০১:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫
ইন্ডি রকিং যমজ কেটি ও অ্যালিসনের ‘স্নোক্যাপস’—সুরে সুরে নতুন যুগের সূচনা রাসায়নিকের সংস্পর্শে পারকিনসনের ঝুঁকি বাড়ছে: পরিবেশই বড় কারণ বলে সতর্ক বিজ্ঞানীরা যুক্তরাষ্ট্রের ডেটা সেন্টারের উত্থানে ওরেগনের উমাটিলার বদলে যাওয়া জীবন সীমান্তে শান্তির বার্তা: গুরু নানকের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পাকিস্তানে প্রবেশ করলেন ভারতীয় শিখ তীর্থযাত্রীরা মাহেশ বাবু ঈর্ষাহীন ও সদয় মানুষ: শিল্পা শিরোডকারের অকপট স্বীকারোক্তি ভ্যাটিকান সিটি থেকে শিখ সম্প্রদায়ের প্রতি শুভেচ্ছা, গুরু নানক দেব জির জন্মজয়ন্তীতে শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা বিশ্বের আড়ালে থাকা বিদ্যুৎখেকো শিল্প: শিল্পগ্যাস কোম্পানিগুলোর শক্তি ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ ভালোবাসা পাওয়া সহজ নয়: দুবাইয়ে ‘সেক্স অ্যান্ড দ্য সিটি’ নির্মাতা ক্যান্ডেস বুশনেলের খোলামেলা সাক্ষাৎকার সোনালি বেন্দ্রে তার পডকাস্ট ‘দ্য হ্যাপি পডকাস্ট’ এর দ্বিতীয় সিজন নিয়ে ফিরছেন চীনের হস্তক্ষেপে মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ আরও জটিল হয়ে উঠছে

৪,৮০০ ডলারের ব্যবসা শ্রেণির স্যুট কতটা সার্থক? আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ট্রান্স-আটলান্টিক ফ্লাইটের অভিজ্ঞতা

নতুন ব্যবসা শ্রেণির স্যুটের প্রতিযোগিতা

বিশ্বের বড় বড় এয়ারলাইন্সগুলো এখন ব্যবসা শ্রেণিকে আরও বিলাসবহুল ও আধুনিক করে তুলছে। আমেরিকান এয়ারলাইন্সও এর ব্যতিক্রম নয়। তাদের নতুন ‘ফ্ল্যাগশিপ স্যুট’ যুক্ত হয়েছে বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারে। আগের তুলনায় এখানে ৩০ নয়, বরং ৫১টি স্যুট রাখা হয়েছে। আরও ব্যক্তিগততা, আরামদায়ক বিছানা, আধুনিক প্রযুক্তি, নতুন খাবার এবং স্লাইডিং দরজা যুক্ত করে যাত্রীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা চলছে।

প্রথম অভিজ্ঞতা: শুরুতেই হতাশা

ফিলাডেলফিয়া বিমানবন্দরে যাত্রা শুরুতে বিশেষ কোনো সুবিধা পাওয়া গেল না। আলাদা চেক-ইন জোন বা বিশেষ নিরাপত্তা লাইন আশা করা হলেও তা মেলেনি। ব্যাগও নিজেকেই তুলতে হয়েছে। যদিও ব্যবসা শ্রেণির যাত্রীদের জন্য আমেরিকান এয়ারলাইন্সের লাউঞ্জ ছিল, যেখানে অভ্যর্থনা জানানো হয় শ্যাম্পেইন দিয়ে। কিন্তু তা ডেল্টা বা চেজ স্যাফায়ার লাউঞ্জের তুলনায় কম বিলাসবহুল মনে হয়েছে।

স্যুটের বৈশিষ্ট্য

বিমানে উঠেই মূল আকর্ষণ চোখে পড়ে—ফ্ল্যাগশিপ স্যুট। এর মধ্যে আটটি ‘প্রেফার্ড স্যুট’ যাত্রীদের জন্য বাড়তি জায়গা, বড় টিভি, উন্নত মানের বিছানার চাদর, পাজামা ও বিশেষ সুবিধা দেয়। তবে সাধারণ স্যুটে এসব পাওয়া যায় না।

