হামলার ঘটনা
মিশিগানের গ্র্যান্ড ব্ল্যাঙ্ক শহরে (ডেট্রয়েট থেকে প্রায় ৬০ মাইল দূরে) যিশু খ্রিস্ট অফ ল্যাটার-ডে সেইন্টস চার্চে বন্দুক হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অন্তত ৪ জন নিহত এবং ৮ জন আহত হয়েছেন। রোববার প্রার্থনা অনুষ্ঠানের সময় শত শত মানুষ উপস্থিত থাকাকালে এ হামলা ঘটে।
৪০ বছর বয়সী টমাস জ্যাকব স্যানফোর্ড নামে এক ব্যক্তি গাড়ি নিয়ে গির্জায় ঢুকে গুলি চালায় এবং পরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনাস্থলেই পুলিশের গুলিতে সে নিহত হয়।
পুলিশ ও তদন্তকারীদের বক্তব্য
গ্র্যান্ড ব্ল্যাঙ্ক টাউনশিপ পুলিশের প্রধান উইলিয়াম রেনি জানান, প্রথমে দুজন গুলিতে নিহত হন, পরে আরও দুইজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। গির্জায় ব্যাপক অগ্নিকাণ্ডের কারণে এখনো নিখোঁজের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।
তিনি জানান, স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে হামলাকারী গির্জায় ঢুকে অ্যাসল্ট রাইফেল দিয়ে একাধিকবার গুলি চালায়। পুলিশ দ্রুত সাড়া দিয়ে পাল্টা গুলি চালায় এবং ৮ মিনিটের মধ্যে (১০টা ৩৩ মিনিটে) হামলাকারী নিহত হয়।
অগ্নিসংযোগ
তদন্তে জানা গেছে, হামলাকারী দাহ্য পদার্থ—সম্ভবত পেট্রোল—ব্যবহার করে গির্জায় আগুন লাগায়। পুলিশ প্রধান জানান, ঠিক কোথা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
চার্চ সদস্যদের সাহসিকতা
প্রধান রেনি চার্চ সদস্যদের বীরত্বের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, তারা হামলার সময় শিশুদের নিরাপদে আশ্রয় দিয়েছেন, যা বড় ধরনের প্রাণহানি ঠেকাতে সহায়তা করেছে।
হামলাকারীর পরিচয়
রেকর্ড অনুযায়ী স্যানফোর্ড যুক্তরাষ্ট্র মেরিন কোর্পসের সাবেক সেনা ছিলেন। বর্তমানে তার বাড়ি, ব্যক্তিগত নথি এবং মোবাইল ফোন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্তে এফবিআই ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
এফবিআই হামলার তদন্তের নেতৃত্ব দিচ্ছে। ঘটনাস্থলে ক্রাইসিস রেসপন্স টিম, বোমা বিশেষজ্ঞসহ শতাধিক এজেন্টদের মোতায়েন করা হয়েছে। মিশিগান স্টেট পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, হামলার পর আরও কিছু স্থানে বোমা হুমকি পাওয়া গিয়েছিল, তবে সবকটি তদন্ত শেষে নিরাপদ ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রতিক্রিয়া
চার্চ কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে প্রার্থনার সময় বন্দুকধারী হামলা চালিয়েছে এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে। তারা ক্ষতিগ্রস্তদের শান্তি ও সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি হামলা সম্পর্কে অবগত হয়েছেন এবং এফবিআই তদন্ত পরিচালনা করবে। ট্রাম্প একে ‘যুক্তরাষ্ট্রে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে আরেকটি লক্ষ্যভিত্তিক হামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি একে ‘ভয়াবহ গুলি ও অগ্নিসংযোগ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, উপাসনালয়ে এমন সহিংসতা হৃদয়বিদারক এবং আতঙ্কজনক।
মিশিগানের গভর্নর গ্রেচেন হুইটমার ঘটনাটিকে অগ্রহণযোগ্য সহিংসতা হিসেবে নিন্দা করেছেন।
অন্যদিকে প্রখ্যাত মরমন রাজনীতিক ও সাবেক সিনেটর মিট রমনি একে ‘একটি মর্মান্তিক ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করে নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।