০২:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

নির্বাচন নিয়ে সংশয় এখন বিএনপির কাছেও স্পষ্ট, স্থিতিশীলতা কবে?

  • স্বদেশ রায়
  • ০৮:০০:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
  • 153

লন্ডনে ইউনূস-তারেক বৈঠকের পরে একটা লেখায় লিখেছিলাম এই বৈঠকের ফল কী হবে তা সময় বলবে। সময় একটু একটু করে বলতে শুরু করেছে। বিএনপির সিনিয়র নেতা মির্জা আব্বাস তার কর্মীদের হুঁশিয়ার থাকতে বলেছেন, কারণ তিনি মনে করেন দেশে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার একটা পায়তারা চলছে। আর এর পরিণতি দেশের জন্য ভালো হবে না।

অন্যদিকে বিএনপির অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতা মি. সালাউদ্দিন আহমেদ শামসুর রাহমানের কবিতার অনুকরণে বলেছেন, “তোমাকে পাওয়ার জন্য হে সংস্কার… আর কত…”। ছাত্রজীবনে ও চাকুরি জীবনে সালাউদ্দিন আহমেদ মেধাবী ছাত্র ও অফিসার ছিলেন। তাই তার সেই বুদ্ধিমত্তার ঝিলিকের মাধ্যমে তিনি সত্যটি প্রকাশ করেছেন। মির্জা আব্বাসকে চল্লিশ বছরের বেশি সময় ধরে চিনি। মাঠ থেকে উঠে আসা রাজনীতিক তিনি। তিনি তাই মি. সালাউদ্দিনের মতো উপমার মাধ্যমে কোনো কিছু বলেননি। তিনি সরাসরি তার কর্মীদের হুঁশিয়ার করেছেন, দেশ ভালো পরিণতির দিকে যাচ্ছে না।

সালাউদ্দিন আহমেদ বাস্তবে আরও কঠোর সত্যটি বলেছেন, কারণ তিনি শামসুর রাহমানের যে কবিতার প্রথম চার লাইন থেকে ওই প্যারোডিটি তৈরি করেছেন ওই চার লাইন সকলেই জানেন, তার পরেও লেখার স্বার্থে একটু উল্লেখ করছি—
“তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,/ তোমাকে পাওয়ার জন্যে/ আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়? আর কতবার দেখতে হবে খান্ডবদাহন?”।

শামসুর রাহমানের কবিতার এই চার লাইন বা প্রথম স্তবকটি কবি শেষ করেছেন মহাভারত নিয়ে গিয়ে। তিনি বলছেন, আর কতবার দেখতে হবে “খান্ডবদাহন”। খান্ডবদাহন মহাভারতের ঘটনা। যেহেতু অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ও সরকারি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন আহমেদ কবি শামসুর রাহমানের এই কবিতাটি বেছে নিয়েছেন প্যারোডি তৈরি করতে, সেটা তিনি নিশ্চয়ই একেবারে শুধু বলার জন্যেই বেছে নিয়েছেন। তিনি জানেন, খান্ডবদাহন কী, রক্তগঙ্গাও কী। এই দুইয়ের শিকার সাধারণ মানুষ।

তাই মির্জা আব্বাস যেমন সরাসরি তার কর্মীদের হুঁশিয়ার করেছেন, সালাউদ্দিন আহমেদও সংস্কারের জন্যে জাতির এ অপেক্ষার বিষয়টির শেষ করতে পারবে যে জনগণ আর তার জন্য জনগণের পরিণতি কী হয়- সেই সত্য আমাদের কালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি শামসুর রাহমানের কবিতার লাইনগুলো দিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছেন। এখানে মির্জা আব্বাস ও সালাউদ্দিন আহমেদ দুজনেরই বক্তব্যের মূল সুর এক। মির্জা আব্বাস বলেছেন, দেশের পরিণতি ভয়াবহ হবে। দেশের অর্থাৎ মানুষের কথাই তিনি বলেছেন।

আর শামসুর রাহমানের ওই কবিতায় যে রক্তগঙ্গার কথা বলা হয়েছে ওই রক্তগঙ্গা কাদের রক্তে হয় তা উল্লেখ করার প্রয়োজন পড়ে না। খান্ডবদাহনে শুধু জীব-জন্তু পুড়ে শেষ হয়নি, সাধারণ মানুষ অর্থাৎ যাদেরকে সেখানে নিষাদ বলা হয় সেখানে তারাও পুড়ে শেষ হয়েছিল। আর ওই জীব, পাখি মূলত সাধারণ মানুষেরই প্রতীক।

