০৪:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

ড. ইউনূস, তারেকের বৈঠক ঘিরে রাজনীতিতে চাঞ্চল্য

সমকালের একটি শিরোনাম “চামড়ার দাম নিয়ে শত প্রশ্ন এবং একটি ‘লবণরেখা’”

কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে প্রতিবছর কেন একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়? সাধারণ কোরবানিদাতা ও মৌসুমি ছোট ব্যবসায়ীরা কেন বলেন, চামড়ার ন্যায্য দাম পাননি? কেন কিছু কিছু এলাকা থেকে চামড়া ফেলে দেওয়া বা মাটিতে পুঁতে ফেলার খবর আসে? কেন বিভিন্ন এলাকায় চামড়া পচে যায়, নষ্ট হয়?

এর বিপরীতে প্রতিবছর ব্যবসায়ীরা কেন বলেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে চামড়া কিনেছেন তারা। সরকার কেন বলে, এবার সবচেয়ে বেশি দামে চামড়া বিক্রি হয়েছে। যারা সঠিক দাম পাননি বলে অভিযোগ করেন, তাদের ব্যাপারে কেন বলা হয়, তারা সময়মতো আড়তে না এনে চামড়া নষ্ট করে ফেলেছেন। তাই বিক্রি হয়নি।
এ দুই বিপরীতমুখী বাস্তবতার মাঝে আছে একটি ‘লবণরেখা’। ভেঙে বললে, লবণমুক্ত চামড়া বনাম লবণযুক্ত চামড়া। শুরুর প্রশ্নগুলো ওঠে মূলত লবণ ছাড়া চামড়ার বিক্রয় পরিস্থিতি নিয়ে। আর বড় ব্যবসায়ী ও সরকারের বক্তব্যটি থাকে লবণ দেওয়া চামড়ার বাজার নিয়ে।

পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সব সরকারই প্রতিবছর চামড়ার যে দাম নির্ধারণ করেছে তা মূলত লবণ দেওয়া চামড়ার। চামড়া কিনে লবণ দেন মূলত স্থানীয় মাঝারি ব্যবসায়ীরা। তারা সেগুলো ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। সারাদেশে এ ধরনের ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকের সংখ্যা ১ লাখের কাছাকাছি। এই তথ্য বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের। সরকারের চামড়া ব্যবস্থাপনার মধ্যে মূলত তারাই পড়েন।

এর বাইরে সাধারণ কোরবানিদাতা থেকে পাড়া-মহল্লার তরুণ মৌসুমি ক্রেতা এবং মাদ্রাসা, মসজিদ ও এতিমখানার সংগ্রহ করা চামড়া এই ব্যবস্থাপনার বাইরে থেকে যায়। সংখ্যায় হিসাব করলে এটা কোটির কাছাকাছি। তারা লবণহীন চামড়া কেনাবেচা ও লেনদেন করেন। তাই অব্যবস্থাপনায় দাম পাওয়া বা না পাওয়া ভুক্তভোগীর সংখ্যাটা লবণযুক্ত চামড়ার ব্যবসায়ীদের তুলনায় বেশ বড়। ফলে না পাওয়ার আওয়াজটা অনেক বড় হয়।

এবারের বেচাকেনার চিত্র
ঢাকায় প্রতিটি গরু বা মহিষের কাঁচা চামড়া ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ঢাকার বাইরে গ্রামেগঞ্জে বেচাকেনা হয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। ছাগলের চামড়ার ক্রেতা তেমন একটা খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

গত শনিবার ঈদের দিন বিকেলে গুলশান-২ মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন এতিমখানার লোকজন ভ্যানে করে চামড়া এনে জড়ো করেছেন। ২০টি চামড়া বিক্রির জন্য নিয়ে আসা কবির হোসেন বলেন, ‘একটি বড় গরুর চামড়া কিনে এনেছি ৮০০ টাকা দিয়ে। এখন দাম বলছেন ৭০০ টাকা। কীভাবে বিক্রি করব?’

