০১:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শরীরের অস্বাভাবিক পরিবর্তনঃ যখন শুক্রাণুর পরিমাণ কমতে শুরু করে

পুরুষের প্রজনন কোষ শুক্রাণু, যা নারীর ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলিত হয়ে নতুন জীবন সৃষ্টি করে। সুস্থ ও পর্যাপ্ত পরিমাণ শুক্রাণু পুরুষের উর্বরতার অন্যতম ভিত্তি। কিন্তু যখন শরীরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ শুক্রাণু উৎপাদন কমতে শুরু করে, তখন শুধু সন্তান ধারণে সমস্যা দেখা দেয় না, বরং পুরুষের শরীরে একাধিক অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত পরিবর্তনও দেখা যায়।

শুক্রাণুর স্বাভাবিক সংখ্যা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মানদণ্ড অনুযায়ী, একজন পুরুষের প্রতি মিলিলিটার বীর্যে ১৫ থেকে ২০০ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকা স্বাভাবিক। যদি সংখ্যা ১৫ মিলিয়নের নিচে নেমে যায়, তখন তাকে অলিগোস্পার্মিয়া বা কম শুক্রাণু বলা হয়। এই অবস্থায় গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যায়, যদিও তা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়ে না।

শুক্রাণুর ঘাটতি: শরীরের অস্বাভাবিক সংকেত

শুধু প্রজনন সমস্যাই নয়, শুক্রাণুর পরিমাণ কমে গেলে শরীরে একাধিক অস্বাভাবিক পরিবর্তন চোখে পড়ে। এর মধ্যে কয়েকটি হলোঃ

গর্ভধারণে অসুবিধা – দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও সঙ্গিনী গর্ভধারণ না করলে এটি একটি বড় সংকেত।

বীর্যের পরিমাণ কমে যাওয়া – শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণ বীর্য উৎপাদন করতে ব্যর্থ হয়।

অণ্ডকোষে ফোলা বা ব্যথা – হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ায় অণ্ডকোষে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।

মুখ ও শরীরের চুল কমে যাওয়া – পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরনের ঘাটতির কারণে শরীরের লোম ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে।

যৌন আগ্রহে হ্রাস – যৌন হরমোনের পরিবর্তনের কারণে লিবিডো কমে যায়।

অস্থিরতা ও ক্লান্তি – হরমোন ভারসাম্যের অভাব মানসিক অস্থিরতা ও শারীরিক দুর্বলতার কারণ হতে পারে।

পেশি দুর্বল হয়ে পড়া – শুক্রাণু উৎপাদনে হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তার ঘাটতিতে পেশিশক্তি কমতে থাকে।

শুক্রাণু কমে যাওয়ার প্রধান কারণ

বিভিন্ন কারণে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যেতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ

  • • অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
  • • ধূমপানমাদক ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ
  • • অস্বাস্থ্যকর খাবার ও জীবনযাপন
  • • বায়ুদূষণ ও পরিবেশগত প্রভাব
  • • অতিরিক্ত তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময় থাকা (যেমন: সনা বাথ, টাইট পোশাক)
  • • কিছু ওষুধ ও হরমোনজনিত সমস্যা

করণীয়

শুক্রাণুর ঘাটতি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। এটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে সমাধান করা সম্ভব।

  • পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা
  • ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা
  • পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখা
  • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ

শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া শুধু উর্বরতা নয়, বরং পুরুষের সার্বিক শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। তাই অস্বাভাবিক পরিবর্তনগুলো উপেক্ষা না করে দ্রুত জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।

শরীরের অস্বাভাবিক পরিবর্তনঃ যখন শুক্রাণুর পরিমাণ কমতে শুরু করে

০৩:০৯:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পুরুষের প্রজনন কোষ শুক্রাণু, যা নারীর ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলিত হয়ে নতুন জীবন সৃষ্টি করে। সুস্থ ও পর্যাপ্ত পরিমাণ শুক্রাণু পুরুষের উর্বরতার অন্যতম ভিত্তি। কিন্তু যখন শরীরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ শুক্রাণু উৎপাদন কমতে শুরু করে, তখন শুধু সন্তান ধারণে সমস্যা দেখা দেয় না, বরং পুরুষের শরীরে একাধিক অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত পরিবর্তনও দেখা যায়।

শুক্রাণুর স্বাভাবিক সংখ্যা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মানদণ্ড অনুযায়ী, একজন পুরুষের প্রতি মিলিলিটার বীর্যে ১৫ থেকে ২০০ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকা স্বাভাবিক। যদি সংখ্যা ১৫ মিলিয়নের নিচে নেমে যায়, তখন তাকে অলিগোস্পার্মিয়া বা কম শুক্রাণু বলা হয়। এই অবস্থায় গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যায়, যদিও তা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়ে না।

শুক্রাণুর ঘাটতি: শরীরের অস্বাভাবিক সংকেত

শুধু প্রজনন সমস্যাই নয়, শুক্রাণুর পরিমাণ কমে গেলে শরীরে একাধিক অস্বাভাবিক পরিবর্তন চোখে পড়ে। এর মধ্যে কয়েকটি হলোঃ

গর্ভধারণে অসুবিধা – দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও সঙ্গিনী গর্ভধারণ না করলে এটি একটি বড় সংকেত।

বীর্যের পরিমাণ কমে যাওয়া – শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণ বীর্য উৎপাদন করতে ব্যর্থ হয়।

অণ্ডকোষে ফোলা বা ব্যথা – হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ায় অণ্ডকোষে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।

মুখ ও শরীরের চুল কমে যাওয়া – পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরনের ঘাটতির কারণে শরীরের লোম ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে।

যৌন আগ্রহে হ্রাস – যৌন হরমোনের পরিবর্তনের কারণে লিবিডো কমে যায়।

অস্থিরতা ও ক্লান্তি – হরমোন ভারসাম্যের অভাব মানসিক অস্থিরতা ও শারীরিক দুর্বলতার কারণ হতে পারে।

পেশি দুর্বল হয়ে পড়া – শুক্রাণু উৎপাদনে হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তার ঘাটতিতে পেশিশক্তি কমতে থাকে।

শুক্রাণু কমে যাওয়ার প্রধান কারণ

বিভিন্ন কারণে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যেতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ

  • • অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
  • • ধূমপানমাদক ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ
  • • অস্বাস্থ্যকর খাবার ও জীবনযাপন
  • • বায়ুদূষণ ও পরিবেশগত প্রভাব
  • • অতিরিক্ত তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময় থাকা (যেমন: সনা বাথ, টাইট পোশাক)
  • • কিছু ওষুধ ও হরমোনজনিত সমস্যা

করণীয়

শুক্রাণুর ঘাটতি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। এটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে সমাধান করা সম্ভব।

  • পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা
  • ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা
  • পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখা
  • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ

শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া শুধু উর্বরতা নয়, বরং পুরুষের সার্বিক শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। তাই অস্বাভাবিক পরিবর্তনগুলো উপেক্ষা না করে দ্রুত জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।