যেসব বিষয়ের যথার্থতা খুব নির্ভুলভাবে নিরূপণ করা যায় না সে বিষয় সম্বন্ধে জোর করে কিছু বলা যায় না।
এর পর তিনি পূর্বদিকে তক্কমকানের মরুভূমির দক্ষিণ পাশ দিয়ে চললেন। এই ভয়ংকর মরুভূমির নাম তিনি বলেছেন, ‘বিশাল বহমান বালি’। ‘এখানে বালি সর্বদাই চলমান। পথের কোনো চিহ্ন নেই, তাই অনেক সময় পথ ভুল হয়ে যায়। চারিদিকে কেবল বালি ধুধু করছে। কোনো জল বা উদ্ভিদ নেই; কেবল গরম বাতাসের ঝড়। কি মানুষ কি পশু ঝড়ের সময় অজ্ঞান হয়ে যায়।
সব সময়েই গান বা শিষ দেওয়ার শব্দ, কখনো কখনো কান্নার শব্দ শোনা যায়। দেখতে দেখতে শুনতে শুনতে লোক হতভম্ব হয়ে যায়, অনেক সময়ে মরেও যায়। এসব ভূতপ্রেতের কাণ্ড।’
এইভাবে আসতে আসতে তিনি ‘না-ফো-পো’ (সম্ভবতঃ লবণরের) কাছে এলেন। এ পথের বিবরণ অরেল স্টাইন ও অন্যান্য অনেক আধুনিক ভ্রমণকারীর পুস্তকে পাওয়া যায়।
তার পর আবার গোবির মরুভূমির দক্ষিণপাশ দিয়ে হিউএনচাঙ চীনদেশে পৌঁছলেন।
তিনি নিজের ভ্রমণকাহিনীর শেষে কয়েকটি কথা লিখেছেন, যা সকল ভ্রমণকারীদেরই মনে রাখা উচিত। তিনি বলেছেন-
‘এ ভ্রমণবৃত্তান্তে প্রাকৃতিক দৃশ্যের কথা লিখেছি। যতদূর জানতে পেরেছি, দেশগুলির সীমানার বিবরণ দিয়েছি। জাতীয় আচার-ব্যবহারের গুণ-দোষ আবহাওয়ার বর্ণনা করেছি। নৈতিক আচরণের স্থিরতা নেই। লোকের রুচিও বিভিন্ন। যেসব বিষয়ের যথার্থতা খুব নির্ভুলভাবে নিরূপণ করা যায় না সে বিষয় সম্বন্ধে জোর করে কিছু বলা যায় না।
যেখানেই গিয়েছি যাত্রার বিবরণের স্মারক লিপি রেখেছি।’
চীনের সীমান্তে পৌঁছে হিউ এনচাঙ খোটান থেকে যে লোক, ঘোড়া আর উটগুলি এসেছিল সেগুলি ফেরত পাঠিয়ে দিলেন।
(চলবে)
সত্যেন্দ্রকুমার বসু 



