ঢাকার বাইরের চিত্র আরও নেতিবাচক। লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের জামেয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা ১৮০ পিস চামড়া সংগ্রহ করেছে। তারা নিজের খরচে স্থানীয় আড়তদারের কাছে নিয়ে গিয়ে ছোট চামড়া বিক্রি করেছে ৪০০ টাকা আর বড় চামড়া ৪৫০ টাকা দরে। এই আড়তদাররা লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে এ চামড়া বিক্রি করবেন বড় ব্যবসায়ী বা ট্যানারি মালিকদের কাছে। চট্টগ্রামে ১০ টনের মতো চামড়া ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে সিটি করপোরেশন জানিয়েছে।

সরকার নির্ধারিত দাম কত
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গতবারের চেয়ে ৫ টাকা বাড়িয়ে ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, ঢাকার বাইরে নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। এতে ঢাকায় লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। খাসির লবণযুক্ত চামড়া প্রতি বর্গফুট ২২ থেকে ২৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০-২২ টাকা নির্ধারণ করে সরকার।

 

আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কানাডায়, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক অনিশ্চিত”

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এখন কানাডায় অবস্থান করছেন। তাঁর সঙ্গে লন্ডন সফররত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, ‘কিয়ার স্টারমারের, আমরা যেটা জানতে পারছি যে উনি সম্ভবত কানাডায় আছেন, কানাডা ভিজিট করছেন। আজকে ব্রিটিশ এক পার্লামেন্টারি এমপি এসছিলেন, উনি জানালেন যে উনি (কিয়ার স্টারমার) কানাডায় আছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরপরও আমরা চেষ্টা করছি, সময় ও শিডিউল ম্যাচ (সূচি মিললে) করলে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হতে পারে।’

চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় হিথরো বিমানবন্দরে অবতরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে ওঠেন তিনি।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ডরচেস্টার হোটেলে দুপুর ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইউরোপীয় বিমান সংস্থা এয়ারবাসের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াউটার ভ্যান ওয়র্শ এবং দুপুর সাড়ে ১২টায় স্কটল্যান্ডভিত্তিক মেনজিস এভিয়েশনের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট চার্লস ওয়াইলির পূর্বনির্ধারিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এরপর বেলা ২টায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক, আপসানা বেগমসহ অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

 

মানবজমিনের একটি শিরোনাম “ড. ইউনূস, তারেকের বৈঠক ঘিরে রাজনীতিতে চাঞ্চল্য”

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে রাজনীতিতে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। আগামী শুক্রবার লন্ডন সময় সকালে এই বৈঠক হওয়ার সূচি রয়েছে। বৈঠকের বিষয়ে বিএনপি’র পক্ষ থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই বৈঠক রাজনীতিতে টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। নির্বাচনের সময় নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপিসহ অন্যান্য দলের টানাপড়েন চলার মধ্যেই গত শুক্রবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী এপ্রিলের শুরুতে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেন। তার এই ঘোষণায় রাজনীতির মাঠে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিএনপিসহ অনেক দল জানায়, ঘোষিত সময় নির্বাচন আয়োজনের জন্য উপযোগী নয়।

নির্বাচন আয়োজনের এই সময় পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ করা হয় সরকারের প্রতি। এমন অবস্থার মধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডন সফরে গেছেন।

সফরের মধ্যে আগামী ১৩ই জুন শুক্রবার সকালে লন্ডনের হোটেল ডোরচেস্টারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। লন্ডন সফররত প্রফেসর ইউনূস এ হোটেলেই অবস্থান করছেন। দু’জনের বৈঠকে নির্বাচন, জুলাই গণহত্যার বিচার, সংস্কারসহ জাতীয় ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। বৈঠকটি ঘিরে চাঞ্চল্য বিরাজ করছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। অনেকের প্রত্যাশা এর মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যে যে ফাটল দেখা যাচ্ছে সেটি কেটে যাবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বৈঠককে রাজনীতিতে টার্নিং পয়েন্ট বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি (ইউনূস) যে হোটেলে উঠেছেন সেখানেই বৈঠক হবে। উনাকে (তারেক রহমান) ফরমালি দাওয়াত করা হয়েছে মিটিংয়ের জন্য। ১৩ তারিখ ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত টাইমে… এই সময়টা দেয়া হয়েছে।

 

বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি ২৭% হলেও ব্যাংক আমানত ৪ শতাংশের ঘরে”

