সারাক্ষণ ডেস্ক
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম “পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের এক স্টেশনেই ব্যয় কমছে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা”
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন এক স্টেশনেই ব্যয় কমছে প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা। এ জন্য স্টেশন ভবনের রং, টাইলস, কমোডসহ কিছু পণ্যের ধরন পরিবর্তন করা হবে। আর শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা (এসি) বাদ দিয়ে লাগানো হবে বৈদ্যুতিক পাখা। ঠিকাদারের সঙ্গে দর-কষাকষি করেও কিছু ব্যয় কমানো হয়েছে।
এই ব্যয় কমছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশন স্টেশন নির্মাণে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঢাকা-যশোর রেলপথের এই স্টেশন নির্মাণে শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৫৩ কোটি টাকা। এরই মধ্যে ৯০ শতাংশের মতো কাজও শেষ হয়েছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে ব্যয় কমানোর জন্য প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে চাপ দেওয়ায় শেষ মুহূর্তে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা ব্যয় কমানোর প্রাক্কলন করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পে প্রায় ১ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা ব্যয় কমছে। ২০১৬ সালে প্রকল্পটি নেওয়ার সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে ব্যয় সংশোধনের পর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। সর্বশেষ সংশোধনী ও এরপর কাটছাঁটের ফলে ব্যয় দাঁড়িয়েছে এখন ৩৮ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে প্রতি কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ৭ কোটি ডলারের বেশি ব্যয় হয়েছে, যা নিয়ে সমালোচনা আছে।
প্রকল্পের একটি নথি অনুযায়ী, নকশা ও জরিপ ফি, সংকেত ও টেলিযোগাযোগব্যবস্থা স্থাপন, পরিবেশগত সুরক্ষা, রেলক্রসিং গেট নির্মাণ, নদীশাসন ও পাথরবিহীন রেলপথ নির্মাণে প্রায় সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। এ ছাড়া পণ্যের মূল্য সমন্বয় থেকে এবং কাজ বাড়তে পারে, এমন বিবেচনায় রাখা টাকাও সাশ্রয় হয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিগত সরকারের আমলে নেওয়া প্রকল্পের ব্যয় কমানোর চেষ্টা করছেন। নতুন প্রকল্প ও কেনাকাটায় সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী, ইতিমধ্যে কিছু কিছু সাশ্রয় হয়েছে, হচ্ছে।
দৈনিক ইত্তেফাকের একটি শিরোনাম “অশুল্ক বাধা দূর করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর উদ্যোগ”
বাংলাদেশের স্বার্থ বজায় রেখেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়িয়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ পরিকল্পনা করছে সরকার। সেই সঙ্গে শুল্কের বাইরে বিভিন্ন অশুল্ক বাধা অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। গতকাল রবিবার সচিবালয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের পালটা শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে এই পর্যালোচনা বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, প্রথমে আমরা ইউএসএ এবং বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার ঘটাব। এজন্য আমেরিকা থেকে আমাদের দরকারি কোনো কিছু ইমপোর্ট করতে হয়, আমরা এলএনজি এবং জিনিস ইমপোর্ট করব। যাতে করে এর মাধ্যমে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরেকটু দৃঢ় হয়। এদিকে অর্থ উপদেষ্টা সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আরোপিত নতুন শুল্কারোপে অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়বে, তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে না। সরকার শুল্কের বিষয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা আশাবাদী এর থেকে ভালো কিছু বেরিয়ে আসবে।
বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে অংশীদার খুঁজছেন পলাতক আওয়ামী লীগ নেতারা”
দেশের শিল্প উৎপাদন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রগুলোর একটি নারায়ণগঞ্জ। গত দেড় দশকে রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাটির রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হয়েছে ওসমান পরিবারের হাতে। এ পরিবারের প্রভাবশালী দুই সদস্য শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের রয়েছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ। গার্মেন্টস, শিপিং, পরিবহন, আবাসনসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা রয়েছে তাদের। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান ওসমান পরিবারের প্রভাবশালীরা। এখন বিদেশে বসে নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য অংশীদার খুঁজছেন তারা।
আগে থেকেই শামীম ওসমানসহ এ পরিবারের সদস্যদের বেনামি অংশীদারত্ব ছিল দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ব্যবসায়ী গ্রুপে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিল্প গ্রুপটিতে ওসমান পরিবারের অংশীদারত্ব আরো বেড়েছে। আর নতুন করে ওসমান পরিবারের ব্যবসায়িক অংশীদার হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এক সদস্য। আবাসন ব্যবসায়ী ওই বিএনপি নেতার গুলশানের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন শামীম ওসমান। এখন ওসমান পরিবারের বাড়ি, গাড়িসহ সম্পত্তির দেখভাল করছেন তিনি।
ওসমান পরিবার ব্যবসার অংশীদার খুঁজে পেলেও এক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে পড়েছেন নারায়ণগঞ্জের আরেক প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম দস্তগীর গাজী। শেখ হাসিনা সরকারের পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা এ মন্ত্রী এখন কারাগারে। গাজী টায়ারসহ তার বেশ কয়েকটি কারখানা অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়েই পুড়িয়ে দেয়া হয়। যেসব কারখানা অক্ষত ছিল, সেগুলোও গত আট মাস ধরে বন্ধ।
গোলাম দস্তগীরের পরিবারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, বন্ধ কারখানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো সচল করতে তারা অংশীদার খুঁজছেন। তবে স্থানীয় বিএনপির দুটি গ্রুপের মধ্যে তীব্র বিবাদ থাকায় অংশীদার নির্ধারণে বেগ পেতে হচ্ছে। দুটি পক্ষের সঙ্গেই তাদের আলোচনা চলছে। সমঝোতা হলে কারখানাগুলো দ্রুত চালু করা হবে।
মানবজমিনের একটি শিরোনাম “নির্বাচন প্রশ্নে যে কৌশলে হাঁটছে বিএনপি”
জাতীয় সংসদ ভোটকে সামনে রেখে নির্বাচন ও রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলতে বিভিন্ন দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে শনিবার হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেছে দলটি। সামনে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল এবং জোটসহ বাম-ডান দলগুলোর সঙ্গেও
আলোচনা করবে। তাদের এক প্ল্যাটফরমে এনে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের দাবিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে মাঠে সোচ্চার থাকবে বিএনপি। দলটি মনে করছে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা দরকার। গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা সহজ হবে। নির্বাচন প্রলম্বিত হলে যড়যন্ত্রের ডালপালা বিস্তৃত হতে পারে।
ওদিকে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণার বিষয়ে আলোচনা করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। নির্বাচনী রোডম্যাপ চেয়ে দলের নেতারা বিভিন্ন সময়ে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন। বিএনপি মনে করে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা হলে দলগুলো নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করতে পারবে।
সর্বশেষ গত ৫ই এপ্রিল গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠক করেন। বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদও ছিলেন। বৈঠকে ডিসেম্বরের মধ্যেই সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণার বিষয়ে আলোচনা হয় বলে বিএনপি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়। যদিও হেফাজত তার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আওয়ামী লীগের বিচার হওয়ার পর নির্বাচন চায় বলে উল্লেখ করেছে। হেফাজত নেতাদের আগ্রহেই বিএনপি’র সঙ্গে বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠকে তারা সংস্কারের বিষয়ে নিজেদের কিছু দাবি তুলে ধরেছেন। বৈঠকে নির্বাচন ইস্যুতেও আলোচনা হয়েছে।