যাত্রীদের অভিজ্ঞতা

জর্জিয়ার আইনজীবী কালিমাহ জেনকিন্স বিশেষভাবে এই নতুন স্যুট চেষ্টা করতে ফ্লাইট বেছে নিয়েছিলেন। তিনি মাইলস ব্যবহার করে শেষ মুহূর্তে টিকিট কিনে প্রেফার্ড স্যুটে ভ্রমণ করেন। তার অভিজ্ঞতা ছিল আরামদায়ক ও সন্তোষজনক।

খাবার ও সেবা

রাত ১১টার পর ফ্লাইট ছাড়ার পর থেকে খাবার ও সেবার ধারাবাহিকতা ছিল চমকপ্রদ। গরম তোয়ালে, সাদা ওয়াইন, বাদাম-জলপাই, ম্যানিকোটি পাস্তা, সালাদ, বিভিন্ন ধরনের পাউরুটি, এমনকি হ্যাগেন-ডাজ আইসক্রিম—সবই ধাপে ধাপে পরিবেশন করা হয়। যাত্রীকে প্রায় বারবার খোঁজ নেওয়া হচ্ছিল, পানীয় বা খাবার কেমন লাগছে।

ঘুমের অভিজ্ঞতা

বিছানা পুরোপুরি ফ্ল্যাট করে ঘুমানোর ব্যবস্থা থাকলেও প্রায় ৬ ঘণ্টার রাতের ফ্লাইটে যথেষ্ট ঘুম পাওয়া যায়নি। নতুন স্যুটের প্রযুক্তি অনেকেরই অপরিচিত ছিল, এমনকি স্ক্রিন বন্ধ করতেও সমস্যা হচ্ছিল। সকাল ৪টা ৪৩ মিনিটে প্রাতঃরাশ পরিবেশন করা হয়—ফ্রিটাটা, ফল, ক্রোসঁ বা দারুচিনি রোলের মতো আইটেম ছিল মেনুতে। তবে এত অল্প সময়ে একসাথে বিলাসিতা আর পূর্ণ ঘুম—দুটোই উপভোগ করা কঠিন।

মূল প্রশ্ন: দাম কি সার্থক?

একই ফ্লাইটে ইকোনমি টিকিট ছিল মাত্র ৫১৮ ডলার, যেখানে ফ্ল্যাগশিপ স্যুটের দাম ৪,৮০০ ডলার। এই ব্যবধান দেখে প্রশ্ন জাগে, অতিরিক্ত অর্থ খরচ কতটা যৌক্তিক। যদিও আমেরিকান এয়ারলাইন্স বলছে তাদের মূল বিক্রির বিষয় হলো ঘুমের আরাম।

অবশ্যই এটি স্বপ্নের মতো এক অভিজ্ঞতা। কিন্তু নিয়মিত ভ্রমণের জন্য নয়। দীর্ঘ ভ্রমণ বা বিশেষ কোনো উপলক্ষের জন্য এই অভিজ্ঞতা রাখা যেতে পারে। নইলে, একই অর্থে কেউ চাইলে দুই সপ্তাহের বিলাসবহুল সমুদ্রযাত্রাও করতে পারেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইন্ডি রকিং যমজ কেটি ও অ্যালিসনের ‘স্নোক্যাপস’—সুরে সুরে নতুন যুগের সূচনা

৪,৮০০ ডলারের ব্যবসা শ্রেণির স্যুট কতটা সার্থক? আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ট্রান্স-আটলান্টিক ফ্লাইটের অভিজ্ঞতা

০৭:০০:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নতুন ব্যবসা শ্রেণির স্যুটের প্রতিযোগিতা

বিশ্বের বড় বড় এয়ারলাইন্সগুলো এখন ব্যবসা শ্রেণিকে আরও বিলাসবহুল ও আধুনিক করে তুলছে। আমেরিকান এয়ারলাইন্সও এর ব্যতিক্রম নয়। তাদের নতুন ‘ফ্ল্যাগশিপ স্যুট’ যুক্ত হয়েছে বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারে। আগের তুলনায় এখানে ৩০ নয়, বরং ৫১টি স্যুট রাখা হয়েছে। আরও ব্যক্তিগততা, আরামদায়ক বিছানা, আধুনিক প্রযুক্তি, নতুন খাবার এবং স্লাইডিং দরজা যুক্ত করে যাত্রীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা চলছে।

