বাবু ভোলানাথ চন্দ্র বলেন যে, বাঙ্গলার কোনও প্রাচীন রাজা সলিল-সমাধি হইতে রক্ষা পাওয়ায়, তাঁহার স্মরণোদ্দেশে এই উৎসব সম্পন্ন হইয়া থাকে। রাজার নৌকা জলমগ্ন হওয়ায় তিনি সলিলগর্ভে প্রবেশের উপক্রম করেন। কোন্ স্থানে তিনি নিমগ্ন হইতেছিলেন, তাঁহার অনুচরেরা অন্ধ-কারে জানিতে পারে নাই, এমন সময়ে কতিপয় সুন্দরী রমণী নারি-কেলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৌকা পুষ্পমালায় সুসজ্জিত করিয়া, এক একটি প্রজ্বলিত প্রদীপের সহিত যুগপৎ জলে ভাসাইয়া দেওয়ায়, তাহাদের আলোকে রাজানুচরগণ রাজাকে দেখিতে পায়; পরে তাঁহার উদ্ধারসাধন করে।
ইহা কেবল কাহিনীমাত্র, বিশেষ কোন প্রমাণ না থাকায় বিশ্বাস করা যায় না। মুসলমানগণ বলিয়া থাকেন যে, জ্ঞানী থেজেরের উদ্দেশেই এই পর্বের অনুষ্ঠান। খেজের জীবন-নির্ঝর আবিষ্কার করিয়া নিজেই তাহা পান করায় অমরতা লাভ করেন। সেই জন্য তাঁহার চিরযৌবনা-বস্থা হইতে তাঁহার নাম থেজের। হইয়াছে। খেজেরের বিবরণ মুসলমানশাস্ত্রে এইরূপ লিখিত আছে। একদিন মুসা ধৰ্ম্মপ্রচার করিতেছিলেন।
লোকে তাঁহার প্রচারে সন্তুষ্ট হইয়া জিজ্ঞাসা করে যে, তাঁহার অপেক্ষা জ্ঞানী ব্যক্তি জগতে আছে কি না? তাহাতে মুসা, কেহ নাই বলিয়া উত্তর করেন। এই সময়ে ঈশ্বর তাঁহাকে প্রত্যাদেশে অবগত করান যে, আল থেজের তাঁহা অপেক্ষা জানী। যেখানে দুই সমুদ্রের মিলন হইরাছে সেই খানের কোন পর্ব্বতে তাঁহার স্থান। যেখানে মুসার পাত্র হইতে একটি মৎস্য জলে পতিত হইবে, সেই খানে খেজেরের সাক্ষাৎলাভ হইবে।
মুসার অনুচর জনুয়া জীবন-নির্ঝরে মৎস্য ধৌত করিতে গেলে মৎস্য জলে পড়িয়া যায়। মুসা তাহা জানিতে পারিয়া, সেই খানেই খেজেরের সাক্ষাৎ লাভ করেন।। জীবন-নির্ঝরের প্রভু বলিয়া মুসলমানগণ খেজেরের উদ্দেশে এই উৎসব করিয়া থাকেন। খেজেরকে মুসলমানেরা ফিনিয়াস, ইলায়াস ও সেন্টজর্জ বলিয়া অনেক সময়ে গোলযোগ করেন। ৪ তাঁহারা বলেন যে, খেজেরের আত্মা ক্রমান্বয়ে উক্ত তিন জনের দেহমধ্যে প্রবিষ্ট হয়।
শ্রী নিখিলনাথ রায় 

