যাহোক, মেধাবী সালাউদ্দিন আহমেদ যেহেতু বিষয়টি মহাভারত-এ নিয়ে গেছেন। তাই যদিও এখনও পুরোপুরি বলার সময় আসেনি, তারপরেও ইউনূস-তারেক রহমান বৈঠকটিও কিন্তু মহাভারতের আলোকে একটু বিশ্লেষণ করার সময় এই সামান্য সময় পার হবার পরে এসেছে।

এখন অনেকে এভাবে হিসেব করতে পারেন ইউনূস-তারেক বৈঠকটি ছিল মূলত গত দশ মাসে ইউনূস সরকারের “মেটিকুলাস ডিজাইনে” সারাদেশে বিএনপির যে বস্ত্র হরণ হয়েছে সেই বস্ত্রহীন বিএনপির প্রতীক দ্রৌপদীর বৃদ্ধ, চতুর, ক্ষমতালোভী রাজা ধৃতরাষ্ট্রের কাছে বর চাওয়ার মতো। দ্রৌপদী কী বর চেয়েছিলেন তা আমরা সকলে জানি। এবং এও জানি দ্রৌপদী দুটো বরের মধ্যে একটিতেও তার স্বামীদের হারানো রাজ্য ফিরে চাননি। কারণ, দ্রৌপদী মহাভারতে সবচেয়ে সাহসী চরিত্র, সেই মূলত আমার মতে মহাভারতের নায়ক। এবং কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ অর্জুনকে তিনিই করতে বলেছিলেন। যাহোক, সে গেল ভিন্ন প্রসঙ্গ।

দ্রৌপদীর রাজ্য ফিরে না চাওয়ার কারণ ছিল- তিনি জানতেন, তার স্বামীরা বীর। তারা যুদ্ধ করে তাদের রাজ্য পুনরুদ্ধার করবে। তারেক রহমান নির্বাচনের দিন-তারিখের জন্য রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে, তার জনগণের ওপর নির্ভর করে আছেন না তিনি ইউনূসের ওই শর্ত সাপেক্ষে দোদুল্যমান শব্দে – যদি হয়, যদি হয়, তাহলে অমুক অমুক … তার ওপর বিশ্বাস করে আছেন তা অবশ্য তার দলের নেতারা জানেন হয়তো – তবে জনগণ ও আমাদের মতো ক্ষুদ্র সাংবাদিকরা আমরা জানি না।

তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার দিন তিনেক আগে যে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেছেন সে বিষয়ে বিবিসিকে বলেছেন, সেটা ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ। নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। আর এতদিনে বাংলাদেশের মানুষের কাছে মনে হয় পরিষ্কার হয়ে গেছে ইউনূস সাহেব দ্রুত কোনো নির্বাচন দেবেন না।

নির্বাচন না দেওয়ার বেশ কয়েকটি চিহ্ন ইতোমধ্যে পরিষ্কার। যার একটি চোখে আঙুল দিয়ে বিএনপির কর্মীদের মির্জা আব্বাস দেখিয়ে দিয়েছেন, ২৮ জুনের জনসভায় যেখানে ইউনূসের আশীর্বাদপুষ্ট “মেটিকুলাস ডিজাইনের” কুশীলবদের দলও গিয়েছিল সেখানে তারা দ্রুত নির্বাচনের বিপক্ষে বলেছে। ওই জনসভা থেকেও নির্বাচনের বিপক্ষে কথা আসে।

তবে ওখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা মির্জা আব্বাস এনেছেন, তা হলো ওই দলগুলোর ভোটের অবস্থা। বাস্তবে ওই জনসভায় সোহরাওয়ার্দীতে যত লোকই আসুক না কেন, তারা মোট ১১ কোটির বেশি ভোটের কত শতাংশ। ভোটের মাঠে কি তাদের এক শতাংশ ভোট আছে! আর ওদের সঙ্গে আছে জামায়াতে ইসলামী। বাংলাদেশের নির্বাচনী রেকর্ড অনুযায়ী তাদের ভোট ৫% এর বেশি কখনও হয়নি।

