১২:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জাতীয় নির্বাচনকে ডাকসুর সঙ্গে মেলানো যাবে না, মডেল হিসেবে কাজ করবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হার – আকাশ চোপড়া-অশ্বিনকেই ‘সঠিক’ প্রমাণ করছে বাংলাদেশ? ভেঙে দেওয়া সংসদ পুনর্বহাল চায় নেপালের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো রেমিট্যান্স যেভাবে বদলে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের অনেক গ্রাম নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার প্রথমদিনে শান্ত হতে শুরু করেছে নেপাল অবশেষে জাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা, কেনো এত সময় লাগলো? ঝালকাঠির হালতা নদী: ইতিহাস, জীবন ও ভবিষ্যতের লড়াই সাগর দ্বীপ : যাকে মানুষ চেনে গঙ্গাসাগর নামে ফরাসি মাস্টার সেজান তাঁর পারিবারিক প্রাসাদে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন: ক্রিকেটের কবি

শ্রুতি হাসান: শুধু অভিনেত্রী নন, ব্যান্ড সঙ্গীত ও ফ্যাশন আইকনও

দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্র জগতে শ্রুতি হাসান আজ এক অনন্য নাম। তিনি কেবল অভিনয়শিল্পী নন, বরং গায়িকা, সঙ্গীত পরিচালক, গীতিকার এবং ফ্যাশন আইকন হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। চলচ্চিত্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় তার পথচলা সহজ মনে হলেও বাস্তবে তা ছিল নানা চ্যালেঞ্জে পূর্ণ। শ্রুতি একদিকে যেমন তামিল ও তেলুগু সিনেমায় জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন, অন্যদিকে বলিউডে নিজের অবস্থানও মজবুত করেছেন। তার ক্যারিয়ারের বাঁকবদল, সংগ্রাম, সাফল্য, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা মিলিয়ে তিনি দক্ষিণ ভারত তথা ভারতের অন্যতম আলোচিত তারকা।

শৈশব ও পারিবারিক প্রেক্ষাপট

শ্রুতির জন্ম ১৯৮৬ সালের ২৮ জানুয়ারি, চেন্নাইয়ে। বাবা কমল হাসান ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম কিংবদন্তি অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক। মা সারিকা ঠাকুরও ছিলেন প্রশংসিত অভিনেত্রী। ফলে ছোটবেলা থেকেই শ্রুতি সিনেমার আলো-ঝলমলে জগৎ দেখেছেন। কিন্তু এর মধ্যেও তিনি ছিলেন স্বতন্ত্রচেতা। পরিবারে খ্যাতিমান অভিভাবক থাকা সত্ত্বেও তিনি নিজের পথ নিজেই তৈরি করতে চেয়েছেন।

শৈশব থেকেই গান ও অভিনয়ের প্রতি তার আগ্রহ স্পষ্ট ছিল। মাত্র ৬ বছর বয়সে তার প্রথম প্লেব্যাক রেকর্ড হয়। বাবার সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবেও তিনি হাজির হয়েছেন। কিন্তু তিনি কখনোই চাননি শুধুমাত্র বাবার পরিচয়ে পরিচিত হতে।

শিক্ষা ও সঙ্গীতের প্রতি ঝোঁক

চেন্নাইয়ের অভিষেকম স্কুল থেকে পড়াশোনা শুরু করেন শ্রুতি। এরপর মুম্বাইয়ের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ কলেজে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়েন। তবে সঙ্গীতের প্রতি তার ভালোবাসা তাকে বিদেশে নিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার Musicians Institute-এ তিনি সঙ্গীতে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেন। সেখানে রক, জ্যাজ, পপসহ নানা ধারার সঙ্গীতে তিনি প্রশিক্ষিত হন।

সঙ্গীতের জগতে তার যাত্রা শুরু হয় গায়িকা হিসেবে। বিভিন্ন ভাষার চলচ্চিত্রে তিনি প্লেব্যাক করেছেন। তার কণ্ঠে একধরনের শক্তি ও স্বতঃস্ফূর্ততা রয়েছে, যা তাকে আলাদা করেছে। পরবর্তীতে নিজের ব্যান্ড The Extramentals প্রতিষ্ঠা করেন এবং স্টেজ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হন।

চলচ্চিত্রে প্রথম পদক্ষেপ

২০০৯ সালে বলিউডের Luck সিনেমায় নায়িকা হিসেবে তার অভিষেক হয়। ছবিটি বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি, কিন্তু শ্রুতির অভিনয় সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অনেকেই তার মধ্যে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা দেখতে পান।

