০২:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

যত দিন যাচ্ছে ততই সংকটে পড়ছে দেশের বেসরকারি খাত

  • Sarakhon Report
  • ০২:৫৯:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 14

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • ঋণের উচ্চ খরচ এবং মুদ্রার বিনিময় হারের ওঠাপড়া দেশের মুদ্রাকে দুর্বল করে তুলছে
  • শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং অপ্রত্যাশিত শক্তি সরবরাহের কারণে সমস্যায় পড়ছে
  • সুদের হার ১০ শতাংশে বৃদ্ধি পেলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলোর জন্য ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে
  • ভবিষ্যতে বেসরকারী খাতের জন্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে
  • দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বিদেশী মুদ্রা রিজার্ভে ৭-৮ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি জরুরি

র্তমানে বেসরকারী খাত অনেকগুলি জটিল সমস্যার মুখোমুখি। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, বিনিয়োগে স্থবিরতা এবং শক্তি সরবরাহের অনিশ্চয়তার কারণে ব্যবসায়িক পরিবেশে ব্যাপক অসুবিধা দেখা দিচ্ছে। শিল্পক্ষেত্রের নেতারা মনে করছেন, এই সমস্যাগুলি ব্যবসার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যবৃদ্ধি

  • উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি: মার্চ ২০২৩ থেকে মুদ্রাস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে থাকায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও জনগণের জীবনে মূল্যবৃদ্ধি একটি বড় উদ্বেগের কারণ।
  • ঋণের ব্যয় ও মুদ্রার অবনমনের প্রভাব: ঋণের উচ্চ খরচ এবং মুদ্রার বিনিময় হারের ওঠাপড়া দেশের মুদ্রাকে দুর্বল করে তুলছে, ফলে উৎপাদন ও পরিচালন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

শক্তি সরবরাহের অসামঞ্জস্যতা

  • বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও শক্তি অসামঞ্জস্য: শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং অপ্রত্যাশিত শক্তি সরবরাহের কারণে সমস্যায় পড়ছে।
  • গ্যাসের দাম বৃদ্ধি: গ্যাসের দাম বাড়লেও সরবরাহে ধারাবাহিকতা না থাকায় ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই সমস্যার ফলে সামার মৌসুমে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

বিনিয়োগ ও ঋণ সংকট

  • বিনিয়োগের স্থবিরতা: কর্পোরেট বিনিয়োগ প্রায় ২৪ শতাংশে স্থবির হয়ে গেছে এবং সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ ছয় বছরের নিম্নমুখী পর্যায়ে পৌঁছেছে।
  • ঋণ প্রাপ্তির অসুবিধা: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি অনুযায়ী সুদের হার ১০ শতাংশে বৃদ্ধি পেলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলোর জন্য ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। ফলে বেসরকারী খাতের ঋণ বৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম হচ্ছে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ও প্রস্তাবনা

  • নীতি ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা: ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স ও ইন্ডাস্ট্রির এক নেতা বলেন,  ব্যবসায়িক আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধারের জন্য নীতির স্থিতিশীলতা ও কাঠামোগত সংস্কার অপরিহার্য। তেমনি প্রয়োজন প্রশাসনিক, রাজননৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা। বর্তমান অবস্থানের উত্তরণ ঘটিয়ে মানুষের সার্বিক অবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

  • বিদেশী মুদ্রা রিজার্ভ বৃদ্ধির আহ্বান:  সাবেক একজন ডেপুটি গর্ভনর ও অর্থনীতিবিদ মনে করেন, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বিদেশী মুদ্রা রিজার্ভে ৭-৮ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি জরুরি। তিনি সরকারকে বহুপাক্ষিক ঋণদাতাদের কাছ থেকে এই ডলার সংগ্রহের পরামর্শ দেন।তবে তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া এ ঋন পাওয়া অনেকটা অসম্ভব।

উপসংহার

যদিও ব্যবসায়িক সম্প্রদায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত, তবে স্থিতিশীল নীতি, কর সংস্কার ও অবকাঠামো বিনিয়োগের অভাবে তাদের কার্যক্রম বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। যদি মুদ্রাস্ফীতি, শক্তি সংকট ও আর্থিক অস্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকে, তবে ভবিষ্যতে বেসরকারী খাতের জন্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে।

