শিবির-সমর্থিত প্রার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে তারা এগিয়ে আছেন।
নির্বাচনের ফলাফল
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করা হয়।
- ভিপি পদে শিবির-সমর্থিত প্রার্থী সাদিক কায়েম ১৪,০৪২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫,৭০৮ ভোট।
- জিএস পদে শিবিরের এসএম ফরহাদ ১০,৭৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। অপরদিকে ছাত্রদলের তানভীর বারী হামিম পেয়েছেন ৫,২৮৩ ভোট।
- এজিএস পদে শিবিরের মো. মহিউদ্দিন খান ১১,৭৭২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ছাত্রদলের তানভীর আল হাদি মাহেদ পেয়েছেন ৫,০৬৪ ভোট।

নির্বাচনী পরিবেশ
মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সার্বিকভাবে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, কোনো বড় ধরনের অঘটন ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন এবং কেন্দ্রগুলোর পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ।
অন্য প্রার্থীদের অবস্থান
ভিপি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়া উমামা ফাতেমা, যিনি গত বছরের আন্দোলনে পরিচিত মুখ ছিলেন, পেয়েছেন ৩,৩৮৯ ভোট। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন, যিনি তুলনামূলক উদারপন্থী ভোটারদের আকৃষ্ট করেছিলেন, তিনি পেয়েছেন ৩,৮৮৪ ভোট।

প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতিক্রিয়া
ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান এবং তার সহকর্মীরা ফল ঘোষণার আগেই ভোট গণনা প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলতে শুরু করেন। রাত আড়াইটার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেন, “এ ফলাফল দুপুরের পরই অনুমান করতে পেরেছিলাম। যেমন খুশি সংখ্যা বসানো হয়েছে। আমি এই নাটক প্রত্যাখ্যান করছি।”
অন্যদিকে তার প্যানেলের জিএস প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম ভিন্ন অবস্থান নেন। কিছু অনিয়মের কথা উল্লেখ করলেও তিনি ফল মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দেন। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লেখেন, “যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মনে করেন এটাই তাদের রায়, তবে আমি সে রায়কে সম্মান জানাই। আমি শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।”

নির্বাচনে অংশগ্রহণ
এবারের ডাকসু নির্বাচনে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী ২৮টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ভিপি পদে ৪৮ জন, জিএস পদে ১৯ জন এবং এজিএস পদে ২৫ জন প্রার্থী ছিলেন।
এই নির্বাচনে শিবিরের বড় ধরনের সাফল্য ছাত্ররাজনীতির ভারসাম্যে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