প্রথম অভিজ্ঞতা: শুরুতেই হতাশা

ফিলাডেলফিয়া বিমানবন্দরে যাত্রা শুরুতে বিশেষ কোনো সুবিধা পাওয়া গেল না। আলাদা চেক-ইন জোন বা বিশেষ নিরাপত্তা লাইন আশা করা হলেও তা মেলেনি। ব্যাগও নিজেকেই তুলতে হয়েছে। যদিও ব্যবসা শ্রেণির যাত্রীদের জন্য আমেরিকান এয়ারলাইন্সের লাউঞ্জ ছিল, যেখানে অভ্যর্থনা জানানো হয় শ্যাম্পেইন দিয়ে। কিন্তু তা ডেল্টা বা চেজ স্যাফায়ার লাউঞ্জের তুলনায় কম বিলাসবহুল মনে হয়েছে।

স্যুটের বৈশিষ্ট্য

বিমানে উঠেই মূল আকর্ষণ চোখে পড়ে—ফ্ল্যাগশিপ স্যুট। এর মধ্যে আটটি ‘প্রেফার্ড স্যুট’ যাত্রীদের জন্য বাড়তি জায়গা, বড় টিভি, উন্নত মানের বিছানার চাদর, পাজামা ও বিশেষ সুবিধা দেয়। তবে সাধারণ স্যুটে এসব পাওয়া যায় না।

যাত্রীদের অভিজ্ঞতা

জর্জিয়ার আইনজীবী কালিমাহ জেনকিন্স বিশেষভাবে এই নতুন স্যুট চেষ্টা করতে ফ্লাইট বেছে নিয়েছিলেন। তিনি মাইলস ব্যবহার করে শেষ মুহূর্তে টিকিট কিনে প্রেফার্ড স্যুটে ভ্রমণ করেন। তার অভিজ্ঞতা ছিল আরামদায়ক ও সন্তোষজনক।

খাবার ও সেবা

রাত ১১টার পর ফ্লাইট ছাড়ার পর থেকে খাবার ও সেবার ধারাবাহিকতা ছিল চমকপ্রদ। গরম তোয়ালে, সাদা ওয়াইন, বাদাম-জলপাই, ম্যানিকোটি পাস্তা, সালাদ, বিভিন্ন ধরনের পাউরুটি, এমনকি হ্যাগেন-ডাজ আইসক্রিম—সবই ধাপে ধাপে পরিবেশন করা হয়। যাত্রীকে প্রায় বারবার খোঁজ নেওয়া হচ্ছিল, পানীয় বা খাবার কেমন লাগছে।

ঘুমের অভিজ্ঞতা

বিছানা পুরোপুরি ফ্ল্যাট করে ঘুমানোর ব্যবস্থা থাকলেও প্রায় ৬ ঘণ্টার রাতের ফ্লাইটে যথেষ্ট ঘুম পাওয়া যায়নি। নতুন স্যুটের প্রযুক্তি অনেকেরই অপরিচিত ছিল, এমনকি স্ক্রিন বন্ধ করতেও সমস্যা হচ্ছিল। সকাল ৪টা ৪৩ মিনিটে প্রাতঃরাশ পরিবেশন করা হয়—ফ্রিটাটা, ফল, ক্রোসঁ বা দারুচিনি রোলের মতো আইটেম ছিল মেনুতে। তবে এত অল্প সময়ে একসাথে বিলাসিতা আর পূর্ণ ঘুম—দুটোই উপভোগ করা কঠিন।

মূল প্রশ্ন: দাম কি সার্থক?

একই ফ্লাইটে ইকোনমি টিকিট ছিল মাত্র ৫১৮ ডলার, যেখানে ফ্ল্যাগশিপ স্যুটের দাম ৪,৮০০ ডলার। এই ব্যবধান দেখে প্রশ্ন জাগে, অতিরিক্ত অর্থ খরচ কতটা যৌক্তিক। যদিও আমেরিকান এয়ারলাইন্স বলছে তাদের মূল বিক্রির বিষয় হলো ঘুমের আরাম।

অবশ্যই এটি স্বপ্নের মতো এক অভিজ্ঞতা। কিন্তু নিয়মিত ভ্রমণের জন্য নয়। দীর্ঘ ভ্রমণ বা বিশেষ কোনো উপলক্ষের জন্য এই অভিজ্ঞতা রাখা যেতে পারে। নইলে, একই অর্থে কেউ চাইলে দুই সপ্তাহের বিলাসবহুল সমুদ্রযাত্রাও করতে পারেন।