যত দিন যাচ্ছে ততই সংকটে পড়ছে দেশের বেসরকারি খাত

০২:৫৯:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • ঋণের উচ্চ খরচ এবং মুদ্রার বিনিময় হারের ওঠাপড়া দেশের মুদ্রাকে দুর্বল করে তুলছে
  • শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং অপ্রত্যাশিত শক্তি সরবরাহের কারণে সমস্যায় পড়ছে
  • সুদের হার ১০ শতাংশে বৃদ্ধি পেলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলোর জন্য ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে
  • ভবিষ্যতে বেসরকারী খাতের জন্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে
  • দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বিদেশী মুদ্রা রিজার্ভে ৭-৮ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি জরুরি

র্তমানে বেসরকারী খাত অনেকগুলি জটিল সমস্যার মুখোমুখি। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, বিনিয়োগে স্থবিরতা এবং শক্তি সরবরাহের অনিশ্চয়তার কারণে ব্যবসায়িক পরিবেশে ব্যাপক অসুবিধা দেখা দিচ্ছে। শিল্পক্ষেত্রের নেতারা মনে করছেন, এই সমস্যাগুলি ব্যবসার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যবৃদ্ধি

  • উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি: মার্চ ২০২৩ থেকে মুদ্রাস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে থাকায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও জনগণের জীবনে মূল্যবৃদ্ধি একটি বড় উদ্বেগের কারণ।
  • ঋণের ব্যয় ও মুদ্রার অবনমনের প্রভাব: ঋণের উচ্চ খরচ এবং মুদ্রার বিনিময় হারের ওঠাপড়া দেশের মুদ্রাকে দুর্বল করে তুলছে, ফলে উৎপাদন ও পরিচালন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

শক্তি সরবরাহের অসামঞ্জস্যতা

  • বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও শক্তি অসামঞ্জস্য: শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং অপ্রত্যাশিত শক্তি সরবরাহের কারণে সমস্যায় পড়ছে।
  • গ্যাসের দাম বৃদ্ধি: গ্যাসের দাম বাড়লেও সরবরাহে ধারাবাহিকতা না থাকায় ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই সমস্যার ফলে সামার মৌসুমে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

বিনিয়োগ ও ঋণ সংকট

  • বিনিয়োগের স্থবিরতা: কর্পোরেট বিনিয়োগ প্রায় ২৪ শতাংশে স্থবির হয়ে গেছে এবং সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ ছয় বছরের নিম্নমুখী পর্যায়ে পৌঁছেছে।
  • ঋণ প্রাপ্তির অসুবিধা: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি অনুযায়ী সুদের হার ১০ শতাংশে বৃদ্ধি পেলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলোর জন্য ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। ফলে বেসরকারী খাতের ঋণ বৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম হচ্ছে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ও প্রস্তাবনা

  • নীতি ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা: ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স ও ইন্ডাস্ট্রির এক নেতা বলেন,  ব্যবসায়িক আত্মবিশ্বাস পুনরুদ্ধারের জন্য নীতির স্থিতিশীলতা ও কাঠামোগত সংস্কার অপরিহার্য। তেমনি প্রয়োজন প্রশাসনিক, রাজননৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা। বর্তমান অবস্থানের উত্তরণ ঘটিয়ে মানুষের সার্বিক অবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

  • বিদেশী মুদ্রা রিজার্ভ বৃদ্ধির আহ্বান:  সাবেক একজন ডেপুটি গর্ভনর ও অর্থনীতিবিদ মনে করেন, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বিদেশী মুদ্রা রিজার্ভে ৭-৮ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি জরুরি। তিনি সরকারকে বহুপাক্ষিক ঋণদাতাদের কাছ থেকে এই ডলার সংগ্রহের পরামর্শ দেন।তবে তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া এ ঋন পাওয়া অনেকটা অসম্ভব।

উপসংহার

যদিও ব্যবসায়িক সম্প্রদায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত, তবে স্থিতিশীল নীতি, কর সংস্কার ও অবকাঠামো বিনিয়োগের অভাবে তাদের কার্যক্রম বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। যদি মুদ্রাস্ফীতি, শক্তি সংকট ও আর্থিক অস্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকে, তবে ভবিষ্যতে বেসরকারী খাতের জন্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে।