বাংলাদেশের বাজারে গরুর মাংসের দাম কেজিপ্রতি ৮০০ টাকায় পৌঁছেছে। আগে যেখানে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যেত, এখন সেই দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে অনেক বেশি। এই অবস্থায় মধ্যবিত্ত পরিবারের ওপর চাপ আরও বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে যেসব পরিবার মাসে ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করে, তাদের খরচের বড় একটি অংশ খাদ্যে চলে যায়।
৩০ হাজার টাকার পরিবার
একটি পরিবার যদি মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করে, তবে খাদ্য, বাসাভাড়া, শিক্ষা, চিকিৎসা, পরিবহন ইত্যাদি খরচ মেটানোর পর গরুর মাংসের জন্য আলাদা বাজেট রাখা কঠিন। যদি ধরা হয় তারা মাসে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা মাংস খাওয়ার জন্য আলাদা রাখে, তবে ৮০০ টাকা কেজি দরে সেই অর্থে সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪ কেজি মাংস কেনা সম্ভব। অর্থাৎ, মাসে গড়ে একবারই গরুর মাংস খাওয়ার সামর্থ্য তাদের থাকে।

৫০ হাজার টাকার পরিবার
অন্যদিকে, মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করা পরিবার তুলনামূলকভাবে কিছুটা বেশি সামর্থ্যবান। তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় কিছুটা বেশি হলেও খাদ্যে কিছু বাড়তি খরচ করার সুযোগ থাকে। যদি তারা ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা মাংস খাওয়ার জন্য আলাদা রাখে, তবে ৮০০ টাকা কেজি দরে মাসে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৬ কেজি গরুর মাংস কিনতে পারে। অর্থাৎ, মাসে দুই থেকে তিনবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে গরুর মাংস খাওয়া সম্ভব হয়।
পারিবারিক গড় চাহিদা ও বাস্তবতা

একটি গড় পরিবারে চার থেকে পাঁচজন সদস্য থাকলে সাপ্তাহিক একবার গরুর মাংস খেতে সাধারণত ১.৫ থেকে ২ কেজি প্রয়োজন হয়। সে হিসেবে ৩০ হাজার টাকার পরিবার মাসে একবার বা দুবারের বেশি গরুর মাংস খেতে পারবে না। ৫০ হাজার টাকার পরিবার মাসে ২-৩ বার খেতে পারলেও সপ্তাহে একদিন খাওয়ার মতো সামর্থ্য তাদের নেই।
সামাজিক বাস্তবতা
এভাবে গরুর মাংস মধ্যবিত্তের জন্য একরকম বিলাসিতায় পরিণত হচ্ছে। আগে যে পরিবারগুলো সপ্তাহে একবার মাংস খেত, তারা এখন মাসে একবারে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে। মাংসের উচ্চমূল্য শুধু খাদ্যাভ্যাস নয়, সামাজিক বৈষম্যও বাড়িয়ে তুলছে। ধনীদের কাছে মাংস দৈনন্দিন খাবার হলেও, মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের জন্য তা এখন উৎসব বা বিশেষ দিনে সীমিত হয়ে যাচ্ছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