দেশে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহে উচ্চ প্রবৃদ্ধি চলছে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে অব্যাহত প্রবৃদ্ধির এ হার ২৭ শতাংশেরও বেশি। প্রবাসী পরিবারগুলোর ব্যয় নির্বাহের পর রেমিট্যান্সের উদ্বৃত্ত অর্থ আমানত হিসেবে ব্যাংকে জমা থাকার কথা। তবে ব্যাংক খাতের আমানত প্রবৃদ্ধির চিত্রে সেটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) দেশে ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। রেমিট্যান্স হিসেবে আসা এ অর্থের এক-তৃতীয়াংশও ব্যাংকে আমানত হিসেবে জমা হলে তা ৮৮ হাজার কোটি টাকার বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু এ সময়ে দেশের ব্যাংক খাতে মাত্র ৭৫ হাজার ৮১৪ কোটি টাকার আমানত বেড়েছে। যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ব্যাংকে আমানত বেড়েছিল ৮০ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের তুলনায় চলতি অর্থবছর ৪ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকার আমানত কম বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে আমানত স্থিতি বেড়েছে ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৫ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ হারে আমানত বেড়েছিল।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বেশির ভাগ ব্যাংক এখন মেয়াদি আমানতের বিপরীতে ১০-১২ শতাংশ সুদ দিচ্ছে। এত উচ্চ সুদের পরও মানুষ ব্যাংকমুখী হচ্ছে না। এ কারণে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছে। প্রত্যাশিত হারে আমানত না বাড়ায় ব্যাংক খাতে তারল্যের সংকটও কাটছে না। আস্থাহীনতার কারণেই মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে ভয় পাচ্ছেন বলে মনে করছেন তারা।

বেসরকারি কিছু ব্যাংকের প্রতি আস্থাহীনতার কারণে মানুষ সরকারি ব্যাংকে আমানত রাখতে আসছেন বলে জানান সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘শরিয়াহভিত্তিক কয়েকটি ব্যাংকসহ বেসরকারি কিছু ব্যাংকের বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে মানুষ আতঙ্কিত। ওই ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা আমানত তুলে নিচ্ছেন। তবে সোনালীসহ রাষ্ট্রায়ত্ত কয়েকটি ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি বেশ ভালো। সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের প্রতি মানুষের আস্থা পুরোপুরি না ফেরা পর্যন্ত আমানত প্রত্যাশিত মাত্রায় বাড়বে না।’

 

জনপ্রিয় সংবাদ

ড. ইউনূস, তারেকের বৈঠক ঘিরে রাজনীতিতে চাঞ্চল্য

০৯:০০:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

সমকালের একটি শিরোনাম “চামড়ার দাম নিয়ে শত প্রশ্ন এবং একটি ‘লবণরেখা’”

কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে প্রতিবছর কেন একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়? সাধারণ কোরবানিদাতা ও মৌসুমি ছোট ব্যবসায়ীরা কেন বলেন, চামড়ার ন্যায্য দাম পাননি? কেন কিছু কিছু এলাকা থেকে চামড়া ফেলে দেওয়া বা মাটিতে পুঁতে ফেলার খবর আসে? কেন বিভিন্ন এলাকায় চামড়া পচে যায়, নষ্ট হয়?

এর বিপরীতে প্রতিবছর ব্যবসায়ীরা কেন বলেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে চামড়া কিনেছেন তারা। সরকার কেন বলে, এবার সবচেয়ে বেশি দামে চামড়া বিক্রি হয়েছে। যারা সঠিক দাম পাননি বলে অভিযোগ করেন, তাদের ব্যাপারে কেন বলা হয়, তারা সময়মতো আড়তে না এনে চামড়া নষ্ট করে ফেলেছেন। তাই বিক্রি হয়নি।
এ দুই বিপরীতমুখী বাস্তবতার মাঝে আছে একটি ‘লবণরেখা’। ভেঙে বললে, লবণমুক্ত চামড়া বনাম লবণযুক্ত চামড়া। শুরুর প্রশ্নগুলো ওঠে মূলত লবণ ছাড়া চামড়ার বিক্রয় পরিস্থিতি নিয়ে। আর বড় ব্যবসায়ী ও সরকারের বক্তব্যটি থাকে লবণ দেওয়া চামড়ার বাজার নিয়ে।

পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সব সরকারই প্রতিবছর চামড়ার যে দাম নির্ধারণ করেছে তা মূলত লবণ দেওয়া চামড়ার। চামড়া কিনে লবণ দেন মূলত স্থানীয় মাঝারি ব্যবসায়ীরা। তারা সেগুলো ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। সারাদেশে এ ধরনের ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকের সংখ্যা ১ লাখের কাছাকাছি। এই তথ্য বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের। সরকারের চামড়া ব্যবস্থাপনার মধ্যে মূলত তারাই পড়েন।

