ভারতীয় দলের কাছে টানা দুই ম্যাচে বড় ব্যবধানে হেরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়লেও পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত প্রমাণ করেছে তারা ফাইনালে ওঠার যোগ্য। বৃহস্পতিবার সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ১১ রানে হারিয়ে পাকিস্তান নিশ্চিত করেছে এশিয়া কাপের ফাইনালে জায়গা। এখন তাদের সামনে একটিই লক্ষ্য—শিরোপা জয়।
কোচ হেসনের আত্মবিশ্বাস
পাকিস্তানের প্রধান কোচ মাইক হেসন, যিনি ভারতের কাছে হারার পর সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন, মনে করেন তার দল ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। পুরো টুর্নামেন্টে কেবল ভারত ছাড়া অন্য সব প্রতিপক্ষকেই হারিয়েছে পাকিস্তান।
হেসন বলেন, “আমরা এই সুযোগ পাওয়ার যোগ্য। এখন আমাদের দায়িত্ব এটি কাজে লাগানো। আগের ম্যাচগুলো মূলত ফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করার জন্য ছিল। কিন্তু আসল ম্যাচ হলো ফাইনাল, আর সেটাতেই সেরা খেলাটা খেলতে হবে।”
ফাইনালের পথে পাকিস্তান
ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ের পর পাকিস্তান তুলনামূলক সহজেই ওমান ও স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারায়। তবে মাঝখানে ভারতের কাছে ৭ উইকেটে হার মানতে হয়। সুপার ফোরে আবারও ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হারলেও শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয় বাবর আজমের দল।
এশিয়া কাপের ৪১ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথমবারের মতো পাকিস্তান ও ভারত মুখোমুখি হবে ফাইনালে।
ভারতের বিপক্ষে শিক্ষা
হেসন জানান, ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তান অনেক উন্নতি দেখিয়েছে। তার ভাষায়, “প্রথম ম্যাচে আমরা কিছুটা নিষ্ক্রিয় ছিলাম, ভারত খেলা নিয়ন্ত্রণ করেছে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে আমরা অনেকটা সময় খেলাটির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রেখেছিলাম। শেষ পর্যন্ত অভিষেক শর্মার অসাধারণ ইনিংসে ম্যাচ হাতছাড়া হয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা পাওয়ার প্লেতে বল হাতে তেমন ভালো করতে পারিনি। তবে ১০ ওভার ব্যাট হাতে এবং পরে বোলিংয়ে চাপে ফেলতে পেরেছিলাম। এখন আমাদের লক্ষ্য হবে দীর্ঘ সময় ধরে ভারতকে চাপে রাখা। তারা বিশ্বের সেরা দল, তাই এটিই আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।”
ব্যাটিং বিপর্যয় ও শিক্ষা
বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে পাকিস্তান শুরুতে ভয়াবহ চাপে পড়ে। প্রথম পাওয়ার প্লেতেই স্কোরবোর্ড ৪৬-৪। শেষ পর্যন্ত লড়াই করে দল পৌঁছায় ১৩৫-৮ এ। হেসন স্বীকার করেন, পাকিস্তান এখনো ‘পারফেক্ট গেম’ খেলতে পারেনি।
তিনি বলেন, “বিভিন্ন ধাপে প্রতিপক্ষ আপনাকে নিখুঁত খেলার সুযোগ দেয় না। তবে যেভাবে কঠিন অবস্থা থেকে জিতেছি, তা দলের চরিত্র প্রকাশ করে। আজ আমরা আগ্রাসী হওয়ার চেষ্টা করলেই দ্রুত উইকেট হারিয়েছি। উইকেট ক্লান্ত হলে শৃঙ্খলা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।”
মানসিক প্রস্তুতির গুরুত্ব
হেসন মনে করেন, ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল অনেকটাই নির্ভর করবে খেলোয়াড়দের মানসিকতার ওপর। “আমরা ছেলেদের বারবার বলছি বর্তমানের ওপর মনোযোগ দিতে। তারা শুরু থেকেই ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন দেখেছে। এজন্য ভালো ক্রিকেট খেলতে হয়েছে। আমরা এমন দলগুলোকে হারিয়েছি যাদের দীর্ঘদিন হারাতে পারিনি। ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতেছি। এর ফলে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। আর আজকের মতো ম্যাচ, যেখানে শুরুতেই সবাই ভেবেছিল আমরা হারব, সেখানে জিতে দলের আত্মবিশ্বাস আরও শক্ত হলো।”