এরপর তামিল চলচ্চিত্র ৭আম আরিভু (২০১১) এ সুরিয়ার বিপরীতে অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেন। একই বছর Anaganaga O Dheerudu নামের একটি তেলুগু ছবিতেও অভিনয় করেন। ধীরে ধীরে তিনি দক্ষিণ ভারতীয় দর্শকের মনে জায়গা করে নিতে থাকেন।

সাফল্যের ধারায় প্রবেশ

২০১২ সালে তেলুগু সিনেমা Gabbar Singh এ পাওয়ারস্টার পবন কল্যাণের বিপরীতে তার অভিনয় ছিল ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। সিনেমাটি ব্লকবাস্টার হিট হয় এবং শ্রুতির জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে। এরপর ধারাবাহিকভাবে তিনি হিট ছবির অংশ হন—

  • Balupu(২০১৩)
  • Yevadu(২০১৪)
  • Race Gurram(২০১৪)

তামিল ইন্ডাস্ট্রিতেও তিনি দারুণ সাফল্য পান  (২০১২) ছবিতে ধানুষের সঙ্গে অভিনয় করে। এই ছবির গান Why This Kolaveri Di পুরো ভারতসহ বিশ্বজুড়ে ভাইরাল হয়। গানটির সাথে যুক্ত থাকার কারণে শ্রুতির জনপ্রিয়তাও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।

বলিউডে পথচলা

বলিউডে তার যাত্রা খুব বেশি সহজ ছিল না। কিন্তু তিনি ধারাবাহিকভাবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। Ramaiya Vastavaiya (২০১৩), D-Day (২০১৩), Gabbar Is Back (২০১৫), Welcome Back (২০১৫) এবং Behen Hogi Teri (২০১৭) ছবিগুলোতে অভিনয় করে বলিউডে নিজের অবস্থান মজবুত করেন। বিশেষ করে D-Day সিনেমায় একজন পাকিস্তানি গায়িকার ভূমিকায় তার অভিনয় প্রশংসিত হয়।

বহুমুখী প্রতিভা

শ্রুতি হাসান কেবল অভিনেত্রী নন, তিনি সঙ্গীত পরিচালক ও গীতিকারও। তার সুর করা কিছু গান দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্রে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। পাশাপাশি তিনি বিজ্ঞাপন, ফ্যাশন শো, মঞ্চে লাইভ কনসার্টেও সমান স্বাচ্ছন্দ্যে অংশ নেন। তার ব্যক্তিত্বে আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের মিশ্রণ তাকে অনন্য করেছে।

ক্যারিয়ারের বাঁকবদল

শ্রুতির ক্যারিয়ারে যেমন সাফল্য এসেছে, তেমনি এসেছে ব্যর্থতাও। কিছু সিনেমা বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়েছে, যা তাকে হতাশ করেছে। তবে তিনি কখনো ভেঙে পড়েননি। নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আবার নতুন উদ্যমে ফিরে এসেছেন। এটাই তার সবচেয়ে বড় শক্তি।

২০২০ সালের পর তিনি আবারও অভিনয়ে মনোযোগী হন। Krack (২০২১) এবং Vakeel Saab (২০২১) ছবিতে তার অভিনয় প্রমাণ করে যে তিনি এখনও প্রথম সারির অভিনেত্রীদের মধ্যে আছেন।

ব্যক্তিগত জীবন

শ্রুতি হাসান ব্যক্তিগত জীবনে স্বাধীনচেতা। তিনি সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা থাকতে পছন্দ করেন। সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় থাকেন এবং নিজের ভাবনা, অভিজ্ঞতা, এমনকি কষ্টও ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নেন। সঙ্গীতই তার কাছে সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল।

সামাজিক ভূমিকা

শ্রুতি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডেও যুক্ত। নারী স্বাধীনতা, মানসিক স্বাস্থ্য ও প্রাণী অধিকার নিয়ে তিনি খোলামেলা কথা বলেন। নানা সামাজিক আন্দোলনে অংশ নিয়ে তিনি তরুণদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।

বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

বর্তমানে শ্রুতি দক্ষিণ ভারতীয় ও বলিউড—দুই ইন্ডাস্ট্রিতেই সমানভাবে কাজ করছেন। একদিকে নতুন সিনেমার শুটিং নিয়ে ব্যস্ত, অন্যদিকে নিজের সঙ্গীত ক্যারিয়ার নিয়েও কাজ করছেন। ভবিষ্যতে তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চেও কাজ করতে চান।

 

