা করে এগিয়েছি। অনেকগুলি বিষয় আমরা তুলে ধরতে চাই।”

সাহিত্যের ক্ষেত্রেও জার্মানি ও ভারতের সম্পর্ক বহুদিনের, বললেন ভারতে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত ফিলিপ আকারমান।

তার ব্যাখ্যা, ”ভারতের সঙ্গে জার্মানির বন্ধুত্বের সম্পর্ক এখন খুবই দৃঢ়। এখন আমরা সাহিত্যের ক্ষেত্রেও সম্পর্ক আরো বাড়াতে চাইছি। কলকাতা বইমেলার সঙ্গে যুক্ত হওয়াটা তাই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতে ছয়টি গ্যোটে ইনস্টিটিউট আছে এবং তিনটি গ্য়োটে সেন্টার আছে। বিশ্বের আর কোনো দেশে এতগুলি ইনস্টিটিউট ও সেন্টার নেই।”

জার্মানির রাষ্ট্রদূত এ কথাটাও স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ”আসন্ন নির্বাচনে সরকারের যদি বদল ঘটেও ভারত ও জার্মানির বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। ফান্ডিং নিয়েও কোনো সমস্যা হবে না।”

কী থাকবে বইমেলায় জার্মানির প্যাভিলিয়নে?

গ্যোয়েটে ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর মারলা স্টুকেনবার্গ ও অ্যাসট্রিড ভেগে বলেছেন, ”জার্মান ভাষার সঙ্গে বাংলাভাষার সম্পর্ক অনেকদিনের। রবীন্দ্রনাথের রচনা বহুদিন ধরে জার্মান ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। তবে এবার জার্মানির প্যাভিলিয়নে আরো অনেক বিষয় থাকবে। যেমন, চাকরি ও পড়াশুনোর জন্য জার্মানিতে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হবে। যে সব পড়ুয়ারা জার্মানিতে গেছেন, তারা তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানাবেন।”

কিছুদিন আগে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস জানিয়েছিলেন, জার্মানিতে দক্ষ কর্মী দরকার। এই বইমেলায় সেই বিষয়ে ভালোভাবে জানার সুযোগ পাবেন কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ।

এছাড়া বুক রিডিং সেশন থাকবে, জার্মানির তরুণ শিল্পীরা বইমেলা চলার সময় ছবি আঁকবেন, নতুন বই লঞ্চ করা হবে, জার্মানির সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হবে, কনসার্ট হবে। সবমিলিয়ে জার্মানির শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং সে দেশের শিক্ষা ও চাকরির সুযোগের বিষয়ে পুরোদস্তুর জানার সুযোগ থাকছে কলকাতা বইমেলায়।

বই লঞ্চ, বুক রিডিং, আলোচনা-সহ প্রচুর আকর্ষণ থাকবে জার্মানির প্যাভিলিয়নে।

বইমেলায় জার্মানির প্যাভিলিয়নে ডিডাব্লিউও থাকবে। বিশেষ করে ডিডাব্লিউ বাংলার কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হবে সেখানে। ডিডাব্লিউর ডিরেক্টর জেনারেল পিটার লিম্বুর্গ বইমেলায় যাবেন বলেও জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ থাকছে না

গিল্ডের সভাপতি সুধাংশু দে ও সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইরান, রাশিয়া. স্পেন. পেরু. আর্জেন্টিনা, গুয়াতেমালা. কোস্টা রিকার মতো দেশগুলি কলকাতা বইমেলায় অংশ নেবে।

তবে প্রতিবার বইমেলায় বাংলাদেশের প্যাভিলিয়ন থাকলেও এবার তা থাকছে না। ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ”প্রতিবার দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রকাশকদের যোগাযোগের বিষয়টি জানানো হয়। এবার বেসরকারিভাবে বাংলাদেশের একটি প্রকাশনা সংস্থা বইমেলায় অংশ নিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের বলা হয়, প্রতিবারের মতো এবারও বইমেলায় যোগদানের বিষয়টি আসতে হবে সরকারি স্তর থেকে। সেটা আসেনি। তাই বইমেলায় বাংলাদেশের কোনো স্টল থাকছে না।”

ডিডাব্লিউ ডটকম