০৬:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
মুহুরী নদী: একটি আন্তঃসীমান্ত নদীর গল্প — উৎস, জীবন ও চিরস্থায়ী সংকট মার্কিন-দক্ষিণ কোরিয়া বাণিজ্য চুক্তির পর দেশে বড় বিনিয়োগ ঘোষণা স্যামসাং ও হিউন্দাইয়ের চীন সফরে জার্মান অর্থমন্ত্রী: বাণিজ্য ঘাটতি, রেয়ার আর্থ সংকট ও ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েনে নতুন উত্তেজনা রাশিয়ার নোভোরোসিস্ক বন্দর আবারও তেল রফতানি শুরু করেছে  সাফা কবির: আলো-অন্ধকার ছুঁয়ে উঠে আসা এক তারকার আত্মজয়ের গল্প বিশাল উলি ম্যামথ ‘ইউকা’র জমাট দেহে চমকপ্রদ আবিষ্কার জামায়াত নেতার গাড়িতে অগ্নিসংযোগ মরমন স্ত্রীদের গোপন জীবন: আমেরিকার সাংস্কৃতিক বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি আইফোন পকেট: স্টাইলিশ নাকি অর্থের অপচয়? নস্ট্যালজিয়ায় জোয়ার—বয়স্কদের লেগো-ক্রেজ বাড়াচ্ছে নতুন প্রবণতা

এ বছর চট্টগ্রাম হয়ে আগেই ঢাকায় ঢুকেছে মৌসুমী বায়ু : বৃষ্টি ও উত্তাল সমুদ্র

ঢাকায় মেঘবৃষ্টির রাজত্ব

১৮, ১৯ ও ২০ জুন—ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে মেঘলা আকাশ, গুমোট গরম এবং মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।

১৮ জুন (মঙ্গলবার): সকাল থেকেই হালকা বৃষ্টি শুরু হয় , বেলা বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে বৃষ্টির মাত্রা বাড়বে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে প্রায় ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর সর্বনিম্ন ২৫ ডিগ্রি।

১৯ জুন (বুধবার): দিনের শুরুতে দমকা হাওয়া ও গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টি। দুপুর থেকে কখনো রোদ, কখনো মেঘলা আকাশের সঙ্গে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হতে পারে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ২৯ ডিগ্রি।

২০ জুন (বৃহস্পতিবার): সকালবেলা হালকা বৃষ্টি হলেও দুপুরের পর থেকে স্থায়ীভাবে বৃষ্টি পড়তে পারে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩০ ডিগ্রি, আর সর্বনিম্ন ২৬ ডিগ্রি।

ঢাকার সড়কগুলোর জলাবদ্ধতা, যানজট এবং কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা বাড়তে পারে এই তিন দিনে।

মৌসুমী বায়ুর বর্তমান অবস্থা ও স্থায়িত্ব

চলতি বছর স্বাভাবিকের তুলনায় আগেভাগেই দেশে প্রবেশ করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। মে মাসের শেষ সপ্তাহে এটি কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম হয়ে রাজধানীতে পৌঁছেছে; এখন এটি সমগ্র বাংলাদেশে সক্রিয়।

বাংলাদেশে সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকে, তবে কিছু বছর এটি অক্টোবরের প্রথম ভাগ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ বলছে, এ বছরও সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি ও নিম্নচাপের প্রভাব সক্রিয় থাকতে পারে।

সমুদ্র ও উপকূলীয় সতর্কতা

বাংলাদেশ সমুদ্র উপকূল বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। বঙ্গোপসাগর ও উপকূলীয় এলাকায় ঢেউয়ের উচ্চতা বেড়েছে, বাতাসের গতিও বেড়েছে।

এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। জেলেদের জন্য সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে—আগামী কয়েক দিন যেন তারা গভীর সমুদ্রে না যায়, সেই অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বন্দর ও বাণিজ্যে প্রভাব

চট্টগ্রাম বন্দরে ইতিমধ্যেই বৃষ্টির কারণে কনটেইনার খালাসে বিলম্ব হচ্ছে। কিছু জাহাজ ৫–৬ দিন অপেক্ষা করছে। ঈদ-পরবর্তী ছুটির সঙ্গে মিলে এই বৃষ্টিপাত বন্দরের কার্যক্রমে বাড়তি চাপ তৈরি করেছে।

পায়রা ও মোংলা বন্দরে সীমিত কার্যক্রম চলছে। সেখানেও গুদাম ও সংযোগ সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে।

জীবনযাত্রায় প্রভাব ও পরামর্শ

ঢাকার রাস্তায় বৃষ্টি মানেই যানজট, অফিসপাড়ায় পানি জমে যাওয়া আর ব্যস্ত মানুষের দুশ্চিন্তা। তবে অনেকেই আবার তাপদাহের পর একটানা বৃষ্টি-কে স্বস্তি হিসেবেই দেখছেন।

আবহাওয়াবিদদের মতে, সামনের ১০ দিন এরকম বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।

পরামর্শ

  • শহরে চলাচলের সময় ছাতা ও বৃষ্টির উপযোগী পোশাক রাখুন
  • ট্রাফিক পরিস্থিতি বুঝে আগেভাগেই রওনা দিন
  • কৃষকরা পানি-ব্যবস্থাপনায় বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করুন
  • জেলেরা সতর্ক সংকেত মেনে চলুন ও সমুদ্রে না যান
  • বন্দরে পণ্য খালাসে বিলম্ব মাথায় রেখে পরিকল্পনা করুন

