সারাক্ষণ রিপোর্ট
হঠাৎ ট্রেজারি বন্ড বিক্রি ও ইয়িল্ড নেমে যাওয়া
২ এপ্রিল ট্রাম্পের “রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ” ঘোষণার পর প্রথমে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ট্রেজারি বন্ডে ঢুকেছিলেন, যার ফলে ইয়িল্ড নেমে যায়। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ব্যাপক পরিমাণ বন্ড বিক্রি শুরু হলে ইয়িল্ড উর্ধ্বগামী হয়।
ট্যারিফ স্থগিত এবং বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ
৯ এপ্রিল ট্রাম্প প্রশাসন চীনের ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সব ট্যারিফ স্থগিত করায় ইয়িল্ড দ্রুত নেমে আসে। তবুও একবার বিচলিত হয়ে যাওয়া বাজারের আত্মবিশ্বাস পুরনো জায়গায় ফেরেনি।
দায়ী কি চীন? না হেজ-ফান্ড!
প্রথমদিকে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন যে চীন মাধ্যমেই বন্ড বিক্রি করছে—যদিও গত দুই বছরে তাদের অধরায় ট্রেজারি হোল্ডিং প্রায় ১০% কমেছে। তবে ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্ট বলেছেন, কোনো সার্বভৌম দেশের ওপর সরাসরি প্রমাণ নেই। বরং সম্প্রতি নিলামে বিদেশি অংশগ্রহণ বেড়ে যাওয়াটাই ইঙ্গিত দেয় হেজ-ফান্ডের কার্যক্রম।
বেসিস ট্রেডের ভুমিকা
হেজ-ফান্ডরা “বেসিস ট্রেড” নামে পরিচিত কৌশল ব্যবহার করে—বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট ফিউচার্স বিক্রি করে। ধারণা করা হয়েছিল প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ইয়েন মূল্যের এই বেট ছিল। কিন্তু মিজুহো সিকিউরিটিজের হিদেহিরো জো বলছেন, সরাসরি প্রমাণ নেই যে এই বেট ইয়িল্ড বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
সুইপ রেট বনাম ট্রেজারি ইয়িল্ড
শেয়ারবাজার ডুবলে সুইপ রেট-বন্ড ইয়িল্ডের ব্যবধান (সুয়াপ স্প্রেড) দ্রুত সংকুচিত হয়। স্টক পতনের সময় ভ্যারিয়েবল অ্যানুইটি হোল্ডাররা সুইপ রেটের মাধ্যমে ঝুঁকি কমাতে চাইলে সুইপ রেট নেমে যায়, যা বেসিস ট্রেডে বিপরীত গতিশীলতা তৈরি করে।
ব্যাংক ও ব্রোকারেজের অনিচ্ছা
মার্কিন ব্যাংক এবং ব্রোকারেজ ফার্মগুলো গত সময়ে Treasurys হোল্ডিং কমিয়েছে। তাদের ধারণা, উচ্চ ঋণ-নির্ভর ব্যয় ও সম্ভাব্য কঠোর নিয়ন্ত্রক নিয়মের কারণে এই বন্ড আগের মতো আকর্ষণীয় নয়।
SLR শিথিলের প্রত্যাশা ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা আর SLR (সাপ্লিমেন্টারি লিভারেজ রেশিও) শিথিলের আভাস হেজ-ফান্ডগুলোকে বন্ড কিনতে উত্সাহিত করেছিল। কিন্তু স্টক রুট ফেটে গেলে স্প্রেড আরও নেতিবাচক হয়ে তাদের বেট ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, ফলে তারা দ্রুত বন্ড বিক্রি করে ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করেছে।
ভবিষ্যতের ঝুঁকি
এখন বেসিস ট্রেড ধীরে ধীরে থামছে, আর SLR শিথিলের কিছু আশা আছে। তবুও নোমুরা সিকিউরিটিজের চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট নাকা মাত্সুজাও সতর্ক করেছেন—যদি চীনের অর্থনীতি ধাক্কা খায় এবং পুঁজি বাইরে চলে যেতে শুরু করে, চীন আবার ট্রেজারি বিক্রি শুরু করলে নতুনভাবে বেসিস ট্রেড আনউইন্ডing ঘটে ও বাজার অস্থির হতে পারে।
সারসংক্ষেপ: ১৭ এপ্রিলের সেল-অফের কারণে ট্রাম্পকে ৯০ দিনের ট্যারিফ বিরতিতে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। আগামী দিনগুলোতে মার্কিন ঋণনীতি ও আন্তর্জাতিক আলোচনা নজরদারির কেন্দ্রবিন্দু হবে, কারণ বেসিস ট্রেড ও সরবরাহ–চাহিদার ভারসাম্য না মেলালে বন্ড মার্কেটে অস্থিরতা ফিরে আসতে পারে।