শ্রুতি হাসান শুধু একজন নায়িকা নন, তিনি বহুমাত্রিক প্রতিভার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। অভিনয়, গান, ফ্যাশন, ব্যক্তিত্ব—সবকিছু মিলিয়ে তিনি দক্ষিণ ভারতের আধুনিক প্রজন্মের প্রতীক। সংগ্রাম, ব্যর্থতা ও সাফল্যের গল্পে ভরা তার জীবনচিত্র আজ অনেক তরুণ-তরুণীর জন্য অনুপ্রেরণা।

জাতীয় নির্বাচনকে ডাকসুর সঙ্গে মেলানো যাবে না, মডেল হিসেবে কাজ করবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

শ্রুতি হাসান: শুধু অভিনেত্রী নন, ব্যান্ড সঙ্গীত ও ফ্যাশন আইকনও

০৪:৩৬:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্র জগতে শ্রুতি হাসান আজ এক অনন্য নাম। তিনি কেবল অভিনয়শিল্পী নন, বরং গায়িকা, সঙ্গীত পরিচালক, গীতিকার এবং ফ্যাশন আইকন হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। চলচ্চিত্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় তার পথচলা সহজ মনে হলেও বাস্তবে তা ছিল নানা চ্যালেঞ্জে পূর্ণ। শ্রুতি একদিকে যেমন তামিল ও তেলুগু সিনেমায় জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন, অন্যদিকে বলিউডে নিজের অবস্থানও মজবুত করেছেন। তার ক্যারিয়ারের বাঁকবদল, সংগ্রাম, সাফল্য, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা মিলিয়ে তিনি দক্ষিণ ভারত তথা ভারতের অন্যতম আলোচিত তারকা।

শৈশব ও পারিবারিক প্রেক্ষাপট

শ্রুতির জন্ম ১৯৮৬ সালের ২৮ জানুয়ারি, চেন্নাইয়ে। বাবা কমল হাসান ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম কিংবদন্তি অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক। মা সারিকা ঠাকুরও ছিলেন প্রশংসিত অভিনেত্রী। ফলে ছোটবেলা থেকেই শ্রুতি সিনেমার আলো-ঝলমলে জগৎ দেখেছেন। কিন্তু এর মধ্যেও তিনি ছিলেন স্বতন্ত্রচেতা। পরিবারে খ্যাতিমান অভিভাবক থাকা সত্ত্বেও তিনি নিজের পথ নিজেই তৈরি করতে চেয়েছেন।

শৈশব থেকেই গান ও অভিনয়ের প্রতি তার আগ্রহ স্পষ্ট ছিল। মাত্র ৬ বছর বয়সে তার প্রথম প্লেব্যাক রেকর্ড হয়। বাবার সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবেও তিনি হাজির হয়েছেন। কিন্তু তিনি কখনোই চাননি শুধুমাত্র বাবার পরিচয়ে পরিচিত হতে।

শিক্ষা ও সঙ্গীতের প্রতি ঝোঁক

চেন্নাইয়ের অভিষেকম স্কুল থেকে পড়াশোনা শুরু করেন শ্রুতি। এরপর মুম্বাইয়ের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ কলেজে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়েন। তবে সঙ্গীতের প্রতি তার ভালোবাসা তাকে বিদেশে নিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার Musicians Institute-এ তিনি সঙ্গীতে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেন। সেখানে রক, জ্যাজ, পপসহ নানা ধারার সঙ্গীতে তিনি প্রশিক্ষিত হন।

সঙ্গীতের জগতে তার যাত্রা শুরু হয় গায়িকা হিসেবে। বিভিন্ন ভাষার চলচ্চিত্রে তিনি প্লেব্যাক করেছেন। তার কণ্ঠে একধরনের শক্তি ও স্বতঃস্ফূর্ততা রয়েছে, যা তাকে আলাদা করেছে। পরবর্তীতে নিজের ব্যান্ড The Extramentals প্রতিষ্ঠা করেন এবং স্টেজ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হন।

চলচ্চিত্রে প্রথম পদক্ষেপ

২০০৯ সালে বলিউডের Luck সিনেমায় নায়িকা হিসেবে তার অভিষেক হয়। ছবিটি বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি, কিন্তু শ্রুতির অভিনয় সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অনেকেই তার মধ্যে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা দেখতে পান।

এরপর তামিল চলচ্চিত্র ৭আম আরিভু (২০১১) এ সুরিয়ার বিপরীতে অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেন। একই বছর Anaganaga O Dheerudu নামের একটি তেলুগু ছবিতেও অভিনয় করেন। ধীরে ধীরে তিনি দক্ষিণ ভারতীয় দর্শকের মনে জায়গা করে নিতে থাকেন।