অন্যদিকে মুহাম্মদ ইউনূসের দোদুল্যমান কৌশলে আওয়ামী লীগ এখন রাজনীতি ও নির্বাচনের বাইরে। যে দলটি কখনও এ দেশে ৩১ শতাংশের কম ভোট পায়নি। নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সবসময়েই কম মার্জিনেই হারে বা জেতে। তাই বিএনপি নির্বাচন বয়কট করলে বা বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখলে এ দেশে ২০১৪ বা ২০২৪ সালের মতো নির্বাচন হয়। আবার আওয়ামী লীগকে বাইরে রাখলে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হয়।

এখানেই নির্বাচন ও গণতন্ত্রের একটি বড় হিসাব দেশবাসীর ও বিএনপির সামনে। যে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাদের অপরাধের বিচার হতে পারে। এটা খুবই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু দলটিকে যখন নির্বাচনের বাইরে রাখা হয় তখন একটু ভেবে দেখার প্রশ্ন আসে, এখানে আঁচলের নিচে কী আছে! এখানে আঁচলের নিচে যা খুঁজে পাওয়া যাবে তা স্পষ্ট, নির্বাচন যদি হয় তাও গণতন্ত্র আসবে না। অর্থাৎ একটি পনেরোই ফেব্রুয়ারি বা ২০১৪ বা ২০২৪ এর নির্বাচন হবে। যেখানে ভোটার আসবে না।

অনেক বিশ্লেষক দেখছি এখন হিসেব করছেন, আওয়ামী লীগের ভোটাররা কাকে ভোট দেবে? কেউ বলছেন বিএনপিকে, কেউ বলছেন জামায়াতকে? কেউ কেউ বলছেন বাচ্চাদের ওই দলটিকে। তারা সবাই অনেক প্রাজ্ঞ ব্যক্তি। তবে আমার ব্যক্তিগত মত একটু ভিন্ন।

যেমন সম্প্রতি একজন ভারতীয় সাংবাদিক, সে আমার অত্যন্ত স্নেহের ছোট ভাইয়ের মতো। আমাকে প্রশ্ন করেছিল, দাদা, আওয়ামী লীগ তো কংগ্রেসের মতো শেষ হয়ে গেল। সে দেশে কংগ্রেস শেষ হয়ে গেছে কিনা তার মতো অমন সরল রেখায় আমি হিসাব করবো না। যাহোক সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ।

আমি তাকে উত্তর দিয়েছিলাম, দেখ, তুমি তোমার দেশের রাজনীতি বা অন্য দেশের রাজনীতি দিয়ে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগকে বিচার কোরো না। বরং তুমি যে ধর্মীয় পরিবারে জন্ম নিয়েছো সেই ধর্ম অনুযায়ী আওয়ামী লীগকে বিচার করতে পারো। কারণ, আওয়ামী লীগ যারা করে তাদেরকে আমি বেশ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি, “আওয়ামী লীগ” তাদের কাছে শুধু একটা রাজনৈতিক দল নয়, আওয়ামী লীগ তাদের কাছে একটি রিলিজিয়নের মতো। কারণ তাদের একজন কাল্ট আছেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমান। আর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ঘরে আওয়ামী লীগই জন্মায়। এর সংখ্যা কমপক্ষে এ দেশে ৩০%। তারা নিবেদিত।

আওয়ামী লীগের সমস্যা হলো তারা ক্ষমতায় এলে তাদের ওপর ভিন্নরা ভর করে। আর এই ত্রিশ পার্সেন্ট তখন মাটির নিচ দিয়ে প্রবাহিত ধারার মতো থাকে। তবে তারা তাদের বিশ্বাস বা তাদের ওই রাজনৈতিক ধর্ম ত্যাগ করে না।

ঠিক একইভাবে আমার ক্ষুদ্র চিন্তার মতামত আমি শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক আতাউস সামাদ ভাইয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত কথা প্রসঙ্গে বলেছিলাম। তিনি মারা যাবার কিছুদিন আগে একদিন তার নতুন বাসা দেখতে গেছি, সে সময়ে কথা প্রসঙ্গে তিনি বললেন, স্বদেশ, আওয়ামী লীগ যেভাবে বিএনপিকে নিঃশেষ করার চেষ্টা করছে বিএনপি এবার শেষ হয়ে যাবে – না কী মনে করো তুমি?