এর বাইরে সাধারণ কোরবানিদাতা থেকে পাড়া-মহল্লার তরুণ মৌসুমি ক্রেতা এবং মাদ্রাসা, মসজিদ ও এতিমখানার সংগ্রহ করা চামড়া এই ব্যবস্থাপনার বাইরে থেকে যায়। সংখ্যায় হিসাব করলে এটা কোটির কাছাকাছি। তারা লবণহীন চামড়া কেনাবেচা ও লেনদেন করেন। তাই অব্যবস্থাপনায় দাম পাওয়া বা না পাওয়া ভুক্তভোগীর সংখ্যাটা লবণযুক্ত চামড়ার ব্যবসায়ীদের তুলনায় বেশ বড়। ফলে না পাওয়ার আওয়াজটা অনেক বড় হয়।

এবারের বেচাকেনার চিত্র
ঢাকায় প্রতিটি গরু বা মহিষের কাঁচা চামড়া ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ঢাকার বাইরে গ্রামেগঞ্জে বেচাকেনা হয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। ছাগলের চামড়ার ক্রেতা তেমন একটা খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

গত শনিবার ঈদের দিন বিকেলে গুলশান-২ মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন এতিমখানার লোকজন ভ্যানে করে চামড়া এনে জড়ো করেছেন। ২০টি চামড়া বিক্রির জন্য নিয়ে আসা কবির হোসেন বলেন, ‘একটি বড় গরুর চামড়া কিনে এনেছি ৮০০ টাকা দিয়ে। এখন দাম বলছেন ৭০০ টাকা। কীভাবে বিক্রি করব?’

ঢাকার বাইরের চিত্র আরও নেতিবাচক। লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের জামেয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা ১৮০ পিস চামড়া সংগ্রহ করেছে। তারা নিজের খরচে স্থানীয় আড়তদারের কাছে নিয়ে গিয়ে ছোট চামড়া বিক্রি করেছে ৪০০ টাকা আর বড় চামড়া ৪৫০ টাকা দরে। এই আড়তদাররা লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে এ চামড়া বিক্রি করবেন বড় ব্যবসায়ী বা ট্যানারি মালিকদের কাছে। চট্টগ্রামে ১০ টনের মতো চামড়া ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে সিটি করপোরেশন জানিয়েছে।

সরকার নির্ধারিত দাম কত
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গতবারের চেয়ে ৫ টাকা বাড়িয়ে ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, ঢাকার বাইরে নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। এতে ঢাকায় লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। খাসির লবণযুক্ত চামড়া প্রতি বর্গফুট ২২ থেকে ২৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০-২২ টাকা নির্ধারণ করে সরকার।

 

আজকের পত্রিকার একটি শিরোনাম “যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কানাডায়, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক অনিশ্চিত”

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এখন কানাডায় অবস্থান করছেন। তাঁর সঙ্গে লন্ডন সফররত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, ‘কিয়ার স্টারমারের, আমরা যেটা জানতে পারছি যে উনি সম্ভবত কানাডায় আছেন, কানাডা ভিজিট করছেন। আজকে ব্রিটিশ এক পার্লামেন্টারি এমপি এসছিলেন, উনি জানালেন যে উনি (কিয়ার স্টারমার) কানাডায় আছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরপরও আমরা চেষ্টা করছি, সময় ও শিডিউল ম্যাচ (সূচি মিললে) করলে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হতে পারে।’

চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় হিথরো বিমানবন্দরে অবতরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে ওঠেন তিনি।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ডরচেস্টার হোটেলে দুপুর ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইউরোপীয় বিমান সংস্থা এয়ারবাসের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াউটার ভ্যান ওয়র্শ এবং দুপুর সাড়ে ১২টায় স্কটল্যান্ডভিত্তিক মেনজিস এভিয়েশনের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট চার্লস ওয়াইলির পূর্বনির্ধারিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এরপর বেলা ২টায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক, আপসানা বেগমসহ অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

 

মানবজমিনের একটি শিরোনাম “ড. ইউনূস, তারেকের বৈঠক ঘিরে রাজনীতিতে চাঞ্চল্য”