সাফল্যের ধারায় প্রবেশ

২০১২ সালে তেলুগু সিনেমা Gabbar Singh এ পাওয়ারস্টার পবন কল্যাণের বিপরীতে তার অভিনয় ছিল ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। সিনেমাটি ব্লকবাস্টার হিট হয় এবং শ্রুতির জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে। এরপর ধারাবাহিকভাবে তিনি হিট ছবির অংশ হন—

  • Balupu(২০১৩)
  • Yevadu(২০১৪)
  • Race Gurram(২০১৪)

তামিল ইন্ডাস্ট্রিতেও তিনি দারুণ সাফল্য পান  (২০১২) ছবিতে ধানুষের সঙ্গে অভিনয় করে। এই ছবির গান Why This Kolaveri Di পুরো ভারতসহ বিশ্বজুড়ে ভাইরাল হয়। গানটির সাথে যুক্ত থাকার কারণে শ্রুতির জনপ্রিয়তাও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।

বলিউডে পথচলা

বলিউডে তার যাত্রা খুব বেশি সহজ ছিল না। কিন্তু তিনি ধারাবাহিকভাবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। Ramaiya Vastavaiya (২০১৩), D-Day (২০১৩), Gabbar Is Back (২০১৫), Welcome Back (২০১৫) এবং Behen Hogi Teri (২০১৭) ছবিগুলোতে অভিনয় করে বলিউডে নিজের অবস্থান মজবুত করেন। বিশেষ করে D-Day সিনেমায় একজন পাকিস্তানি গায়িকার ভূমিকায় তার অভিনয় প্রশংসিত হয়।

বহুমুখী প্রতিভা

শ্রুতি হাসান কেবল অভিনেত্রী নন, তিনি সঙ্গীত পরিচালক ও গীতিকারও। তার সুর করা কিছু গান দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্রে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। পাশাপাশি তিনি বিজ্ঞাপন, ফ্যাশন শো, মঞ্চে লাইভ কনসার্টেও সমান স্বাচ্ছন্দ্যে অংশ নেন। তার ব্যক্তিত্বে আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের মিশ্রণ তাকে অনন্য করেছে।

ক্যারিয়ারের বাঁকবদল

শ্রুতির ক্যারিয়ারে যেমন সাফল্য এসেছে, তেমনি এসেছে ব্যর্থতাও। কিছু সিনেমা বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়েছে, যা তাকে হতাশ করেছে। তবে তিনি কখনো ভেঙে পড়েননি। নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আবার নতুন উদ্যমে ফিরে এসেছেন। এটাই তার সবচেয়ে বড় শক্তি।

২০২০ সালের পর তিনি আবারও অভিনয়ে মনোযোগী হন। Krack (২০২১) এবং Vakeel Saab (২০২১) ছবিতে তার অভিনয় প্রমাণ করে যে তিনি এখনও প্রথম সারির অভিনেত্রীদের মধ্যে আছেন।

ব্যক্তিগত জীবন

শ্রুতি হাসান ব্যক্তিগত জীবনে স্বাধীনচেতা। তিনি সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা থাকতে পছন্দ করেন। সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় থাকেন এবং নিজের ভাবনা, অভিজ্ঞতা, এমনকি কষ্টও ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নেন। সঙ্গীতই তার কাছে সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল।

সামাজিক ভূমিকা

শ্রুতি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডেও যুক্ত। নারী স্বাধীনতা, মানসিক স্বাস্থ্য ও প্রাণী অধিকার নিয়ে তিনি খোলামেলা কথা বলেন। নানা সামাজিক আন্দোলনে অংশ নিয়ে তিনি তরুণদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।

বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

বর্তমানে শ্রুতি দক্ষিণ ভারতীয় ও বলিউড—দুই ইন্ডাস্ট্রিতেই সমানভাবে কাজ করছেন। একদিকে নতুন সিনেমার শুটিং নিয়ে ব্যস্ত, অন্যদিকে নিজের সঙ্গীত ক্যারিয়ার নিয়েও কাজ করছেন। ভবিষ্যতে তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চেও কাজ করতে চান।

 

শ্রুতি হাসান শুধু একজন নায়িকা নন, তিনি বহুমাত্রিক প্রতিভার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। অভিনয়, গান, ফ্যাশন, ব্যক্তিত্ব—সবকিছু মিলিয়ে তিনি দক্ষিণ ভারতের আধুনিক প্রজন্মের প্রতীক। সংগ্রাম, ব্যর্থতা ও সাফল্যের গল্পে ভরা তার জীবনচিত্র আজ অনেক তরুণ-তরুণীর জন্য অনুপ্রেরণা।