আমি বলি, সামাদ ভাই আমার মত এখানে একটু ভিন্ন। ১৯৭৫ এর পর থেকে আওয়ামী লীগের ওপর কম নির্যাতন যায়নি। তারপরেও তারা ২১ বছর পরে ক্ষমতায় ফিরে আসে। অন্যদিকে বিএনপি যারা করেন, তারাও এই বাংলাদেশের মানুষ, কেউ পাঞ্জাব বা সিন্ধু থেকে আসেনি। এই আওয়ামী লীগেরই কারোর চাচাতো ভাই না হয় ফুফাতো ভাই।

তা এক ভাই যদি একুশ বছর নানা প্রতিকূলতার মধ্যে টিকে থাকতে পারে আরেক ভাই কেন পারবে না? সামাদ ভাই আমার সিনিয়র, তার কাছে কাজ শিখেছি। তবে সম্পর্কটা খুবই ইনফরমাল ছিল। যখন তখন যে কোনো বিষয় নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলাপ হতো। সেদিনও তিনি প্রথমে বিএনপির অনেক দুর্বলতার কথা তুলে ধরলেন – তার বিশাল অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার থেকে।

তবে শেষ পর্যন্ত তিনি বললেন, মনে হয় বিএনপি টি

কে থাকবে। এবং পরে তার সেই মিষ্টি হাসিটা ফুটিয়ে তুলে বললেন, আসলে তোমাকে পরীক্ষা করছিলাম। বুঝলাম তিনিও মূলত এটাই বিশ্বাস করেন।

তারপরে তিনি তার অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার খুলে অনেক কথা বললেন, যা বহুবারও তিনি আমাকে বলেছেন। আর এটাই ছিল তার বিশ্বাস। তিনি মাঝে মাঝে তার দুহাতের তালু দেখিয়ে বলতেন, দেখ ৭১-এ নিজে গাড়ি চালিয়ে মায়া, রুমি এদের অস্ত্র এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে গেছি। আর ওই গোলাবারুদের গন্ধ মুছে ফেলার জন্য পেট্রোল দিয়ে হাত ধুয়েছি।

তাছাড়া আজ হয়তো অনেকেই জানে না, ওনার এক শুভানুধ্যায়ী ১৯৭১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তাকে তুলে নিয়ে যাবার জন্য স্বাধীনতা বিরোধী ছাত্ররা আসছে এ সংবাদ মিনিট দশেক আগে না দিলে ও তিনি বাড়ির পেছনের খাল দিয়ে পালাতে না পারলে – তাঁরও নাম থাকতো শহীদ বুদ্ধিজীবিদের তালিকায়।

যাহোক, তার বিশ্বাসের কথাটাই বলি, তিনি তার দীর্ঘ সাংবাদিকতা ও রাষ্ট্রকে দেখার অভিজ্ঞতা থেকে বলতেন, দেখ যতদিন এই দেশের মূল দুটি দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ না করবে এবং রাষ্ট্রীয় সর্বস্তরে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী মানুষ না বসবে – ততদিন এ দেশ স্থিতিশীলও হবে না, গণতন্ত্রও এখানে প্রতিষ্ঠিত হবে না।

বাস্তবে স্বাধীনতার পর থেকেই ৫৫ বছর ধরে দেশটি যে শুধু খাবি খাচ্ছে, বিভক্তির পরে বিভক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে – এর মূল কারণ এখানেই। যে চেতনায় দেশটির সৃষ্টি – শুরু থেকে আজ অবধি প্রকৃত পা সেই চেতনার ওপর সত্যি অর্থে রাখা হয়নি।

তবে পঞ্চান্ন বছর পরে আর খান্ডবদাহন নয়, আর রক্তগঙ্গা নয় – শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ তৈরি হোক এটাই সকলের কামনা। এ কারণেই সবার আগে দরকার স্থিতিশীল সরকার। যেখানে নারীরা ধর্ষিতা হবার ভয়ে লুকিয়ে বেড়াচ্ছে। লুঠের ভয়ে, মব-ভায়োলেন্সের ভয়ে ভুগছে অধিকাংশ মানুষ – সেখানে স্থিতিশীলতা কি অপেক্ষায় আসবে না বীরত্বে আসবে – তার জন্যেই এখন মানুষকে অপেক্ষা করতে হবে।

কারণ, মানুষ যতই শক্তিশালী হোক, সে সময়ের সন্তান – সময়ই সবসময় পৃথিবীর সকল কিছুর মূল নায়ক।

লেখক: সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিকসম্পাদকসারাক্ষণ ও The Present World.

