০১:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
পাকিস্তানে সীমাহীন শ্রমিক শোষণ আলেকজান্দ্রিয়ার প্রাসাদে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক: ক্লিওপেট্রা ও সিজারের কথোপকথন হিউএনচাঙ (পর্ব-১৪৯) বাংলাদেশে ইভ টিজিং- নারী মানসিক স্বাস্থ্য ও সামাজিক স্থিতিশীলতার সংকট এপি’র প্রতিবেদন: হাসিনা-বিরোধী বিদ্রোহের পরিণতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ মধুমতী নদী: দক্ষিনের যোগাযোগ পথ মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল ধ্বংস করা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর চিরসবুজ নায়িকা মৌসুমী: রূপালী পর্দার এক যুগের প্রতীক কাপ্তাই লেকের মাছের বৈচিত্র্য ও মাছ ধরার রীতি – পার্বত্য চট্টগ্রামের জলে জীবনের গল্প বাংলাদেশ–চায়না আপন মিডিয়া ক্লাব ও ডিআরইউ মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

নিভৃতে চলে গেলো মতিয়া চৌধুরীর জন্মদিন

  • Sarakhon Report
  • ০৫:৩৫:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
  • 174

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ বলতেন, তুমি এভাবে ইতিহাস নির্মাণ করো, যাতে ইতিহাস সৃষ্টি হবে কিন্তু তোমাকে ইতিহাসে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। মতিয়া চৌধুরী তেমনি ব্যক্তি প্রাপ্তির অনেক দূরে থেকে ইতিহাস নির্মাণ করে গেছেন ছয় দশকের বেশি সময় ধরে। অথচ বাস্তবে ব্যক্তি মতিয়া চৌধুরী ও ইতিহাস নির্মাতা মতিয়া চৌধুরীর নব্বই ভাগই দেশের মানুষের কাছে অজানা।

বাস্তবতা হলো প্রকৃত ইতিহাস নির্মাতারা বর্তমান সময়-এর কাছে, কেন ভবিষ্যতের কাছেও, কখনই কিছু চান না—তারা শুধুই ইতিহাস নির্মাণ করে যান অনেকটা ইতিহাস নির্মাণের জন্য প্রেরিত মানব হিসেবে। এবং যে জনগোষ্ঠীর জন্য তারা গেম চেঞ্জার হিসেবে কাজ করে যান, সে জনগোষ্ঠী তাদেরকে মনে রাখবে কি রাখবে না তা নিয়েও তাদের কোনো চাহিদা থাকে না। মতিয়া চৌধুরী তাদের দলেই। তিনি কখনও আশা করেননি তাঁর জন্মদিন বা মৃত্যুদিন পালিত হোক।

কিন্তু ইতিহাস বড় পাকা জহুরি—সে সময়-এর হাজার হাজার বছরের পাথর খুঁড়ে শুধু মনিরত্নটুকু ইতিহাসে রেখে দেয়। বাদবাকি সবই ময়লা হিসেবে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। সব জনগোষ্ঠীর সব উত্থান-পতনের প্রকৃত ইতিহাস লেখা হয় হাজার বছর পরে—ওই ইতিহাসে বড় ডাস্টবিনের বস্তুরাও থাকে না, থাকে শুধু প্রকৃত মনিমুক্তাটুকু।

বাংলাদেশ, বাঙালি জাতি আর বাঙালি নারীর বীরত্বের ইতিহাস হাজার বছর পরে যখন লেখা হবে—সেখানে উজ্জ্বল মনিরত্ন হিসেবেই উঠে আসবেন মতিয়া চৌধুরী। সেখানে হয়তো অধিকাংশ রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান বা খ্যাতিক্রেতা-বিক্রেতারা কেউ থাকবেন না। থাকবে কয়েক জেনারেশানের বাঙালি মধ্যবিত্ত ঘরে জন্ম নেওয়া এক নারী—যিনি দেশ ও মানুষের মুক্তির জন্য সারাজীবন শুধু সংগ্রাম করেননি, বাস করে গেছেন অতিসাধারণ এক জীবনযাত্রাকে মেনে নিয়ে। তাই অতি সাধারণ সুতির শাড়ি পরা মতিয়া চৌধুরীর ছবি বাঙালির ইতিহাস থেকে সরানোর ক্ষমতা কেউ রাখে না। মতিয়া চৌধুরী বাঙালি হিন্দু ও বাঙালি মুসলিম নারীদের মধ্যে একজনই জন্মেছেন, তাকে ইতিহাস সেই স্থানেই রাখবে। তাঁর কীর্তি ও তিনি—দুয়েই মহৎ। তাঁকে স্মরণ না করলে জাতি নিজের শক্তি আর শেকড় থেকে ছিটকে পড়বে, দুর্বল, অসংস্কৃত ও পশ্চাদপদ জাতি হিসেবে নিজেদের তৈরি করার দিকে ঠেলে দেবে।

