ফোকাস হারিয়ে যাওয়া: ক্লাস না, পরীক্ষা না, দুনিয়া বদলানো
কোভিড-১৯ ও জুলাই আন্দোলনের ঝড় প্রায় ছাত্রসমাজের সর্বস্তরের লক্ষ্য-নিষ্ঠাকে ভেঙে দেয়। আগে যাদের আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা বা দীর্ঘমেয়াদী স্কলারশিপ প্রাপ্যতার লক্ষ্যে পড়াশোনা ছিল, তাঁরা হঠাৎ করে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ দেখেন।
- বিভিন্ন অভিভাবক সমীক্ষা থেকে জানা যায়, ২০২০-২২ সময়কালে ছাত্রদের ৫২% মন একাগ্রতা হারাল। উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৪০% অবসর-অবস্থা অনুভব করে।
অনলাইনের ফাঁদ: মানসিক স্বাস্থ্যের সংকট
অনলাইন ক্লাসের সুবিধে থাকা সত্ত্বেও, এতে একঘেয়েমি ও বিনোদনের অভাব—এদের ফলে শিক্ষার্থীরা হতাশায় মন্ত্রমুগ্ধ হয়। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সময় কাটাতে থাকে।
- প্রয়াস হারানো: গবেষকদের মতে, “দিনে ৫ ঘণ্টা অনলাইন ক্লাসে থাকার পরিবর্তে ৩ ঘণ্টা অনলাইন গেমিং বা ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের ৬৫% সময় অপচয় হয়।”
- একাকিত্ব: “ঘরে থেকে পড়ছি, বন্ধুদের দেখা নেই, লাইব্রেরি নাই, খেলাধুলা বন্ধ—সব মিলিয়ে একঘেয়েমি আমাদের স্ট্রেস অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে,”—বর্ণনা করেন ঢাকা শহরের এক স্কুলছাত্রী।
প্রেরণা অস্বচ্ছ—স্বপ্নের পরিছায়া
“আগে লেখক হতে পারব, গবেষক হতে পারি, এমন স্বপ্ন ছিল। এখন অচল এক ক্ষণিকের জন্য জীবনটা যেন থমকে গেছে”—এমন আক্ষেপ ছাত্রদের মধ্যে সর্বত্র শোনা যায়।
- বিশ্বাসহীনতা: পড়াশোনা করলেই কি ঘরের গরিব পরিবারের এক কালো গর্ত থেকে মুক্তি মিলবে? অথবা ভবিষ্যতে একটি শেয়ারবাজার–যোগাযোগ-যোগাযোগমাধ্যমে সফল হতে পারবো?—এমন প্রশ্নগুলো ঘিরে রাখতে থাকে।
কোনো মানে হয় না
“আমাদের স্বপ্নের আশায় লিখেছিলাম, কিন্তু আজ সেই লেখা পড়ে মনে হয়, কোনও মানে হয় না”—এমন অকৃত্রিম হতাশার বহিঃপ্রকাশ। কোভিডের সেই প্রথম ঢেউ যখন আনল মাকড়শার মতো বোনা এক আঁধার, তখনই শিক্ষার্থীরা বুঝেছিল—লক্ষ্যের মূল্যায়ন আর সহজ নয়।