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচন নিয়ে সংশয় এখন বিএনপির কাছেও স্পষ্ট, স্থিতিশীলতা কবে?

০৮:০০:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫

লন্ডনে ইউনূস-তারেক বৈঠকের পরে একটা লেখায় লিখেছিলাম এই বৈঠকের ফল কী হবে তা সময় বলবে। সময় একটু একটু করে বলতে শুরু করেছে। বিএনপির সিনিয়র নেতা মির্জা আব্বাস তার কর্মীদের হুঁশিয়ার থাকতে বলেছেন, কারণ তিনি মনে করেন দেশে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার একটা পায়তারা চলছে। আর এর পরিণতি দেশের জন্য ভালো হবে না।

অন্যদিকে বিএনপির অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতা মি. সালাউদ্দিন আহমেদ শামসুর রাহমানের কবিতার অনুকরণে বলেছেন, “তোমাকে পাওয়ার জন্য হে সংস্কার… আর কত…”। ছাত্রজীবনে ও চাকুরি জীবনে সালাউদ্দিন আহমেদ মেধাবী ছাত্র ও অফিসার ছিলেন। তাই তার সেই বুদ্ধিমত্তার ঝিলিকের মাধ্যমে তিনি সত্যটি প্রকাশ করেছেন। মির্জা আব্বাসকে চল্লিশ বছরের বেশি সময় ধরে চিনি। মাঠ থেকে উঠে আসা রাজনীতিক তিনি। তিনি তাই মি. সালাউদ্দিনের মতো উপমার মাধ্যমে কোনো কিছু বলেননি। তিনি সরাসরি তার কর্মীদের হুঁশিয়ার করেছেন, দেশ ভালো পরিণতির দিকে যাচ্ছে না।

সালাউদ্দিন আহমেদ বাস্তবে আরও কঠোর সত্যটি বলেছেন, কারণ তিনি শামসুর রাহমানের যে কবিতার প্রথম চার লাইন থেকে ওই প্যারোডিটি তৈরি করেছেন ওই চার লাইন সকলেই জানেন, তার পরেও লেখার স্বার্থে একটু উল্লেখ করছি—
“তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,/ তোমাকে পাওয়ার জন্যে/ আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়? আর কতবার দেখতে হবে খান্ডবদাহন?”।

শামসুর রাহমানের কবিতার এই চার লাইন বা প্রথম স্তবকটি কবি শেষ করেছেন মহাভারত নিয়ে গিয়ে। তিনি বলছেন, আর কতবার দেখতে হবে “খান্ডবদাহন”। খান্ডবদাহন মহাভারতের ঘটনা। যেহেতু অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ও সরকারি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন আহমেদ কবি শামসুর রাহমানের এই কবিতাটি বেছে নিয়েছেন প্যারোডি তৈরি করতে, সেটা তিনি নিশ্চয়ই একেবারে শুধু বলার জন্যেই বেছে নিয়েছেন। তিনি জানেন, খান্ডবদাহন কী, রক্তগঙ্গাও কী। এই দুইয়ের শিকার সাধারণ মানুষ।

তাই মির্জা আব্বাস যেমন সরাসরি তার কর্মীদের হুঁশিয়ার করেছেন, সালাউদ্দিন আহমেদও সংস্কারের জন্যে জাতির এ অপেক্ষার বিষয়টির শেষ করতে পারবে যে জনগণ আর তার জন্য জনগণের পরিণতি কী হয়- সেই সত্য আমাদের কালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি শামসুর রাহমানের কবিতার লাইনগুলো দিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছেন। এখানে মির্জা আব্বাস ও সালাউদ্দিন আহমেদ দুজনেরই বক্তব্যের মূল সুর এক। মির্জা আব্বাস বলেছেন, দেশের পরিণতি ভয়াবহ হবে। দেশের অর্থাৎ মানুষের কথাই তিনি বলেছেন।

আর শামসুর রাহমানের ওই কবিতায় যে রক্তগঙ্গার কথা বলা হয়েছে ওই রক্তগঙ্গা কাদের রক্তে হয় তা উল্লেখ করার প্রয়োজন পড়ে না। খান্ডবদাহনে শুধু জীব-জন্তু পুড়ে শেষ হয়নি, সাধারণ মানুষ অর্থাৎ যাদেরকে সেখানে নিষাদ বলা হয় সেখানে তারাও পুড়ে শেষ হয়েছিল। আর ওই জীব, পাখি মূলত সাধারণ মানুষেরই প্রতীক।

