০৭:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
২০২৯-এ ফিরছে অ্যানিমেটেড হিট ‘কে-পপ ডেমন হান্টার্স’ ‘টাইটানিক’-এর নেপথ্যের গল্প: চলচ্চিত্র প্রযোজকের স্মৃতিচারণ অভিষেক শর্মার রেকর্ড গড়া ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জয় ভারতের জেন জি এখন সুগন্ধি খুঁজছে আলোকে শিল্পে রূপ দেওয়া লিন্ডসি অ্যাডেলম্যান পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ ‘ইনল্যান্ড টাইপ্যান’: প্রাণঘাতী বিষ, শান্ত স্বভাবের এই সরীসৃপের অজানা বিস্ময় কুমিল্লায় দায়িত্ব পালনকালে অসুস্থ হয়ে পুলিশের মৃত্যু রবিবার থেকে কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা ভিয়েতনামী ঔপন্যাসিক ড. ফান কুয়ে মাই শারজাহ বইমেলায় পাঠকদের মুগ্ধ করলেন মংলায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ প্রবাসী নারী পর্যটক

পূর্ণিমা বর্তমানে নিয়মিত ভাবে অভিনয় করছেন না, পিছনে আছে উজ্জল দিনগুলো

জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮১ সালের ১১ জুলাই চট্টগ্রামে। তার শৈশব কেটেছে একটি সাধারণ পরিবারে, যেখানে পরিবার ও আত্মীয়দের ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণা তাকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দিয়েছে। ছোটবেলা থেকেই তিনি নাচ ও অভিনয়ের প্রতি আগ্রহী ছিলেন।

অভিনয়ে প্রবেশ

পূর্ণিমার অভিনয়ে প্রবেশের ইতিহাস অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ১৯৯৭ সালে জহিরুল হকের পরিচালনায় ‘এ জীবন তোমার আমার’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি কিশোরী বয়সে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। এটি ছিল তার প্রথম অভিনয়, আর সেই ছবিতেই তিনি আলোচনায় আসেন। তার পরিবারের সদস্যরা বিশেষ করে মা তাকে অভিনয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় উৎসাহ দিয়েছিলেন।

প্রথম সাফল্য ও ক্যারিয়ারের উত্থান

প্রথম ছবি মুক্তির পর পূর্ণিমা একের পর এক চলচ্চিত্রে কাজ করতে থাকেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘শুভদা’, ‘সুভা’ এবং আরও অনেক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র। বাংলা চলচ্চিত্রে তার রোমান্টিক ও পারিবারিক চরিত্রগুলো দর্শকের কাছে দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়।

 

পরিবার ও সহযোগিতা

পূর্ণিমার পরিবারের বিশেষ করে মায়ের সহযোগিতা ও উৎসাহই তার অভিনয় জীবনে প্রবেশের মূল ভিত্তি ছিল। তার পরিবার তাকে সবসময় এগিয়ে যেতে সমর্থন দিয়েছে। পরিবারের এই প্রেরণাই তাকে একজন শক্তিশালী ও আত্মবিশ্বাসী অভিনেত্রী হিসেবে গড়ে তুলেছে।

বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন ও বিদেশে অনুষ্ঠান

অভিনয়ের পাশাপাশি পূর্ণিমা বিভিন্ন বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনেও কাজ করেছেন। সৌন্দর্যবিষয়ক পণ্য থেকে শুরু করে ভোক্তা সামগ্রীর বিজ্ঞাপন তাকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের বাইরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন, যেখানে তিনি নাচ ও উপস্থিতির মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন।

পুরস্কার ও স্বীকৃতি

পূর্ণিমা তার অভিনয় জীবনে একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানা স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। বিশেষ করে ‘শুভদা’ ছবিতে তার অভিনয় তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এনে দেয়। এ ছাড়াও তিনি অসংখ্য বেসরকারি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পুরস্কার লাভ করেছেন।

বিয়ে ও ব্যক্তিগত জীবন

পূর্ণিমা ২০০৭ সালে বিয়ে করেন। তার স্বামী একজন ব্যবসায়ী। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিনি সংসার ও পেশাজীবনের মধ্যে সুন্দর ভারসাম্য বজায় রেখে চলছেন।

কেলেঙ্কারি ও বিতর্ক

জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণিমাকে ঘিরে বিভিন্ন সময়ে কিছু বিতর্ক ও কেলেঙ্কারির খবরও প্রকাশিত হয়েছে। তবে এসব বিতর্ক তার কর্মজীবনে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তিনি সবসময় কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের প্রতি মনোযোগী থেকেছেন।

মানবিক ও সামাজিক কাজ

অভিনয়ের বাইরে পূর্ণিমা বিভিন্ন সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছেন। বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও নারী উন্নয়নমূলক কাজে তার সক্রিয় ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়। তিনি বিভিন্ন সময়ে সমাজসেবামূলক কাজে অংশ নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে আরও কাছের মানুষ হয়ে উঠেছেন।

