০৩:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বিশ্ব সঙ্গীতে এআই-এর সৃজনশীল ঢেউ আইএফএ বার্লিন ২০২৫: যে গ্যাজেটগুলো নিয়ে সবার আলোচনা এআই প্রশিক্ষণে আইনি নজির: লেখকদের সাথে Anthropic-এর $১.৫ বিলিয়ন সমঝোতা যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় আকাশ হামলা লন্ডনের ডানপন্থী সমাবেশে সহিংসতা, রেকর্ড সমাগমে উত্তেজনা দোহায় হামাস নেতাদের ওপর হামলা, যুদ্ধবিরতির আলাপ জটিলতায় নতুন গবেষণা: আটলান্টিক প্রবাহ ভাঙার ঝুঁকি এখন অনেক বেশি” ডাকসু ও জাকসুতে বৈষম্যবিরোধীদের বিপর্যয়, চ্যালেঞ্জের মুখে এনসিপি? জাতীয় নির্বাচনকে ডাকসুর সঙ্গে মেলানো যাবে না, মডেল হিসেবে কাজ করবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হার – আকাশ চোপড়া-অশ্বিনকেই ‘সঠিক’ প্রমাণ করছে বাংলাদেশ?

আল কাবিল গ্রাম: নাজরানে প্রাচীন খেজুর বাগান ও কাদামাটির ঘরের এক ঐতিহাসিক মরূদ্যান

প্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতীক

সৌদি আরবের নাজরান অঞ্চলের আল কাবিল গ্রাম সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতির এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। আকাশ ছুঁতে চাওয়া প্রাচীন খেজুরগাছ আর শতাব্দী প্রাচীন কাদামাটির ঘরগুলো এ গ্রামের ঐতিহ্য ও পরিচয়কে স্পষ্ট করে তুলে ধরে।

প্রাচীন কূপকে ঘিরে গড়ে ওঠা জীবন

গ্রামটির মূল ঐতিহ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্রাচীন কূপগুলিকে কেন্দ্র করে, যেগুলো একসময় এ গ্রামের প্রাণের সঞ্চালক ছিল। পূর্বে আল-হুসাইন ফার্ম থেকে শুরু করে পশ্চিমে আল-জারবা গ্রামের সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত এ গ্রাম দক্ষিণে আল-উখদুদ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান আর উত্তরে নাজরান উপত্যকার তীরে গড়ে উঠেছে।

৩৫০ বছরের পুরোনো কাদামাটির প্রাসাদ

নাজরান সোসাইটি অব অ্যান্টিকুইটিস অ্যান্ড হিস্ট্রির প্রধান মোহাম্মদ আল-হাতেলা জানান, আল কাবিল গ্রামে প্রায় ৩৫০ বছরের পুরোনো কাদামাটির প্রাসাদ রয়েছে। এখানে ২০০টির বেশি কাদামাটির ঘর আছে, যেগুলোর নকশা ও উচ্চতা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে নির্মাণশৈলীর সাক্ষী বহন করে। প্রাচীন কূপের চারপাশে ঘেরা খেজুরগাছ গ্রামটিকে দিয়েছে এক বিশেষ স্থাপত্যশৈলী, যা নাজরানের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলির স্বীকৃতি এনে দিয়েছে।

আল-লিজাম গ্রামের বৈশিষ্ট্য

গ্রামগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত আল-লিজাম গ্রাম, যা ৩৪টি ঐতিহ্যবাহী গ্রামের একটি। এ গ্রামে শত শত বছরের পুরোনো কাদামাটির প্রাসাদ ও ২০টির বেশি ঘর রয়েছে। এখানে আধুনিক ও প্রাচীন স্থাপত্যের মিলন দেখা যায়। নাজরান উপত্যকার তীরে দাঁড়িয়ে থাকা আল-দুরুব নামে পরিচিত ঘরগুলো তাদের ঐতিহাসিক গম্বুজসহ সৌদি আরবের স্থাপত্য ও সংস্কৃতির গভীরতাকে প্রকাশ করে।

বাসিন্দাদের গর্ব ও সংরক্ষণ প্রচেষ্টা

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ বালহারিথ জানান, গ্রামের মানুষ তাদের ঐতিহাসিক কাদামাটির ঘরগুলো সংরক্ষণ ও পুনর্নির্মাণে গর্ববোধ করে। এগুলো কেবল ঘর নয়, বরং ইতিহাসের জীবন্ত দলিল।

কাদামাটির স্থাপত্যের বিশেষ ধারা

আল কাবিল গ্রামে মুরাব্বা, মাশুলক ও মুকাদ্দামসহ কাদামাটির স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন পাওয়া যায়। এসব নকশা ও পুরোনো খেজুরবাগান মিলে গড়ে তুলেছে বৈচিত্র্যময় এক স্থাপত্য পরিচয়, যেখানে আকার-আকৃতির ভিন্নতা আলাদা সৌন্দর্য এনে দিয়েছে।