যাহোক, মেধাবী সালাউদ্দিন আহমেদ যেহেতু বিষয়টি মহাভারত-এ নিয়ে গেছেন। তাই যদিও এখনও পুরোপুরি বলার সময় আসেনি, তারপরেও ইউনূস-তারেক রহমান বৈঠকটিও কিন্তু মহাভারতের আলোকে একটু বিশ্লেষণ করার সময় এই সামান্য সময় পার হবার পরে এসেছে।

এখন অনেকে এভাবে হিসেব করতে পারেন ইউনূস-তারেক বৈঠকটি ছিল মূলত গত দশ মাসে ইউনূস সরকারের “মেটিকুলাস ডিজাইনে” সারাদেশে বিএনপির যে বস্ত্র হরণ হয়েছে সেই বস্ত্রহীন বিএনপির প্রতীক দ্রৌপদীর বৃদ্ধ, চতুর, ক্ষমতালোভী রাজা ধৃতরাষ্ট্রের কাছে বর চাওয়ার মতো। দ্রৌপদী কী বর চেয়েছিলেন তা আমরা সকলে জানি। এবং এও জানি দ্রৌপদী দুটো বরের মধ্যে একটিতেও তার স্বামীদের হারানো রাজ্য ফিরে চাননি। কারণ, দ্রৌপদী মহাভারতে সবচেয়ে সাহসী চরিত্র, সেই মূলত আমার মতে মহাভারতের নায়ক। এবং কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ অর্জুনকে তিনিই করতে বলেছিলেন। যাহোক, সে গেল ভিন্ন প্রসঙ্গ।

দ্রৌপদীর রাজ্য ফিরে না চাওয়ার কারণ ছিল- তিনি জানতেন, তার স্বামীরা বীর। তারা যুদ্ধ করে তাদের রাজ্য পুনরুদ্ধার করবে। তারেক রহমান নির্বাচনের দিন-তারিখের জন্য রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে, তার জনগণের ওপর নির্ভর করে আছেন না তিনি ইউনূসের ওই শর্ত সাপেক্ষে দোদুল্যমান শব্দে – যদি হয়, যদি হয়, তাহলে অমুক অমুক … তার ওপর বিশ্বাস করে আছেন তা অবশ্য তার দলের নেতারা জানেন হয়তো – তবে জনগণ ও আমাদের মতো ক্ষুদ্র সাংবাদিকরা আমরা জানি না।

তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার দিন তিনেক আগে যে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেছেন সে বিষয়ে বিবিসিকে বলেছেন, সেটা ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ। নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। আর এতদিনে বাংলাদেশের মানুষের কাছে মনে হয় পরিষ্কার হয়ে গেছে ইউনূস সাহেব দ্রুত কোনো নির্বাচন দেবেন না।

নির্বাচন না দেওয়ার বেশ কয়েকটি চিহ্ন ইতোমধ্যে পরিষ্কার। যার একটি চোখে আঙুল দিয়ে বিএনপির কর্মীদের মির্জা আব্বাস দেখিয়ে দিয়েছেন, ২৮ জুনের জনসভায় যেখানে ইউনূসের আশীর্বাদপুষ্ট “মেটিকুলাস ডিজাইনের” কুশীলবদের দলও গিয়েছিল সেখানে তারা দ্রুত নির্বাচনের বিপক্ষে বলেছে। ওই জনসভা থেকেও নির্বাচনের বিপক্ষে কথা আসে।

তবে ওখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা মির্জা আব্বাস এনেছেন, তা হলো ওই দলগুলোর ভোটের অবস্থা। বাস্তবে ওই জনসভায় সোহরাওয়ার্দীতে যত লোকই আসুক না কেন, তারা মোট ১১ কোটির বেশি ভোটের কত শতাংশ। ভোটের মাঠে কি তাদের এক শতাংশ ভোট আছে! আর ওদের সঙ্গে আছে জামায়াতে ইসলামী। বাংলাদেশের নির্বাচনী রেকর্ড অনুযায়ী তাদের ভোট ৫% এর বেশি কখনও হয়নি।

