সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- গ্রাম্য অর্থনীতিতে এর প্রভাব বেশি
- সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে
- কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান লক্ষ্য হলো মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনীতিকে সহায়তা করা
অক্টোবর-ডিসেম্বরের ত্রৈমাসিকে ভারতের মোট উৎপাদন (জিডিপি) বার্ষিক ৬.২% বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের ব্যয় ও ব্যক্তিগত ভোক্তা খরচের বৃদ্ধির ফলে দেশের অর্থনীতিতে ত্বরান্বিত উন্নয়ন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যদিও কৃষি ও গ্রাম্য খাতে চাহিদা শক্তিশালী, কারখানা খাতে তুলনামূলকভাবে কম উন্নতি হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের জন্য জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস পূর্বের ৮.২% থেকে বাড়িয়ে ৯.২% করা হয়েছে।
অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও পরিসংখ্যান
- জিডিপি বৃদ্ধি: অক্টোবর-ডিসেম্বরের ত্রৈমাসিকে জিডিপি ৬.২% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পূর্বের ৫.৬% থেকে উন্নত।
- মোট যোগফল (জিভিএ): একই সময়ে জিভিএও ৬.২% বৃদ্ধি পেয়েছে (পূর্বের ত্রৈমাসিকে সংশোধিত ছিল ৫.৮%)।
- আর্থিক বর্ষের পূর্বাভাস: সম্পূর্ণ আর্থিক বছরে জিডিপি বৃদ্ধিকে ৬.৫% ধরে নেওয়া হয়েছে, তবে জানুয়ারি-মার্চের মধ্যে ৭.৬% বৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণের প্রয়োজন।
সরকারি ব্যয়ের প্রভাব
- গত ত্রৈমাসিকে সরকারি ব্যয় ৮.৩% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পূর্বের ৩.৮% বৃদ্ধির তুলনায় অনেক বেশি।
- নীতিগত পরিবর্তনের মাধ্যমে এমন একটি সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে যা ভবিষ্যতে আরও উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।
ব্যক্তিগত ভোক্তা ব্যয় ও গ্রাম্য অর্থনীতি
- ব্যক্তিগত ভোক্তা খরচ গত বছর একই সময়ে ৬.৯% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পূর্বের ৫.৯% থেকে উত্কৃষ্ট।
- কৃষি খাতের উন্নতি ও গ্রাম্য চাহিদার বাড়ার ফলে খাদ্যদ্রব্যের দাম কমে যাওয়া এবং উৎসব মৌসুমে অতিরিক্ত খরচের কারণে ভোক্তা ব্যয় বাড়ছে।
- নগরাঞ্চলে চাকরি ও আয় বৃদ্ধির দুর্বলতার কারণে ভোক্তা ব্যয়ে সামান্য পতন দেখা গেছে।
উদ্যোগ ও মুদ্রানীতি
- ভারতীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় পাঁচ বছরে প্রথমবারের মতো সুদের হার কমিয়েছে এবং মুদ্রাস্ফীতি কমতে শুরু করলে আরও হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে।
- ফেসবুক আয়কর হ্রাস নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে যা ভোক্তা ব্যয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
- অনেক অর্থনীতিবিদ আগামী এপ্রিল অতিরিক্ত সুদের হার হ্রাসের সম্ভাবনা ব্যক্ত করেছেন।
বিশ্লেষণ ও মন্তব্য
- ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের হ্যারি চেম্বার্স: তিনি বলছেন, “জিডিপি পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে যে দেশের অর্থনীতি গত বছরের শেষে কিছুটা নরম ছিল, তবে নীতি সংশোধনের ফলে আগামী ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি আরও দ্রুত হবে।”
- আইডিএফসি ফার্স্ট ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ গৌরা সেন গুপ্তা: তিনি এই বৃদ্ধিকে কৃষি খাত ও গ্রাম্য চাহিদার পুনরুজ্জীবনের ফলাফল হিসেবে বিশ্লেষণ করেছেন।
ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি
- ভারতের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি. অ্যানান্থ নাগেশ্বরন এই বৃদ্ধিকে অর্জনযোগ্য হিসেবে দেখছেন।
- কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান লক্ষ্য হলো মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনীতিকে সহায়তা করে এমন নীতি গ্রহণ করা।
উপসংহার
সরকারি ব্যয় এবং ব্যক্তিগত ভোক্তা খরচের বৃদ্ধির ফলে ভারতের অর্থনীতি সম্প্রতি উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। সরকারের নীতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত এবং গ্রাম্য চাহিদার শক্তির সমন্বয়ে আগামী ত্রৈমাসিকে আরও দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের আশাবাদ তৈরি হয়েছে।