০৩:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৫৩)

বিশ শতকের ঘাট দশকেও আবেদ অ্যান্ড কোং ছিল ঢাকার এ ধরনের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান।

… অদ্য ঢাকা নগরী একটি প্রধান রত্নে বিবর্জিতা হইল। (তিনি) এতন্নগরবাসীদিগের বহুল হিত সাধন করিয়া গিয়াছেন এবং সমুদয়ই তাঁহার নিকট কৃতজ্ঞতা সূত্রে আবদ্ধ আছেন। ইহারা সদালাপ ও মধুর ভাষণ কেহই বিস্মৃত হইতে সক্ষম নহেন। ফলত এমন প্রশান্ত মূর্ত্তি মৃদু মধুরভাষী উদার প্রকৃতি ইউরোপীয় ঢাকায় বোধহয় আর আইসেন নাই।””

সিম্পসনের চিকিৎসাপদ্ধতি এতই জনপ্রিয় ছিল যে, মেডিকেলের ছাত্রদের জন্য ১৮৭২ সালে তাঁর কিছু প্রেসক্রিপশন নিয়ে ১২ পাতার একটি পুস্তিকা প্রকাশিত হয়। গিরিশযন্ত্রে তা মুদ্রিত হয়।

নাম ফারমালেরি বুক অর্থাৎ মৃত ডাক্তার সিম্পসন সাহেবের চিকিৎসা প্রণালী, প্রথম ভাগ। পুস্তিকায় বর্ণিত একটি মিক্সচারের উপাদান- “রুমেটাজাম মিকচার।

শালফার সারলিমেন্ট ২ আউন্স, বাইটাট্রেট অফ পটাশ ১ আউন্স, পাংবেয়াই ২ ড্রাম। গয়েগাম রেজিন ১ ড্রাম হানি ১ পৌন্ড ডোজ ১ আউন্স হইতে ২ আউন্স পর্যন্ত দিনে ২ বার দিবে।”

ডেকোরেটর ও ক্যাটারার

উনিশ শতকের শেষার্ধে ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন শুরু করে। তখন উৎসবের বা অনুষ্ঠানের পরিবেশ তৈরি করা, প্রয়োজনীয় উপাদান যোগাড় করা, সুষ্ঠুভাবে খাবার বিতরণের জন্য ডেকোরেটর ও ক্যাটারের প্রয়োজন হয়। নবাব আহসান উল্লাহ তখন পিন্টু মিস্ত্রি নামে একজনকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেন এ ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার। পিন্টু নবদ্বীপ বসাক লেনে থাকতেন।

ওয়াইজ ঘাট যাবার পথে পিন্টু প্রতিষ্ঠা করেন ‘মেসার্স আবেদ অ্যান্ড কোং’। বিশ শতকের ঘাট দশকেও আবেদ অ্যান্ড কোং ছিল ঢাকার এ ধরনের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। ঢাকার প্রথম বেকারিও চালু করেন পিন্টু, ‘আবেদ অ্যান্ড কোং’ নামে। নাজিমউদ্দিন মোড়ের আমপট্টিতে ছিল এই বেকারি। গত শতকের চল্লিশ দশকে এর যাত্রা শুরু।

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৫২)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৫২)

জনপ্রিয় সংবাদ

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৫৩)

০৭:০০:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

বিশ শতকের ঘাট দশকেও আবেদ অ্যান্ড কোং ছিল ঢাকার এ ধরনের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান।

… অদ্য ঢাকা নগরী একটি প্রধান রত্নে বিবর্জিতা হইল। (তিনি) এতন্নগরবাসীদিগের বহুল হিত সাধন করিয়া গিয়াছেন এবং সমুদয়ই তাঁহার নিকট কৃতজ্ঞতা সূত্রে আবদ্ধ আছেন। ইহারা সদালাপ ও মধুর ভাষণ কেহই বিস্মৃত হইতে সক্ষম নহেন। ফলত এমন প্রশান্ত মূর্ত্তি মৃদু মধুরভাষী উদার প্রকৃতি ইউরোপীয় ঢাকায় বোধহয় আর আইসেন নাই।””

সিম্পসনের চিকিৎসাপদ্ধতি এতই জনপ্রিয় ছিল যে, মেডিকেলের ছাত্রদের জন্য ১৮৭২ সালে তাঁর কিছু প্রেসক্রিপশন নিয়ে ১২ পাতার একটি পুস্তিকা প্রকাশিত হয়। গিরিশযন্ত্রে তা মুদ্রিত হয়।

নাম ফারমালেরি বুক অর্থাৎ মৃত ডাক্তার সিম্পসন সাহেবের চিকিৎসা প্রণালী, প্রথম ভাগ। পুস্তিকায় বর্ণিত একটি মিক্সচারের উপাদান- “রুমেটাজাম মিকচার।

শালফার সারলিমেন্ট ২ আউন্স, বাইটাট্রেট অফ পটাশ ১ আউন্স, পাংবেয়াই ২ ড্রাম। গয়েগাম রেজিন ১ ড্রাম হানি ১ পৌন্ড ডোজ ১ আউন্স হইতে ২ আউন্স পর্যন্ত দিনে ২ বার দিবে।”

ডেকোরেটর ও ক্যাটারার

উনিশ শতকের শেষার্ধে ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন শুরু করে। তখন উৎসবের বা অনুষ্ঠানের পরিবেশ তৈরি করা, প্রয়োজনীয় উপাদান যোগাড় করা, সুষ্ঠুভাবে খাবার বিতরণের জন্য ডেকোরেটর ও ক্যাটারের প্রয়োজন হয়। নবাব আহসান উল্লাহ তখন পিন্টু মিস্ত্রি নামে একজনকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেন এ ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার। পিন্টু নবদ্বীপ বসাক লেনে থাকতেন।

ওয়াইজ ঘাট যাবার পথে পিন্টু প্রতিষ্ঠা করেন ‘মেসার্স আবেদ অ্যান্ড কোং’। বিশ শতকের ঘাট দশকেও আবেদ অ্যান্ড কোং ছিল ঢাকার এ ধরনের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। ঢাকার প্রথম বেকারিও চালু করেন পিন্টু, ‘আবেদ অ্যান্ড কোং’ নামে। নাজিমউদ্দিন মোড়ের আমপট্টিতে ছিল এই বেকারি। গত শতকের চল্লিশ দশকে এর যাত্রা শুরু।

(চলবে)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৫২)

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি- ৫২)