অন্যদিকে মুহাম্মদ ইউনূসের দোদুল্যমান কৌশলে আওয়ামী লীগ এখন রাজনীতি ও নির্বাচনের বাইরে। যে দলটি কখনও এ দেশে ৩১ শতাংশের কম ভোট পায়নি। নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সবসময়েই কম মার্জিনেই হারে বা জেতে। তাই বিএনপি নির্বাচন বয়কট করলে বা বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখলে এ দেশে ২০১৪ বা ২০২৪ সালের মতো নির্বাচন হয়। আবার আওয়ামী লীগকে বাইরে রাখলে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হয়।

এখানেই নির্বাচন ও গণতন্ত্রের একটি বড় হিসাব দেশবাসীর ও বিএনপির সামনে। যে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাদের অপরাধের বিচার হতে পারে। এটা খুবই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু দলটিকে যখন নির্বাচনের বাইরে রাখা হয় তখন একটু ভেবে দেখার প্রশ্ন আসে, এখানে আঁচলের নিচে কী আছে! এখানে আঁচলের নিচে যা খুঁজে পাওয়া যাবে তা স্পষ্ট, নির্বাচন যদি হয় তাও গণতন্ত্র আসবে না। অর্থাৎ একটি পনেরোই ফেব্রুয়ারি বা ২০১৪ বা ২০২৪ এর নির্বাচন হবে। যেখানে ভোটার আসবে না।

অনেক বিশ্লেষক দেখছি এখন হিসেব করছেন, আওয়ামী লীগের ভোটাররা কাকে ভোট দেবে? কেউ বলছেন বিএনপিকে, কেউ বলছেন জামায়াতকে? কেউ কেউ বলছেন বাচ্চাদের ওই দলটিকে। তারা সবাই অনেক প্রাজ্ঞ ব্যক্তি। তবে আমার ব্যক্তিগত মত একটু ভিন্ন।

যেমন সম্প্রতি একজন ভারতীয় সাংবাদিক, সে আমার অত্যন্ত স্নেহের ছোট ভাইয়ের মতো। আমাকে প্রশ্ন করেছিল, দাদা, আওয়ামী লীগ তো কংগ্রেসের মতো শেষ হয়ে গেল। সে দেশে কংগ্রেস শেষ হয়ে গেছে কিনা তার মতো অমন সরল রেখায় আমি হিসাব করবো না। যাহোক সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ।

আমি তাকে উত্তর দিয়েছিলাম, দেখ, তুমি তোমার দেশের রাজনীতি বা অন্য দেশের রাজনীতি দিয়ে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগকে বিচার কোরো না। বরং তুমি যে ধর্মীয় পরিবারে জন্ম নিয়েছো সেই ধর্ম অনুযায়ী আওয়ামী লীগকে বিচার করতে পারো। কারণ, আওয়ামী লীগ যারা করে তাদেরকে আমি বেশ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি, “আওয়ামী লীগ” তাদের কাছে শুধু একটা রাজনৈতিক দল নয়, আওয়ামী লীগ তাদের কাছে একটি রিলিজিয়নের মতো। কারণ তাদের একজন কাল্ট আছেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমান। আর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ঘরে আওয়ামী লীগই জন্মায়। এর সংখ্যা কমপক্ষে এ দেশে ৩০%। তারা নিবেদিত।

আওয়ামী লীগের সমস্যা হলো তারা ক্ষমতায় এলে তাদের ওপর ভিন্নরা ভর করে। আর এই ত্রিশ পার্সেন্ট তখন মাটির নিচ দিয়ে প্রবাহিত ধারার মতো থাকে। তবে তারা তাদের বিশ্বাস বা তাদের ওই রাজনৈতিক ধর্ম ত্যাগ করে না।

ঠিক একইভাবে আমার ক্ষুদ্র চিন্তার মতামত আমি শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক আতাউস সামাদ ভাইয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত কথা প্রসঙ্গে বলেছিলাম। তিনি মারা যাবার কিছুদিন আগে একদিন তার নতুন বাসা দেখতে গেছি, সে সময়ে কথা প্রসঙ্গে তিনি বললেন, স্বদেশ, আওয়ামী লীগ যেভাবে বিএনপিকে নিঃশেষ করার চেষ্টা করছে বিএনপি এবার শেষ হয়ে যাবে – না কী মনে করো তুমি?

