দ্রুত দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীদের আন্দোলন আরও তীব্র হয়েছে। তাদের সংগঠন ‘বস্তি পূর্ণবাসন ও শহীদ পরিবারের ক্ষতিপূরণ আদায় সংগ্রাম পরিষদ’-এর আয়োজনে ৫ অক্টোবর (রবিবার) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন শেষে তারা বর্ণাঢ্য র্যালি বের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ের সামনে দুই ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
দুই মাস ধরে আন্দোলন, সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ
দুই মাস ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও আন্দোলনকারীরা জানায়, তাদের দুই দফা দাবির বিষয়ে সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এই অবহেলায় তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে দাবি পূরণের আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান ও সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মো. আব্দুর রহিম বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি, কিন্তু কোনো বাস্তব সমাধান পাচ্ছি না। তাই আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সাক্ষাৎ চাই। আশা করি, তিনি আমাদের কথা শুনলে দ্রুত সমাধান হবে।”
দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ
সংবাদ সম্মেলন শেষে আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে দুদকের সামনে অবস্থান নেন। পরে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দুদকের মহাপরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দাবি সম্পর্কিত অভিযোগ পেশ করেন। অভিযোগ শুনে মহাপরিচালক জানান, ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চলমান তদন্তের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দাবির মূল বিষয়: পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ
আব্দুর রহিম বলেন, “কলমিলতা বাজারের ক্ষতিপূরণ আদায় এবং মিরপুরের ভাষানটেক বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি পুনর্বহালের দাবিতে আমরা টানা ৬০ দিন ধরে আন্দোলন করছি। কিন্তু সরকার এখনো কোনো সাড়া দেয়নি। হামলা-মামলা ও পুলিশি নির্যাতন দিয়ে আমাদের ন্যায্য দাবি বন্ধ করা যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “অতিদ্রুত দাবি মেনে না নিলে আমরা কঠোর আন্দোলনে নামবো। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।”
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, এই সপ্তাহে তারা ঢাকা জেলা প্রশাসক, ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অগ্রগতি জানতে চান।
রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সমর্থন
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—
আলহাজ আব্দুর রহিম, আহ্বায়ক, বস্তি পূর্ণবাসন ও শহীদ পরিবারের ক্ষতিপূরণ আদায় সংগ্রাম পরিষদ;
অ্যাডভোকেট জিয়াউর রহমান, সদস্য সচিব;
মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক;
অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, বাংলাদেশ কংগ্রেস;
এফ এম মাহিদুল, চেয়ারম্যান, সাম্যবাদী দল;
এস এম ফয়েজ, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন;
নাসির উদ্দিন, রাষ্ট্র সংস্কার;
হানিফ বাংলাদেশী, সমতা পার্টি;
হারুন অর রশিদ, সোনার বাংলা পার্টি;
এবং হেলাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সবাই একসঙ্গে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান— মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীদের ন্যায্য দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে, নয়তো আন্দোলন আরও বিস্তৃত হবে।
#মুক্তিযোদ্ধা_পরিবার #বস্তিবাসী #দাবি_আন্দোলন #দুদক #প্রধান_উপদেষ্টা #পুনর্বাসন #ক্ষতিপূরণ #জাতীয়_প্রেসক্লাব #ড_মুহাম্মদ_ইউনুস #সারাক্ষণ_রিপোর্ট