২০২৫ সালের *১৫ আগস্ট, মালয়েশিয়ার সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (AKPS) ভোররাতে **কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (KLIA)* এক বিশেষ অভিযান চালায়। ভোর *১টা থেকে ৭টা ৩০ মিনিট* পর্যন্ত পরিচালিত এই স্ক্রিনিং অভিযানে *১৮১ জন বিদেশিকে* পরীক্ষা করা হয়, যার মধ্যে *৯৮ জন বাংলাদেশিকে* যথাযথ কাগজপত্র না থাকায় *প্রবেশে বাধা* দেওয়া হয়।
বাংলাদেশিদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে *ভুয়া হোটেল বুকিং, **ফেরত টিকিট না থাকা, এবং **আর্থিক অক্ষমতা*। অনেকেই শ্রমিক ভিসা ছাড়াই পর্যটক ভিসার আড়ালে মালয়েশিয়ায় কাজ করতে আসছেন বলে সন্দেহ করছে কর্তৃপক্ষ।
ধারাবাহিকভাবে চলেছে ফিরিয়ে দেওয়া
এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কেএলআইএতে বাংলাদেশিদের ফিরে যাওয়ার প্রবণতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে:
* *১১ জুলাই*: ৯৬ জন বাংলাদেশিকে প্রবেশে বাধা
* *২৪ জুলাই*: ১২৩ জন ফেরত; সন্দেহজনক কাগজপত্র ও ভিসা সমস্যা
* *১৩–১৫ আগস্ট*: ২০৪ জন বাংলাদেশি থামানো হয় আগমনী ও প্রস্থানের সময়
* *১৫ আগস্ট (ভোররাতে)*: ৯৮ জন ফেরত পাঠানো হয়
২০২৫ সালের শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত *কমপক্ষে ৫২১ জন বাংলাদেশিকে* কেএলআইএ থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সন্দেহভাজন সিন্ডিকেটের ভূমিকা
কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, *মানবপাচার চক্র* ভুয়া বুকিং ও ভিসার কাগজপত্র দিয়ে বাংলাদেশিদের মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করাতে সাহায্য করছে। ২৪ জুলাইয়ের ঘটনার সময় কিছু যাত্রীর মোবাইল ফোনে *ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের ছবি* পাওয়া যায়, যা অভ্যন্তরীণ সহযোগিতার ইঙ্গিত দেয়।
তাই মালয়েশিয়া সরকার এখন বিশেষভাবে *রাতের সময়ের উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ ফ্লাইটগুলো*কে লক্ষ্য করে অভিযান চালাচ্ছে

কেন বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে?
একাধিক সাধারণ কারণের মধ্যে রয়েছে:
* *পর্যটক ভিসা নিয়ে অবৈধভাবে কাজ করতে চাওয়া*
* *ভুয়া বা অপ্রমাণিত হোটেল বুকিং*
* *ফেরত টিকিট না থাকা*
* *যথাযথ আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ না থাকা*
* *অবিশ্বস্ত ট্রাভেল এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে যাত্রা করা*
আধিকারিকভাবে শ্রমবাজার চালু না থাকায় অনেক বাংলাদেশি এসব ঝুঁকিপূর্ণ পথ বেছে নিচ্ছেন।
এই অভিবাসন সংকটের পাশাপাশি মালয়েশিয়ান পুলিশ সম্প্রতি *৩৬ জন বাংলাদেশি অভিবাসীকে* গ্রেফতার করেছে যারা *ইসলামিক স্টেট (IS)* সংশ্লিষ্ট একটি নেটওয়ার্ক পরিচালনার অভিযোগে অভিযুক্ত।
যদিও তাদের গ্রেফতার ও কেএলআইএতে ফিরিয়ে দেওয়া ঘটনার সরাসরি যোগসূত্র নেই, তবে এটি মালয়েশিয়ায় আগত বাংলাদেশিদের প্রতি সন্দেহ আরও তীব্র করেছে।
একদিকে মালয়েশিয়া তার অভিবাসন নীতি কঠোর করছে, অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকারকেও আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। যদি বৈধ চ্যানেল তৈরি না হয় এবং তথ্যভিত্তিক ভিসা ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে অসংখ্য মানুষ *বিপজ্জনক ও অনিয়ন্ত্রিত পথ* বেছে নিতে বাধ্য হবে — যার ফলে শুধু ফেরত পাঠানো নয়, *অপরাধমূলক তদন্তের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ছে।*
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