এই বর্ষা আমাদের জীবনে যেমন কাব্যিক আবহ তৈরি করে, তেমনই বাস্তব জগতেও আনে নতুন চ্যালেঞ্জ। প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে জীবনের ছন্দে থাকাই এ মৌসুমে সবচেয়ে বড় বুদ্ধিমত্তা।

জনপ্রিয় সংবাদ

মুহুরী নদী: একটি আন্তঃসীমান্ত নদীর গল্প — উৎস, জীবন ও চিরস্থায়ী সংকট

এ বছর চট্টগ্রাম হয়ে আগেই ঢাকায় ঢুকেছে মৌসুমী বায়ু : বৃষ্টি ও উত্তাল সমুদ্র

০৪:৩৬:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

ঢাকায় মেঘবৃষ্টির রাজত্ব

১৮, ১৯ ও ২০ জুন—ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে মেঘলা আকাশ, গুমোট গরম এবং মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।

১৮ জুন (মঙ্গলবার): সকাল থেকেই হালকা বৃষ্টি শুরু হয় , বেলা বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে বৃষ্টির মাত্রা বাড়বে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে প্রায় ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর সর্বনিম্ন ২৫ ডিগ্রি।

১৯ জুন (বুধবার): দিনের শুরুতে দমকা হাওয়া ও গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টি। দুপুর থেকে কখনো রোদ, কখনো মেঘলা আকাশের সঙ্গে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হতে পারে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ২৯ ডিগ্রি।

২০ জুন (বৃহস্পতিবার): সকালবেলা হালকা বৃষ্টি হলেও দুপুরের পর থেকে স্থায়ীভাবে বৃষ্টি পড়তে পারে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩০ ডিগ্রি, আর সর্বনিম্ন ২৬ ডিগ্রি।

ঢাকার সড়কগুলোর জলাবদ্ধতা, যানজট এবং কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা বাড়তে পারে এই তিন দিনে।

মৌসুমী বায়ুর বর্তমান অবস্থা ও স্থায়িত্ব

চলতি বছর স্বাভাবিকের তুলনায় আগেভাগেই দেশে প্রবেশ করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। মে মাসের শেষ সপ্তাহে এটি কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম হয়ে রাজধানীতে পৌঁছেছে; এখন এটি সমগ্র বাংলাদেশে সক্রিয়।

বাংলাদেশে সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকে, তবে কিছু বছর এটি অক্টোবরের প্রথম ভাগ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ বলছে, এ বছরও সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি ও নিম্নচাপের প্রভাব সক্রিয় থাকতে পারে।

সমুদ্র ও উপকূলীয় সতর্কতা

বাংলাদেশ সমুদ্র উপকূল বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। বঙ্গোপসাগর ও উপকূলীয় এলাকায় ঢেউয়ের উচ্চতা বেড়েছে, বাতাসের গতিও বেড়েছে।

এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। জেলেদের জন্য সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে—আগামী কয়েক দিন যেন তারা গভীর সমুদ্রে না যায়, সেই অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বন্দর ও বাণিজ্যে প্রভাব

চট্টগ্রাম বন্দরে ইতিমধ্যেই বৃষ্টির কারণে কনটেইনার খালাসে বিলম্ব হচ্ছে। কিছু জাহাজ ৫–৬ দিন অপেক্ষা করছে। ঈদ-পরবর্তী ছুটির সঙ্গে মিলে এই বৃষ্টিপাত বন্দরের কার্যক্রমে বাড়তি চাপ তৈরি করেছে।

পায়রা ও মোংলা বন্দরে সীমিত কার্যক্রম চলছে। সেখানেও গুদাম ও সংযোগ সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে।

জীবনযাত্রায় প্রভাব ও পরামর্শ

ঢাকার রাস্তায় বৃষ্টি মানেই যানজট, অফিসপাড়ায় পানি জমে যাওয়া আর ব্যস্ত মানুষের দুশ্চিন্তা। তবে অনেকেই আবার তাপদাহের পর একটানা বৃষ্টি-কে স্বস্তি হিসেবেই দেখছেন।

আবহাওয়াবিদদের মতে, সামনের ১০ দিন এরকম বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।

পরামর্শ

  • শহরে চলাচলের সময় ছাতা ও বৃষ্টির উপযোগী পোশাক রাখুন
  • ট্রাফিক পরিস্থিতি বুঝে আগেভাগেই রওনা দিন
  • কৃষকরা পানি-ব্যবস্থাপনায় বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করুন
  • জেলেরা সতর্ক সংকেত মেনে চলুন ও সমুদ্রে না যান
  • বন্দরে পণ্য খালাসে বিলম্ব মাথায় রেখে পরিকল্পনা করুন

এই বর্ষা আমাদের জীবনে যেমন কাব্যিক আবহ তৈরি করে, তেমনই বাস্তব জগতেও আনে নতুন চ্যালেঞ্জ। প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে জীবনের ছন্দে থাকাই এ মৌসুমে সবচেয়ে বড় বুদ্ধিমত্তা।