ঐতিহাসিক কূপ ও বাজারের স্মৃতি

গ্রামটির ঐতিহাসিক বৃহস্পতিবারের বাজারের সীমা, প্রাচীন কূপ এবং আশপাশের গ্রাম যেমন আল-জাদিদাহ, বাইহান ইত্যাদির নাম এখনো টিকে আছে। আল কাবিল গ্রামের বিখ্যাত কূপগুলোর মধ্যে রয়েছে উম্ম আল-জাওইয়া, বাহজা, আল-সারুফ, রাকীবাহ, আল-জুজাজ, সাঈদা প্রভৃতি। এসব কূপের নাম আজও স্থানীয় মানুষের কাছে ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে।

এই গ্রাম শুধু নাজরান নয়, বরং পুরো সৌদি আরবের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে এক অমূল্য সম্পদ।

বিশ্ব সঙ্গীতে এআই-এর সৃজনশীল ঢেউ

আল কাবিল গ্রাম: নাজরানে প্রাচীন খেজুর বাগান ও কাদামাটির ঘরের এক ঐতিহাসিক মরূদ্যান

১২:০৩:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতীক

সৌদি আরবের নাজরান অঞ্চলের আল কাবিল গ্রাম সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতির এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। আকাশ ছুঁতে চাওয়া প্রাচীন খেজুরগাছ আর শতাব্দী প্রাচীন কাদামাটির ঘরগুলো এ গ্রামের ঐতিহ্য ও পরিচয়কে স্পষ্ট করে তুলে ধরে।

প্রাচীন কূপকে ঘিরে গড়ে ওঠা জীবন

গ্রামটির মূল ঐতিহ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্রাচীন কূপগুলিকে কেন্দ্র করে, যেগুলো একসময় এ গ্রামের প্রাণের সঞ্চালক ছিল। পূর্বে আল-হুসাইন ফার্ম থেকে শুরু করে পশ্চিমে আল-জারবা গ্রামের সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত এ গ্রাম দক্ষিণে আল-উখদুদ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান আর উত্তরে নাজরান উপত্যকার তীরে গড়ে উঠেছে।

৩৫০ বছরের পুরোনো কাদামাটির প্রাসাদ

নাজরান সোসাইটি অব অ্যান্টিকুইটিস অ্যান্ড হিস্ট্রির প্রধান মোহাম্মদ আল-হাতেলা জানান, আল কাবিল গ্রামে প্রায় ৩৫০ বছরের পুরোনো কাদামাটির প্রাসাদ রয়েছে। এখানে ২০০টির বেশি কাদামাটির ঘর আছে, যেগুলোর নকশা ও উচ্চতা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে নির্মাণশৈলীর সাক্ষী বহন করে। প্রাচীন কূপের চারপাশে ঘেরা খেজুরগাছ গ্রামটিকে দিয়েছে এক বিশেষ স্থাপত্যশৈলী, যা নাজরানের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলির স্বীকৃতি এনে দিয়েছে।

আল-লিজাম গ্রামের বৈশিষ্ট্য

গ্রামগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত আল-লিজাম গ্রাম, যা ৩৪টি ঐতিহ্যবাহী গ্রামের একটি। এ গ্রামে শত শত বছরের পুরোনো কাদামাটির প্রাসাদ ও ২০টির বেশি ঘর রয়েছে। এখানে আধুনিক ও প্রাচীন স্থাপত্যের মিলন দেখা যায়। নাজরান উপত্যকার তীরে দাঁড়িয়ে থাকা আল-দুরুব নামে পরিচিত ঘরগুলো তাদের ঐতিহাসিক গম্বুজসহ সৌদি আরবের স্থাপত্য ও সংস্কৃতির গভীরতাকে প্রকাশ করে।

বাসিন্দাদের গর্ব ও সংরক্ষণ প্রচেষ্টা

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ বালহারিথ জানান, গ্রামের মানুষ তাদের ঐতিহাসিক কাদামাটির ঘরগুলো সংরক্ষণ ও পুনর্নির্মাণে গর্ববোধ করে। এগুলো কেবল ঘর নয়, বরং ইতিহাসের জীবন্ত দলিল।

কাদামাটির স্থাপত্যের বিশেষ ধারা

আল কাবিল গ্রামে মুরাব্বা, মাশুলক ও মুকাদ্দামসহ কাদামাটির স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন পাওয়া যায়। এসব নকশা ও পুরোনো খেজুরবাগান মিলে গড়ে তুলেছে বৈচিত্র্যময় এক স্থাপত্য পরিচয়, যেখানে আকার-আকৃতির ভিন্নতা আলাদা সৌন্দর্য এনে দিয়েছে।

ঐতিহাসিক কূপ ও বাজারের স্মৃতি

গ্রামটির ঐতিহাসিক বৃহস্পতিবারের বাজারের সীমা, প্রাচীন কূপ এবং আশপাশের গ্রাম যেমন আল-জাদিদাহ, বাইহান ইত্যাদির নাম এখনো টিকে আছে। আল কাবিল গ্রামের বিখ্যাত কূপগুলোর মধ্যে রয়েছে উম্ম আল-জাওইয়া, বাহজা, আল-সারুফ, রাকীবাহ, আল-জুজাজ, সাঈদা প্রভৃতি। এসব কূপের নাম আজও স্থানীয় মানুষের কাছে ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে।

এই গ্রাম শুধু নাজরান নয়, বরং পুরো সৌদি আরবের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে এক অমূল্য সম্পদ।