সারাংশ
- কাতারের মধ্যস্থতায় তালেবান আটক থেকে মুক্ত হলেন এক ব্রিটিশ দম্পতি
- আটক অবস্থায় কাতারি দূতাবাস থেকে সহায়তা পেয়েছিলেন তারা
- যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের আফগানিস্তানে না যেতে সতর্ক করছে আটক হওয়ার ঝুঁকির কারণে
দোহা, ১৯ সেপ্টেম্বর (রয়টার্স) – ৭৬ বছর বয়সী বার্বি রেনল্ডস ও তার ৮০ বছর বয়সী স্বামী পিটার শুক্রবার আফগানিস্তান থেকে কাতারে পৌঁছান। প্রায় আট মাস তালেবানের বন্দিদশা শেষে তারা মুক্তি পেয়ে দোহার বিমানবন্দরে পৌঁছালে মেয়ে সারাহ এন্টউইসল কাঁদতে কাঁদতে তাদের বুকে জড়িয়ে ধরেন।
দম্পতির দীর্ঘ সময় আফগানিস্তান বসবাস
দম্পতির পরিবারের সদস্যরা জানান, তাদের স্বাস্থ্য নিয়ে গুরুতর শঙ্কা ছিল। তারা আফগানিস্তানে একটি দাতব্য সংস্থা চালাতেন এবং গত ১৮ বছর ধরে সেখানে বসবাস করছিলেন। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পরও তারা থেকে যান।
তাদের গত ফেব্রুয়ারিতে আটক করা হয়। কাতার ও ব্রিটেনের সমন্বয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে মুক্তি মেলে।
আবেগঘন মুহূর্ত
দোহায় পৌঁছে বিমানের সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় দম্পতি হাত নাড়েন। এন্টউইসল কাঁদতে কাঁদতে মাকে জড়িয়ে ধরেন। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমরা কাতার ও যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। আমাদের পরিবারকে ফেরত দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।”
কাবুল বিমানবন্দর থেকে যাত্রার আগে বার্বি রেনল্ডস বলেন, সুযোগ হলে তারা আবার আফগানিস্তানে ফিরবেন, কারণ তারা আফগান নাগরিকত্ব ধারণ করেন।
পরিবারের প্রতিক্রিয়া
তাদের ছেলে জোনাথন রেনল্ডস যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্কাই নিউজকে বলেন, মুক্তি পাওয়া ছিল জরুরি। আর দেরি হলে তাদের স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারত।
এক কর্মকর্তা জানান, দম্পতিকে আটকের পুরো সময় আলাদা রাখা হয়েছিল। কাতারি দূতাবাস চিকিৎসকের মাধ্যমে ওষুধ সরবরাহ এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগে সহায়তা দিয়েছে।
কাতারের ভূমিকা
কাতার এ বছর আরও অন্তত তিন মার্কিন নাগরিককে তালেবান হেফাজত থেকে মুক্ত করতে সহায়তা করেছে। বিদেশিদের মুক্তি আলোচনায় দেশটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তালেবানের অভিযোগ
আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানিয়েছে, ওই দম্পতি আফগান আইন ভঙ্গ করেছিলেন। তবে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তারা জানিয়েছে, বিদেশি নাগরিকদের বিষয়গুলো রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয় না।
যুক্তরাজ্যের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ দূত রিচার্ড লিন্ডসে বলেন, কেন তাদের আটক করা হয়েছিল তা আফগান কর্তৃপক্ষই জানে। তবে তিনি এটিকে এক মানবিক দিন হিসেবে উল্লেখ করেন, যেদিন পরিবারটি আবার একত্র হলো।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানায়, দম্পতি আফগানিস্তানে স্কুলে বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালনা করছিলেন এবং তালেবান সরকারের অনুমতিতে সেখানে ছিলেন। তাদের সঙ্গে আটক হওয়া মার্কিন নাগরিক ফে হল্ মার্চ মাসে মুক্তি পান।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলো দূতাবাস বন্ধ করে কূটনীতিকদের সরিয়ে নেয়। বর্তমানে ব্রিটেন তার নাগরিকদের আফগানিস্তানে না যেতে কড়া পরামর্শ দিচ্ছে আটক হওয়ার ঝুঁকির কারণে।