যতদিন পদ্মা, মেঘনা, যমুনা বহমান থাকবে, ততদিন ছাত্র আন্দোলনের অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরী, স্বাধিকার সংগ্রামের মতিয়া চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা মতিয়া চৌধুরী এবং বাংলাদেশকে কিছু সময় এর জন্য হলেও মূলখাদ্য চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার কারিগর মতিয়া চৌধুরী ঠিকই থাকবেন—এ জাতির প্রকৃত সন্তানদের শিরায় বহমান।

পাকিস্তানে সীমাহীন শ্রমিক শোষণ

নিভৃতে চলে গেলো মতিয়া চৌধুরীর জন্মদিন

০৫:৩৫:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ বলতেন, তুমি এভাবে ইতিহাস নির্মাণ করো, যাতে ইতিহাস সৃষ্টি হবে কিন্তু তোমাকে ইতিহাসে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। মতিয়া চৌধুরী তেমনি ব্যক্তি প্রাপ্তির অনেক দূরে থেকে ইতিহাস নির্মাণ করে গেছেন ছয় দশকের বেশি সময় ধরে। অথচ বাস্তবে ব্যক্তি মতিয়া চৌধুরী ও ইতিহাস নির্মাতা মতিয়া চৌধুরীর নব্বই ভাগই দেশের মানুষের কাছে অজানা।

বাস্তবতা হলো প্রকৃত ইতিহাস নির্মাতারা বর্তমান সময়-এর কাছে, কেন ভবিষ্যতের কাছেও, কখনই কিছু চান না—তারা শুধুই ইতিহাস নির্মাণ করে যান অনেকটা ইতিহাস নির্মাণের জন্য প্রেরিত মানব হিসেবে। এবং যে জনগোষ্ঠীর জন্য তারা গেম চেঞ্জার হিসেবে কাজ করে যান, সে জনগোষ্ঠী তাদেরকে মনে রাখবে কি রাখবে না তা নিয়েও তাদের কোনো চাহিদা থাকে না। মতিয়া চৌধুরী তাদের দলেই। তিনি কখনও আশা করেননি তাঁর জন্মদিন বা মৃত্যুদিন পালিত হোক।

কিন্তু ইতিহাস বড় পাকা জহুরি—সে সময়-এর হাজার হাজার বছরের পাথর খুঁড়ে শুধু মনিরত্নটুকু ইতিহাসে রেখে দেয়। বাদবাকি সবই ময়লা হিসেবে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। সব জনগোষ্ঠীর সব উত্থান-পতনের প্রকৃত ইতিহাস লেখা হয় হাজার বছর পরে—ওই ইতিহাসে বড় ডাস্টবিনের বস্তুরাও থাকে না, থাকে শুধু প্রকৃত মনিমুক্তাটুকু।

বাংলাদেশ, বাঙালি জাতি আর বাঙালি নারীর বীরত্বের ইতিহাস হাজার বছর পরে যখন লেখা হবে—সেখানে উজ্জ্বল মনিরত্ন হিসেবেই উঠে আসবেন মতিয়া চৌধুরী। সেখানে হয়তো অধিকাংশ রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান বা খ্যাতিক্রেতা-বিক্রেতারা কেউ থাকবেন না। থাকবে কয়েক জেনারেশানের বাঙালি মধ্যবিত্ত ঘরে জন্ম নেওয়া এক নারী—যিনি দেশ ও মানুষের মুক্তির জন্য সারাজীবন শুধু সংগ্রাম করেননি, বাস করে গেছেন অতিসাধারণ এক জীবনযাত্রাকে মেনে নিয়ে। তাই অতি সাধারণ সুতির শাড়ি পরা মতিয়া চৌধুরীর ছবি বাঙালির ইতিহাস থেকে সরানোর ক্ষমতা কেউ রাখে না। মতিয়া চৌধুরী বাঙালি হিন্দু ও বাঙালি মুসলিম নারীদের মধ্যে একজনই জন্মেছেন, তাকে ইতিহাস সেই স্থানেই রাখবে। তাঁর কীর্তি ও তিনি—দুয়েই মহৎ। তাঁকে স্মরণ না করলে জাতি নিজের শক্তি আর শেকড় থেকে ছিটকে পড়বে, দুর্বল, অসংস্কৃত ও পশ্চাদপদ জাতি হিসেবে নিজেদের তৈরি করার দিকে ঠেলে দেবে।

যতদিন পদ্মা, মেঘনা, যমুনা বহমান থাকবে, ততদিন ছাত্র আন্দোলনের অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরী, স্বাধিকার সংগ্রামের মতিয়া চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা মতিয়া চৌধুরী এবং বাংলাদেশকে কিছু সময় এর জন্য হলেও মূলখাদ্য চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার কারিগর মতিয়া চৌধুরী ঠিকই থাকবেন—এ জাতির প্রকৃত সন্তানদের শিরায় বহমান।