সরকারি ড্যাশবোর্ড ও সংবাদমাধ্যমের সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা যাচ্ছে, দেশে কোভিড-১৯–এ মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ ৫০০ জনেই স্থির৷ শেষ ২৪ ঘণ্টায় ১৩৪টি পরীক্ষায় নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে ১৫ জনের মধ্যে, এবং কোনও মৃত্যু হয়নি; পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১১.২ শতাংশ (মহামারির শুরুর পর সর্বনিম্ন পরীক্ষার একেবারে কাছাকাছি ধাপ) ।
হাসপাতাল : শয্যা খালি, প্রস্তুতির দৌড়
সারা দেশে কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড শয্যা রয়েছে ১৮ ০১৪টি, আর ভর্তি রোগী মাত্র ৮৬০ জন—অর্থাৎ দখল ৫ শতাংশেরও কম। আইসিইউ-সংকট তুলনামূলক স্থির থাকলেও চট্টগ্রামের দুটি হাসপাতালে সব ভেন্টিলেটর অকেজো, আর খুলনায় কয়েকটি ইউনিটে মেয়াদোত্তীর্ণ কিটে পরীক্ষা আটকে আছে।

সরকারী ছুটি–পরবর্তী মাঠের বাস্তবতা
৫-৯ জুনের ঈদ-উল-আজহার লম্বা ছুটিতে বেশির ভাগ সরকারি আরটি-পিসিআর ল্যাব ও অনেক উপজেলা হাসপাতালের পরীক্ষা বন্ধ ছিল। ঢাকায় ছুটি-শেষের জনস্রোত সামলাতে গণপরিবহনে মাস্ক বাধ্যতামূলক ঘোষণা করা হলেও বাস্তবে মানা হচ্ছে সামান্যই। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১১ দফা নতুন নির্দেশনা জারি করেছে—গণপরিবহনে বাধ্যতামূলক মাস্ক, বড় সমাবেশ এড়িয়ে চলা ইত্যাদি।
টেস্ট কিট : ঘাটতি কাটছে না
বরিশাল-সিলেটের কয়েকটি জেলায় আর কোনও দ্রুত-পরীক্ষার কিট মজুত নেই; চট্টগ্রামে এরই মধ্যে বেশির ভাগ কিটের মেয়াদ শেষ৷ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল শুধু আইসিইউ-যন্ত্রাংশ নয়, ৫ হাজার নতুন কিটের জরুরি চাহিদা জানিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ‘আগামী ১০ দিনের মধ্যে’ নতুন কিট সরবরাহ ও বিকেন্দ্রীকৃত পরীক্ষা-কেন্দ্র চালু করা হবে।

টিকা : সীমিত মজুত, অগ্রাধিকার ঝুঁকিপূর্ণদেরই
দেশে আপাতত প্রায় ১৭ লাখ ডোজ টিকা অবশিষ্ট; এগুলোর বেশির ভাগের মেয়াদ আগস্টের শুরুতেই শেষ হবে। ৬০-উর্ধ্ব, সম্মুখসারির কর্মী ও কোমর্বিডিটিযুক্ত নাগরিকদের অগ্রাধিকার তালিকা ধরে আবার সীমিত টিকাদান শুরু করতে যাচ্ছে DGHS। নতুন প্রজন্মের ওমিক্রন-নির্দেশিত টিকা এখনো দেশে আসেনি, ফলে কর্তৃপক্ষ বিদ্যমান ডোজ ব্যবহারে জোর দিচ্ছে
স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞদের মতে, কম শনাক্তের মানে নিশ্চিন্ত থাকা নয়; বরং কম পরীক্ষা প্রকৃত চিত্র আড়াল করতে পারে। তাই—
- বিশেষ নজর : বয়স্ক ও কোমর্বিড রোগীদের টিকা-কভারেজ বাড়ানো
- পর্যাপ্ত কিট : দ্রুত আমদানি ও বিভাগভিত্তিক বণ্টন
- নিয়মিত নজরদারি : উৎসবপরবর্তী ভিড়েও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা
- হাসপাতাল-প্রস্তুতি : অক্সিজেন সরবরাহ, আইসিইউ-শয্যা ও ভেন্টিলেটর সচল রাখা

মহামারির আপাতদৃষ্টিতে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পরীক্ষা ও টিকা কর্মসূচি গতি না পেলে নতুন কোনও ভ্যারিয়েন্ট অস্বস্তিকর চমক দিতে পারে—এমনটাই সতর্কবার্তা বিশেষজ্ঞদের।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