আমি বলি, সামাদ ভাই আমার মত এখানে একটু ভিন্ন। ১৯৭৫ এর পর থেকে আওয়ামী লীগের ওপর কম নির্যাতন যায়নি। তারপরেও তারা ২১ বছর পরে ক্ষমতায় ফিরে আসে। অন্যদিকে বিএনপি যারা করেন, তারাও এই বাংলাদেশের মানুষ, কেউ পাঞ্জাব বা সিন্ধু থেকে আসেনি। এই আওয়ামী লীগেরই কারোর চাচাতো ভাই না হয় ফুফাতো ভাই।

তা এক ভাই যদি একুশ বছর নানা প্রতিকূলতার মধ্যে টিকে থাকতে পারে আরেক ভাই কেন পারবে না? সামাদ ভাই আমার সিনিয়র, তার কাছে কাজ শিখেছি। তবে সম্পর্কটা খুবই ইনফরমাল ছিল। যখন তখন যে কোনো বিষয় নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলাপ হতো। সেদিনও তিনি প্রথমে বিএনপির অনেক দুর্বলতার কথা তুলে ধরলেন – তার বিশাল অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার থেকে।

তবে শেষ পর্যন্ত তিনি বললেন, মনে হয় বিএনপি টি

কে থাকবে। এবং পরে তার সেই মিষ্টি হাসিটা ফুটিয়ে তুলে বললেন, আসলে তোমাকে পরীক্ষা করছিলাম। বুঝলাম তিনিও মূলত এটাই বিশ্বাস করেন।

তারপরে তিনি তার অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার খুলে অনেক কথা বললেন, যা বহুবারও তিনি আমাকে বলেছেন। আর এটাই ছিল তার বিশ্বাস। তিনি মাঝে মাঝে তার দুহাতের তালু দেখিয়ে বলতেন, দেখ ৭১-এ নিজে গাড়ি চালিয়ে মায়া, রুমি এদের অস্ত্র এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে গেছি। আর ওই গোলাবারুদের গন্ধ মুছে ফেলার জন্য পেট্রোল দিয়ে হাত ধুয়েছি।

তাছাড়া আজ হয়তো অনেকেই জানে না, ওনার এক শুভানুধ্যায়ী ১৯৭১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তাকে তুলে নিয়ে যাবার জন্য স্বাধীনতা বিরোধী ছাত্ররা আসছে এ সংবাদ মিনিট দশেক আগে না দিলে ও তিনি বাড়ির পেছনের খাল দিয়ে পালাতে না পারলে – তাঁরও নাম থাকতো শহীদ বুদ্ধিজীবিদের তালিকায়।

যাহোক, তার বিশ্বাসের কথাটাই বলি, তিনি তার দীর্ঘ সাংবাদিকতা ও রাষ্ট্রকে দেখার অভিজ্ঞতা থেকে বলতেন, দেখ যতদিন এই দেশের মূল দুটি দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ না করবে এবং রাষ্ট্রীয় সর্বস্তরে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী মানুষ না বসবে – ততদিন এ দেশ স্থিতিশীলও হবে না, গণতন্ত্রও এখানে প্রতিষ্ঠিত হবে না।

বাস্তবে স্বাধীনতার পর থেকেই ৫৫ বছর ধরে দেশটি যে শুধু খাবি খাচ্ছে, বিভক্তির পরে বিভক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে – এর মূল কারণ এখানেই। যে চেতনায় দেশটির সৃষ্টি – শুরু থেকে আজ অবধি প্রকৃত পা সেই চেতনার ওপর সত্যি অর্থে রাখা হয়নি।

তবে পঞ্চান্ন বছর পরে আর খান্ডবদাহন নয়, আর রক্তগঙ্গা নয় – শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ তৈরি হোক এটাই সকলের কামনা। এ কারণেই সবার আগে দরকার স্থিতিশীল সরকার। যেখানে নারীরা ধর্ষিতা হবার ভয়ে লুকিয়ে বেড়াচ্ছে। লুঠের ভয়ে, মব-ভায়োলেন্সের ভয়ে ভুগছে অধিকাংশ মানুষ – সেখানে স্থিতিশীলতা কি অপেক্ষায় আসবে না বীরত্বে আসবে – তার জন্যেই এখন মানুষকে অপেক্ষা করতে হবে।

কারণ, মানুষ যতই শক্তিশালী হোক, সে সময়ের সন্তান – সময়ই সবসময় পৃথিবীর সকল কিছুর মূল নায়ক।

লেখক: সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিকসম্পাদকসারাক্ষণ ও The Present World.