দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপ সুপার ফোরের শেষ, ফল নির্ধারণে অপ্রাসঙ্গিক ম্যাচে ভারত ও শ্রীলঙ্কা—দুই দলই ২০ ওভারে ২০২/৫ করে সমতায় থামে। সুপার ওভারে শ্রীলঙ্কা মাত্র ২ রানে ২ উইকেট হারায়; ভারত লক্ষ্য পেরোয় প্রথম বলেই। এতে ভারত টুর্নামেন্টের ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে যাওয়ার আগে শতভাগ জয়ের ধারা ধরে রাখে।
মূল ঘটনাপ্রবাহ
• শেষ ওভারে শ্রীলঙ্কার দরকার ছিল ১২ রান। পাথুম নিসাঙ্কা প্রথম বলেই রানার ডেলিভারিতে রিভার্স-স্কুপ করে শর্ট ফাইন-লেগে ভারুণ চক্রবর্তীর হাতে ক্যাচ দেন।
• নির্ধারিত ওভারে ম্যাচ টাই হওয়ার পর সুপার ওভারে আর্শদীপ সিং ধারাবাহিক ইয়র্কার করে শ্রীলঙ্কার রান তাড়াকে থামিয়ে দেন। প্রতিপক্ষ সংগ্রহ করে কেবল ২ রান ও হারায় ২ উইকেট; ভারত জেতে এক বলেই লক্ষ্য ছুঁয়ে।
• শ্রীলঙ্কার রান তাড়ার মেরুদণ্ড ছিল নিসাঙ্কা (১০৭) ও কুশল পেরেরা (৫৮)-এর ৭০ বলে ১২৭ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি।
ভারতের ব্যাটিং: টপ অর্ডারের ছন্দ ও বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিং-অর্ডার
• এই এশিয়া কাপে প্রথমবার ২০০—‘মনস্তাত্ত্বিক’ মাইলফলক—ছুঁয়ে ভারত ২০২/৫ তোলে, দুবাইয়ের ধীর আউটফিল্ডের কঠিন প্রেক্ষাপটে এটি গুরুত্বপূর্ণ।
• অভিষেক শর্মা শুরুতেই ছন্দে: ৩১ বলে ৬১। থিকশানাকে ডিপ মিড-উইকেটে ৮৮ মিটার ছক্কা, চামিরার স্লোয়ারে ডাউনে এসে লং-অন পার ছক্কা—পরপর তৃতীয় ফিফটি পান তিনি।
• ব্যাটিং অর্ডার কার্যকর হয়: ৪ নম্বরে তিলক বর্মা (অপরাজিত ৪৯), ৫-এ সঞ্জু স্যামসন। এই জুটি (চতুর্থ উইকেটে) ৪১ বলে ৬৬ তোলে।
• পাওয়ারপ্লেতে ৭১, মধ্য ওভারে আর শিথিলতা নয়—আরও ৭৯; শেষ ৫ ওভারে ৫২—সারা ইনিংসে প্রায় ১০ রান-রেট অটুট থাকে।
• অক্ষর প্যাটেল ইনিংসের শেষ বলে চামিরাকে ওভার-ওয়াইড লং-অন ছক্কা মারেন—ভারতের সপ্তম ছক্কা।
• স্যামসন সীমিত চার-ছক্কায় স্পষ্ট মানসিকতা দেখান; তিলক ঠান্ডা মাথায় ক্লিন-হিটিংয়ে ইনিংস থিতু করেন, শেষ পর্যন্ত ৪৯-এ অপরাজিত।
শ্রীলঙ্কার রান তাড়া: নিসাঙ্কা-পেরেরার ঝলক, কিন্তু শেষে হতাশা
• নিসাঙ্কার তড়িৎ শতক (১০৭) ও পেরেরার ৫৮ ভারতকে চাপে ফেলে। ১২ বলে শেষ দুই ওভার থেকে টানটান সমীকরণে যায় ম্যাচ।
• ভারতের পেস কম্বিনেশন—জাসপ্রিত বুমরাকে বিশ্রাম, শিবম দুবে না থাকায় আর্শদীপ ও রানা—প্রথমবার দুই বিশেষজ্ঞ পেসার নিয়ে নামা হয়।
• রানা তিন ওভারে ৪৪ রান খরচ করেন; আর্শদীপ প্রথম দুই ওভারে ২৬ দিলেও তৃতীয় ওভারে কামিন্দু মেন্ডিসকে আউট করে ফেরেন। ১৯তম ওভারে শেষ বলে চার ছাড়াও বাকিটা কেবল ৭ রান দেন—ম্যাচে ভারতকে ফেরাতে তা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
• শেষ ওভারের প্রথম বলেই নিসাঙ্কার আউট—রানার বলে রিভার্স-স্কুপ, শর্ট ফাইন-লেগে চক্রবর্তীর হাতে ক্যাচ—শ্রীলঙ্কার জন্য সেটাই ম্যাচ-টার্নার। সমতায় শেষমেশ গড়ায় লড়াই।
সুপার ওভারের নাটক
• আর্শদীপ ইয়র্কারের নির্ভুলতায় শ্রীলঙ্কাকে ২ রানে থামান; উইকেট পড়ে ২টি।
• ভারতের জবাবে লক্ষ্য ছোঁয়া হয় প্রথম বলেই—চাপহীনভাবে ম্যাচ জিতে নেয় রোহিত শর্মার দল।
কৌশল ও প্রেক্ষাপট
• ‘ডেড রাবার’ হলেও এই ম্যাচ ভারতকে ফাইনালের মহড়া দিয়েছে; বুমরার মতো প্রধান পেসারকে বিশ্রাম দিয়ে বিকল্প কম্বিনেশন দেখা গেছে।
• ধীর আউটফিল্ডেও ছন্দ না হারানো, মাঝ ওভারে রানের গতি সচল রাখা—এসবই ফাইনালের আগে ইতিবাচক বার্তা।
• ভারত এই জয়ে সুপার ফোর পর্বে পূর্ণ জয় ধরে রাখল; রোববার পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনাল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত ২০২/৫, ২০ ওভার: অভিষেক শর্মা ৬১, তিলক বর্মা ৪৯*
শ্রীলঙ্কা ২০২/৫, ২০ ওভার: পাথুম নিসাঙ্কা ১০৭, কুশল পেরেরা ৫৮
ফল: ম্যাচ টাই; সুপার ওভারে ভারত জয়ী