বর্তমান জীবন

বর্তমানে পূর্ণিমা নিয়মিতভাবে চলচ্চিত্রে কাজ না করলেও নাটক ও বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। তিনি পরিবার নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন, তবে সামাজিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় রয়েছেন। মাঝে মাঝে টেলিভিশন শোতে অংশগ্রহণ করেন এবং চলচ্চিত্রের বিশেষ প্রকল্পে যুক্ত হন।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে পূর্ণিমা একজন শক্তিশালী ও প্রভাবশালী অভিনেত্রী। শৈশব থেকে আজকের পূর্ণিমা হয়ে ওঠার যাত্রা ছিল নানা সাফল্য ও চ্যালেঞ্জে ভরা। তার অভিনয় প্রতিভা, পারিবারিক সমর্থন, সামাজিক কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য তাকে একটি অনন্য অবস্থানে নিয়ে গেছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

২০২৯-এ ফিরছে অ্যানিমেটেড হিট ‘কে-পপ ডেমন হান্টার্স’

পূর্ণিমা বর্তমানে নিয়মিত ভাবে অভিনয় করছেন না, পিছনে আছে উজ্জল দিনগুলো

০৬:০০:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮১ সালের ১১ জুলাই চট্টগ্রামে। তার শৈশব কেটেছে একটি সাধারণ পরিবারে, যেখানে পরিবার ও আত্মীয়দের ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণা তাকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দিয়েছে। ছোটবেলা থেকেই তিনি নাচ ও অভিনয়ের প্রতি আগ্রহী ছিলেন।

অভিনয়ে প্রবেশ

পূর্ণিমার অভিনয়ে প্রবেশের ইতিহাস অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ১৯৯৭ সালে জহিরুল হকের পরিচালনায় ‘এ জীবন তোমার আমার’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি কিশোরী বয়সে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। এটি ছিল তার প্রথম অভিনয়, আর সেই ছবিতেই তিনি আলোচনায় আসেন। তার পরিবারের সদস্যরা বিশেষ করে মা তাকে অভিনয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় উৎসাহ দিয়েছিলেন।

প্রথম সাফল্য ও ক্যারিয়ারের উত্থান

প্রথম ছবি মুক্তির পর পূর্ণিমা একের পর এক চলচ্চিত্রে কাজ করতে থাকেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘শুভদা’, ‘সুভা’ এবং আরও অনেক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র। বাংলা চলচ্চিত্রে তার রোমান্টিক ও পারিবারিক চরিত্রগুলো দর্শকের কাছে দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়।

 

পরিবার ও সহযোগিতা

পূর্ণিমার পরিবারের বিশেষ করে মায়ের সহযোগিতা ও উৎসাহই তার অভিনয় জীবনে প্রবেশের মূল ভিত্তি ছিল। তার পরিবার তাকে সবসময় এগিয়ে যেতে সমর্থন দিয়েছে। পরিবারের এই প্রেরণাই তাকে একজন শক্তিশালী ও আত্মবিশ্বাসী অভিনেত্রী হিসেবে গড়ে তুলেছে।

বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন ও বিদেশে অনুষ্ঠান

অভিনয়ের পাশাপাশি পূর্ণিমা বিভিন্ন বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনেও কাজ করেছেন। সৌন্দর্যবিষয়ক পণ্য থেকে শুরু করে ভোক্তা সামগ্রীর বিজ্ঞাপন তাকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের বাইরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন, যেখানে তিনি নাচ ও উপস্থিতির মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন।

পুরস্কার ও স্বীকৃতি

পূর্ণিমা তার অভিনয় জীবনে একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানা স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। বিশেষ করে ‘শুভদা’ ছবিতে তার অভিনয় তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এনে দেয়। এ ছাড়াও তিনি অসংখ্য বেসরকারি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পুরস্কার লাভ করেছেন।

বিয়ে ও ব্যক্তিগত জীবন

পূর্ণিমা ২০০৭ সালে বিয়ে করেন। তার স্বামী একজন ব্যবসায়ী। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিনি সংসার ও পেশাজীবনের মধ্যে সুন্দর ভারসাম্য বজায় রেখে চলছেন।

কেলেঙ্কারি ও বিতর্ক

জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণিমাকে ঘিরে বিভিন্ন সময়ে কিছু বিতর্ক ও কেলেঙ্কারির খবরও প্রকাশিত হয়েছে। তবে এসব বিতর্ক তার কর্মজীবনে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তিনি সবসময় কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের প্রতি মনোযোগী থেকেছেন।

মানবিক ও সামাজিক কাজ

অভিনয়ের বাইরে পূর্ণিমা বিভিন্ন সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছেন। বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও নারী উন্নয়নমূলক কাজে তার সক্রিয় ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়। তিনি বিভিন্ন সময়ে সমাজসেবামূলক কাজে অংশ নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে আরও কাছের মানুষ হয়ে উঠেছেন।

বর্তমান জীবন

বর্তমানে পূর্ণিমা নিয়মিতভাবে চলচ্চিত্রে কাজ না করলেও নাটক ও বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। তিনি পরিবার নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন, তবে সামাজিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় রয়েছেন। মাঝে মাঝে টেলিভিশন শোতে অংশগ্রহণ করেন এবং চলচ্চিত্রের বিশেষ প্রকল্পে যুক্ত হন।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে পূর্ণিমা একজন শক্তিশালী ও প্রভাবশালী অভিনেত্রী। শৈশব থেকে আজকের পূর্ণিমা হয়ে ওঠার যাত্রা ছিল নানা সাফল্য ও চ্যালেঞ্জে ভরা। তার অভিনয় প্রতিভা, পারিবারিক সমর্থন, সামাজিক কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য তাকে একটি অনন্য অবস্থানে নিয়ে গেছে।