মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

কেন ভারতের শাসনে প্রয়োজন বিপ্লবী পরিবর্তন

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫, ১০.০০ পিএম

সারাক্ষণ রিপোর্ট

প্রশাসন পুনর্গঠনের সূচনা

সিভিল সার্ভিস দিবসের আগেই—২১ এপ্রিলের ঠিক আগে—প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মেধার ভিত্তিতে প্রশাসন নতুন বলে গড়ার তৎপরতা শুরু করেছেন। বয়সের সিনিয়রিটি-কে পিছনে ফেলে, তিনি অর্থ, বাণিজ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে ১৯৯৪ ব্যাচের জুনিয়র আইএএস অফিসারদের নিয়োগ দিয়েছেন, যদিও বর্তমান সচিবদের অবসর আরও কয়েক মাস বাকি।

জুনিয়রদের অগ্রাধিকার

ব্যয়বিভাগ ছাড়া বাকি সব বিভাগে সচিবপদে পরিবর্তন ঘটিয়ে শুধুমাত্র ১৯৯৪ ব্যাচের জুনিয়রদেরই সুযোগ দেয়া হয়েছে—যাদের এখনও অন্তত পাঁচ বছরের মতো সরকারি কাজে অবদান রাখার সময় আছে। বিশেষ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে নথিপ্রক্রিয়ার জটিলতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে ধীরগতি সামলাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মেধার মূল্যবোধের বার্তা

এই রূপান্তর শুধু ইলেকট্রনিক এঅডিট বা বেসরকারি ক্ষেত্রে নয়; সামরিক, বিজ্ঞান ও নিরাপত্তা সংস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতেও “বয়স নয়, মেধাকেই অগ্রাধিকার” দেবার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে।

বয়স বনাম দক্ষতা

গত প্রায় ৭৮ বছরে ভারতীয় প্রশাসনে বয়স ও অতীতে গড়ে ওঠা পারস্পরিক নেটওয়ার্কই প্রধান নিয়ামক ছিল। আরতি হিসেবে শনাক্ত করা হলেও—অনেক সচিব ‘ডকুমেন্ট কমপ্লিট’ না হওয়া পর্যন্ত নতুন উদ্যোগ নিতে অনীহা প্রকাশ করেন।

মানসিক উপনিবেশমুক্তির চ্যালেঞ্জ

‘আত্মনির্ভর ভারতে’ কথাটা যতবারই উচ্চারিত হোক, শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিজেরাই এক ধরনের কেল্লাবন্দি অবস্থায় থেকে রাজনীতিবিদ ও বেসরকারি খাতকে অনৈতিক ও দুর্নীতিগ্রস্ত বলে কটাক্ষ করেন।

সামরিক–শিল্প জোটের প্রয়োজন

২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে একটি শক্তিশালী সামরিক–শিল্প জোটে পরিণত করতে বেসরকারি সেক্টরের অংশীদারি অপরিহার্য। ধীরগতির রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সার্বিক প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ অর্জনে পিছিয়ে পড়ছে।

নিজস্ব সৃজনশীলতার অভাব

দেশের বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসন মৌলিক ধারণা গড়ে তুলতে পারেনি, ফলে পাশ্চাত্যের কৌশল ও থিঙ্ক ট্যাংক পরিভাষায় বাধ্য হয়ে রইল। নিজস্ব গবেষণা ও উদ্ভাবনে নির্ভর না করে বহির্বিশ্বের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়িয়ে নিয়েছে।

কূটনীতির পুরনো সূত্রবদ্ধতা

আন্তর্জাতিক দরবারে এখন নেতারা—যেমন ট্রাম্প—খোলাখুলি কৌশলগত ইস্যু নিয়ে কথাবার্তা চালাচ্ছেন। তবু ভারতীয় কূটনীতি ‘নোট ভের্বালে’, ‘চ্যাথাম হাউস রুলস’ আর ‘ডিমার্চের’ মতো পুরনো নিয়মেই আটকে আছে। দেশীয় গোয়েন্দা সংস্থাও কার্যকর গোয়েন্দা সংগ্রহে স্বনির্ভর না হয়ে পাশ্চাত্যের সহযোগীদের ছত্রছায়ায় কাজ করে।

চিন্তাশীল ও উদ্ভাবনী শক্তিতে রূপান্তর

বিশ্বের শীর্ষ তিন শক্তির মধ্যে স্থান করে নিতে হলে ভারতকে পাশ্চাত্যের অনুকরণ নয়, নিজস্ব ‘চিন্তাশীল ও উদ্ভাবনী’ শক্তিতে পরিণত হতে হবে।

অভ্যন্তরীণ বিভাজন ও অঙ্গীকার

দীর্ঘদিনের সমাজতান্ত্রিক শাসনভঙ্গ ও শীতল যুদ্ধের স্মৃতিতে নিরাপত্তা সংস্থা আমেরিকার প্রতি সন্দিহীন না—গত মুক্তিযুদ্ধকালে বঙ্গোপসাগরে USS এন্টারপ্রাইজের উপস্থিতি আজও হাড়ে বসে। তবু শীর্ষ কর্মকর্তারা চান, তাদের সন্তান আমেরিকা-ইউরোপে গিয়ে স্থায়ী হোক। এ থেকে মুক্তি পেতে প্রশাসনকে শুধু ভারতীয় স্বার্থ মাথায় রেখে ভাবতে হবে।

অংশীদারিত্বের সংকট

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘ভারত কোনো দেশের অনুসরণে সীমাবদ্ধ নয়’। তবু প্রশাসন কমিউনিস্ট ও পাশ্চাত্যপন্থী শিবিরে বিভক্ত, জাতির চেয়ে পার্টির অঙ্গীকারকে গুরুত্ব দিচ্ছে—কারণ রেইসিনা হিলে শীতল যুদ্ধের ছায়া এখনও বিশ্বরঞ্জিত।

এখনই বিপ্লবী পরিবর্তনের সময়

গত দুই দশকে মোদি দেখিয়েছেন, তিনি তর্কিত নেতা না হয়ে প্রতিষ্ঠান ও ঐক্য গড়তে পারদর্শী। এখন দেশ যখন শক্তিশালী গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের অধীনে, প্রশাসনের সর্বস্তর—সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থাসহ—বিপ্লবী পরিবর্তনের আহ্বান সামনে রেখে দ্রুতগতিতে এগোনোর সময়।

গতি বাড়ানোর একমাত্র পথ

বিশ্বজুড়ে চীনের প্রভাব বাড়তে থাকায় ভারতের বিকল্প একটাই—বৃদ্ধির গতি আরও বাড়িয়ে নেয়া। ফর্মুলা-ওয়ানে দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে, তবে গতি কমানো যায় না।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024