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে লন্ডনে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে রাজনীতিতে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। আগামী শুক্রবার লন্ডন সময় সকালে এই বৈঠক হওয়ার সূচি রয়েছে। বৈঠকের বিষয়ে বিএনপি’র পক্ষ থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই বৈঠক রাজনীতিতে টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। নির্বাচনের সময় নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপিসহ অন্যান্য দলের টানাপড়েন চলার মধ্যেই গত শুক্রবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী এপ্রিলের শুরুতে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেন। তার এই ঘোষণায় রাজনীতির মাঠে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিএনপিসহ অনেক দল জানায়, ঘোষিত সময় নির্বাচন আয়োজনের জন্য উপযোগী নয়।

নির্বাচন আয়োজনের এই সময় পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ করা হয় সরকারের প্রতি। এমন অবস্থার মধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডন সফরে গেছেন।

সফরের মধ্যে আগামী ১৩ই জুন শুক্রবার সকালে লন্ডনের হোটেল ডোরচেস্টারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। লন্ডন সফররত প্রফেসর ইউনূস এ হোটেলেই অবস্থান করছেন। দু’জনের বৈঠকে নির্বাচন, জুলাই গণহত্যার বিচার, সংস্কারসহ জাতীয় ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। বৈঠকটি ঘিরে চাঞ্চল্য বিরাজ করছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। অনেকের প্রত্যাশা এর মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যে যে ফাটল দেখা যাচ্ছে সেটি কেটে যাবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বৈঠককে রাজনীতিতে টার্নিং পয়েন্ট বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি (ইউনূস) যে হোটেলে উঠেছেন সেখানেই বৈঠক হবে। উনাকে (তারেক রহমান) ফরমালি দাওয়াত করা হয়েছে মিটিংয়ের জন্য। ১৩ তারিখ ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত টাইমে… এই সময়টা দেয়া হয়েছে।

 

বণিকবার্তার একটি শিরোনাম “রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি ২৭% হলেও ব্যাংক আমানত ৪ শতাংশের ঘরে”

দেশে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহে উচ্চ প্রবৃদ্ধি চলছে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে অব্যাহত প্রবৃদ্ধির এ হার ২৭ শতাংশেরও বেশি। প্রবাসী পরিবারগুলোর ব্যয় নির্বাহের পর রেমিট্যান্সের উদ্বৃত্ত অর্থ আমানত হিসেবে ব্যাংকে জমা থাকার কথা। তবে ব্যাংক খাতের আমানত প্রবৃদ্ধির চিত্রে সেটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) দেশে ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। রেমিট্যান্স হিসেবে আসা এ অর্থের এক-তৃতীয়াংশও ব্যাংকে আমানত হিসেবে জমা হলে তা ৮৮ হাজার কোটি টাকার বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু এ সময়ে দেশের ব্যাংক খাতে মাত্র ৭৫ হাজার ৮১৪ কোটি টাকার আমানত বেড়েছে। যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ব্যাংকে আমানত বেড়েছিল ৮০ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের তুলনায় চলতি অর্থবছর ৪ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকার আমানত কম বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে আমানত স্থিতি বেড়েছে ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৫ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ হারে আমানত বেড়েছিল।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বেশির ভাগ ব্যাংক এখন মেয়াদি আমানতের বিপরীতে ১০-১২ শতাংশ সুদ দিচ্ছে। এত উচ্চ সুদের পরও মানুষ ব্যাংকমুখী হচ্ছে না। এ কারণে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছে। প্রত্যাশিত হারে আমানত না বাড়ায় ব্যাংক খাতে তারল্যের সংকটও কাটছে না। আস্থাহীনতার কারণেই মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে ভয় পাচ্ছেন বলে মনে করছেন তারা।

বেসরকারি কিছু ব্যাংকের প্রতি আস্থাহীনতার কারণে মানুষ সরকারি ব্যাংকে আমানত রাখতে আসছেন বলে জানান সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘শরিয়াহভিত্তিক কয়েকটি ব্যাংকসহ বেসরকারি কিছু ব্যাংকের বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে মানুষ আতঙ্কিত। ওই ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা আমানত তুলে নিচ্ছেন। তবে সোনালীসহ রাষ্ট্রায়ত্ত কয়েকটি ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি বেশ ভালো। সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের প্রতি মানুষের আস্থা পুরোপুরি না ফেরা পর্যন্ত আমানত প্রত্যাশিত মাত্রায় বাড়বে না।’