যে কোনো দেশই হোক—গণতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক বা অথরিটেরিয়ান যেকোনো শাসন পদ্ধতিরই হোক না কেন—রাষ্ট্র সবসময়ই পরিচালিত হয় রাষ্ট্রের সঙ্গে পরিচিত মধ্যবিত্ত এলিটদের মাধ্যমে। এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এলিট বা অথরিটেরিয়ান সরকার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শ্রমিক শ্রেণী বা নিম্নবর্গীয় মানুষ মিলে যে সকল সফল বিপ্লব করেছে, তার নেতৃত্বও ছিল এই মধ্যবিত্ত এলিটদের হাতে। যেমন রাশিয়ার বিপ্লবে লেনিন, কিউবার বিপ্লবে ফিদেল কাস্ত্রো, এমনকি চীনের বিপ্লবে মাও দেজে-ডং।
অন্যদিকে কোনো রাষ্ট্রে যখন মধ্যবিত্ত এলিটের শাসন ভেঙ্গে পড়ে—সেটা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হোক বা অন্য কোনো পদ্ধতির শাসন ব্যবস্থা হোক—তখন রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সামরিক এলিটদের এগিয়ে আসতে হয়। কারণ মধ্যবিত্ত এলিট অর্থাৎ সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের মাধ্যমে গড়ে ওঠা শ্রেণী ছাড়া কখনই রাষ্ট্রকে স্থিতিশীল করা সম্ভব নয়।
রাষ্ট্র যদি দীর্ঘকালীন অস্থিতিশীলতায় পড়ে, তখন স্বাভাবিকভাবেই রাষ্ট্রকে স্থিতিশীল করতে সামরিক বাহিনীকে এগিয়ে আসতে হয়। তবে সামরিক শাসন সবসময়ই সাময়িক; এক পর্যায়ে তারা সিভিল শাসন প্রতিষ্ঠা করে, এমনকি নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেও ফিরে আসে, যার ফলে রাষ্ট্র আবার স্বাভাবিক ধারাবাহিকতায় ফিরে যায়। কিন্তু প্রকৃত অর্থে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হলে মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দলের উপরই নির্ভর করতে হয়—কারণ তারা সমাজের বড় অংশ, মধ্যবিত্তের প্রতিনিধি।
সুতরাং কোনো রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, ধারাবাহিক উন্নয়ন ও শাসন পরিচালনার জন্য মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দলকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা মূলত রাষ্ট্রকে কোনো না কোনো খাদে ফেলে দেয়ার প্রচেষ্টা মাত্র।